Home » এমন নারী মুক্তিই কি চেয়েছিলেন রাজা রাম মোহন রায়?

এমন নারী মুক্তিই কি চেয়েছিলেন রাজা রাম মোহন রায়?

পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ নারীমুক্তি, নারী স্বাধীনতা এই শব্দবন্ধগুলো আজ থেকে কয়েকশো বছর আগে তৈরি হয়নি। রাজা রাম মোহন রায় এমন একজন মানুষ যিনি উনিশ শতকে দাঁড়িয়ে এই শব্দ গুলিকে প্রচলন করতে চেয়েছিলেন। নারীদের স্বাধীন এবং শিক্ষিত করা ছিল তার প্রধান উদ্দেশ্য। আজ একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে নারীরা শিক্ষিত। আজ তাদের বদ্ধ জীবনে আবদ্ধ থাকতে হয়না। শিক্ষার আলো পৌঁছে যাচ্ছে নারীদের মধ্যে। কিন্তু স্বাধীনতা ? নারীদের স্বাধীনতা আজ অনেক বেশি, সমাজের সব ক্ষেত্রেই নারীরা পুরুষের সমান ভাবে এগিয়ে আছে।
রাজা রামমোহন রায় সতীদাহ বন্ধ করেছিলেন। কিন্তু সতীদাহ কি সত্যি বন্ধ হয়েছে? তাহলে খবরের কাগজ খুললেই গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার খবর পাওয়া যায় কেন?

এমন নারী মুক্তিই কি চেয়েছিলেন রাজা রাম মোহন রায়

ধর্মের নামে সহমরণ হয়তো বন্ধ হয়েছে কিন্তু বধূ নির্যাতনের মত ঘটনা কিন্তু সমাজে রয়েই গেছে। বধূ নির্যাতন করে বধূ হত্যা এ তো আকছার ঘটছে সমাজে। সেটা কি সতীদাহ নয়? আজও গ্রামের দিকে পণ প্রথার মত জঘন্য নিয়ম চলে আসছে। মেয়ের গায়ের রং কালো হলে তো কথাই নেই তখন তো টাকার ওজনে মেয়ের রং ফর্সা হয়। নারী যতই শিক্ষিত হোক না কেন আজও সমাজে তাদের রূপ দিয়েই বিচার করা হয় গুণ দিয়ে নয়। শহরাঞ্চলের চিত্রটা একটু আলাদা। এখানে একটা পরিবারে স্বামী-স্ত্রী উভয়ই চাকুরীরত কিন্তু রাতে বাড়ি ফিরে বা সকালে অফিস যাওয়ার আগে মেয়েটিকেই ঘরের সব কাজ করতে হচ্ছে। বা কাজের জন্য কোন মহিলাকে রাখা হলেও তার মাইনে বেশিরভাগ সময়ই দিতে হয় বাড়ীর মহিলাকেই।

যদিও এই চিত্রের পাশাপাশি সমাজে এখন আর এক বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু বছরে। আইন এখন মেয়েদের পক্ষে। তাতে করে বহু মেয়ে সুবিচার পাচ্ছে ঠিকই কিন্তু বহু মেয়ে এর সুবিধা তুলছে।

বধূ নির্যাতনের অভিযোগ করে সর্বশান্ত করছে শ্বশুরবাড়িকে স্বামীকে। তার কিছুদিন যেতে নে যেতেই দ্বিতীয় বিবাহ। রাম মোহন রায় পুরুষদের বহু বিবাহ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন। আজকের সমাজে নারীরা অনায়াসে বহু বিবাহ করে চলেছে। পার্থক্য শুধু এই যে তখন এক সাথে অনেক স্ত্রী নিয়ে সংসার করতেন পুরুষরা। আর এখন একজনকে ডিভোর্স দিয়ে তারপর ওপর বিয়ে হচ্ছে। স্ত্রী স্বাবলম্বী হলেও ডিভোর্সের সময় স্বামীর থেকে মোটা অঙ্কের খোরপোষ পাচ্ছে সে। খোরপোষের জন্য একজনকে ডিভোর্স দিয়ে আবার আর একজন পুরুষকে বিয়ে করা এটা এখন অনেক নারীর পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এমন নারী মুক্তিই কি চেয়েছিলেন রাজা রাম মোহন রায়

এটা বলছি না যে থানায় যে কটি বধূ নির্যাতনের কেস দায়ের সব মিথ্যে তবে খোঁজ নিলে দেখা যাবে অর্ধেকই টাকার জন্য ফাঁসাতে চাইছে স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির লোকেদের। কয়েনের দুপিঠের মত সমাজেরও দুটো দিক রয়েছে। রাজা রাম মোহন রায়ের সেই লড়াই আজও ফলপ্রসূ সে নিয়ে সন্দেহ নেই ঠিকই, তবে সেই লড়াই ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় ভাবেই ব্যবহার করছে আজকের নারীরা .

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!