Home » Lihada Queimada Grande দ্বীপ, সাপের স্বর্গরাজ্য, যেখানে মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ

Lihada Queimada Grande দ্বীপ, সাপের স্বর্গরাজ্য, যেখানে মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ

সাপ একটি সরীসৃপ প্রাণী, বিশ্বে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ আমরা দেখতে পাই। কিছু সাপের বিষ থাকে আবার কিছু সাপের বিষ থাকেনা। কিন্তু সাপের নাম শোনা মাত্রই আমাদের মনে ভয় হয়। অনেকে সাপের নাম নিতেও ভয় পায়, আবার অনেকে এটিকে ‘লতা’ নামেও ডেকে থাকে। বিষাক্ত সাপের একটি ছোবল মানুষের প্রাণহানি ঘটাতে পারে। আবার অজগর অথবা অ্যানাকন্ডা এর মত সাপ মানুষ কেনো যে কোনো প্রাণীর স্বাস রোধ করে মেরে ফেলতে বেশিক্ষন সময় নেয় না। কিন্তু আপনি কি কখনো সাপের দ্বীপের কথা শুনেছেন?

Lihada Queimada Grande দ্বীপ

আসুন তাহলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই:-

‘Lihada Queimada Grande’ নামের এই দ্বীপটি সাপের দ্বীপ নামেও পরিচিত। আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর ব্রাজিল উপকূলে এই দ্বীপটি অবস্থিত। প্রতি বর্গ মিটার-এ এখানে কমপক্ষে পাঁচটা সাপের দেখা পাওয়া যায়। দ্বীপটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যে কেউ এখানে একবার অন্তত ঘুরতে যেতে চাইবেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে ১৯০০-১৯২০ পর্যন্ত এখানে মানুষের শেষ বসতি ছিল। এই দ্বীপটিতে একটি লাইট হাউস আছে যেটি দেখে সমুদ্রের জাহাজ দিক নির্ণয় করে। সেই ব্যক্তি সেই কাজের জন্য তার পরিবারসহ সেখানে থাকতেন কিন্তু একদিন সে সাপের কামড়ে মারা যান।

গল্পকাহিনী আছে এই দ্বীপটিতে বিপুল পরিমাণের গুপ্তধন ও সম্পদ মজুত আছে। কোনো জলদস্যু সেখানে সেই গুপ্তধন লুকিয়ে রেখে গেছিলেন। সেই গুলির দেখা সোনা করার জন্যই সে সেখানে বিষধর সাপ ছেড়ে যান যাতে সেগুলি সুরক্ষিত থাকে। কিন্তু এটি যদি সত্যি হত তাহলে সে সেখানে সাপ কেনো ছাড়বেন কারণ সে ভবিষ্যতে যখন সেই ধন ও সম্পদ নিতে যাবেন তখন নিজেই সেখানে সাপের ছোবলে আত্মঘাতী হতে পারেন। তাই এটি একটি গল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয়।

বিশেষজ্ঞদের গবেষণা অনুযায়ী আজ থেকে এগারো হাজার বছর আগে এই দ্বীপটি ব্রাজিলের অন্তর্গত ছিল। কিন্তু জলতল বেড়ে যাওয়ার দরুন দ্বীপটি ব্রাজিল থেকে আলাদা হয়ে যায়। আগে দ্বীপটিতে এত সাপ ছিল না, সময়ের সাথে বংশবৃদ্ধি ঘটতে থাকে ফলে এখন এই দ্বীপে সাপের সংখ্যা প্রায় দুহাজার থেকে চারহাজার। এই দ্বীপের সাপ গুলো সাধারণ সাপের তুলনায় পাঁচ গুন বিষাক্ত এবং এখানের সাপকে পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে বিষধর সাপ বলে গণ্য করা হয়। ‘Golden landchead’ শুধু মাত্র এই দ্বীপটিতেই দেখা যায়। এটি দেখতে হলদেটে বাদামি রঙের এবং প্রায় ২৮ ইঞ্চি দৈঘ্যের হয়ে থাকে। কিন্তু ৪৬ ইঞ্চির এই সাপও এখানে দেখতে পাওয়া যায়। সাপটি এতটাই বিষাক্ত যে মানুষকে কামড়ালে তার ত্বক ঘর্মস্রাব হতে থাকে এবং মানুষের মারা যেতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনা।

আগস্ট মাস থেকে মার্চ পর্যন্ত সাপের দ্বীপের উষ্ণতা হয় ১৯℃-২৮℃ পর্যন্ত হয়ে থাকে। অনেকে প্রানের ঝুঁকি নিয়ে এই দ্বীপে স্মাগলিং করতে যায়। তারা সেই বিষধর সাপকে ধরে এনে বাজারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে। এইসব বিষধর সাপের বিষ থেকে অনেক রকম জীবনদায়ী ওষুধ তৈরি হয়, হৃদপিণ্ডের না না রোগের ওষুধ এই সব সাপের বিষ থেকে তৈরি করা হয়।সুতরাং এটির একটি সুফল মানুষ পেয়ে থাকে। দ্বীপটিতে শুধু বিশেষজ্ঞ ও নিবিড় কর্মীরা প্রবেশের অনুমতি পান। নেভি থেকে কর্মীরা আসে এখানে লাইট হাউসটির দেখাশোনা করতে। গবেষকরা গবেষণা করতে বছরে একবার এই দ্বীপটিতে আসে। এই দ্বীপটি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বাইরের লোকজনকে সরকার থেকে অনুমতি নিতে লাগে এবং গেলেও সঙ্গে একটি ট্যুর গাইড থাকা অত্যন্ত আবশ্যক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Click to Go Up
error: Content is protected !!