ঐতিহাসিক ভাবে, হিন্দু পুজায় শালগ্রাম শীলা ব‍্যাবহার আদি শঙ্করের রচনাকালের আগে থেকেই পাওয়া যায়। মূলত তৈত্তিরিয় উপনিষদের ১.৬.১ পদ ও ব্রহ্মসূত্রের ১.৩.১৪ পদে শালগ্রাম শীলা কে বিষ্ণুর উপাসনায়, বিষ্ণুরুপে পুজা করার বিশেষ নির্দেশ ও পরামর্শ রয়েছে।

কথিত আছে, অসুর শঙ্খচুড় বর পেয়েছিলেন যে তার স্ত্রী তুলসীর সতীত্ব অক্ষুন্ন থাকা পর্যন্ত তাকে কেউ হত‍্যা করতে পারবেনা। শঙ্কর শঙ্খচুড়ের সাথে যখন যুদ্ধ করছেন তখন বিষ্ণু তার রুপ ধারন করে তুলসীর সতীত্ব নাশ করেন আর তারপরেই শঙ্খচুড় নিহত হন। সেই মুহুর্তে তুলসী, বিষ্ণুকে পাষান অর্থাৎ পাথর হয়ে থাকার অভিশাপ দেন সেই থেকেই শালগ্রাম লীলা বিষ্ণু রুপে এবং বিষ্ণুর ইচ্ছায় তুলসী গাছ হয়ে একসঙ্গে পুজিত হন। আর এই শালগ্রাম শীলা একমাত্র (সারা পৃথিবীতে ) পাওয়া যায় নেপালের পশ্চিমে, হিমালয় পর্বতের ১২,৫০০ ফুট ওপরে অবস্থিত গন্ডকী বা কালী-গন্ডকী নদিতে। যেখানে যাওয়ার এক মাত্র উপায় পায়ে হাটা পথ। এই জায়গাই হলো নারায়নের মুক্তি তীর্থ বা মুক্তিনাথ।

বছরের পর বছর তর্ক, বিবাদ, সাম্প্রদায়িক হানাহানি ও আইনি জটিলতার যুদ্ধের পর অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরী করার অনুমতি পান দেশের হিন্দু সম্প্রদায়। এবার সেই নবনির্মিত রাম মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হবে রামলালার প্রস্তর মুর্তি। আর সেই মুর্তি তৈরীর জন‍্যই ইতিমধ‍্যেই নেপাল থেকে অযোধ্যার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি বছরের পুরানো বিশালাকার শালগ্রাম শীলা।

নেপালের সরকারি আধীকারিকদের বক্তব্য অনুযায়ী – এই বিশালাকার পবিত্র শালগ্রাম পাথর খুজে বার করার আগে নেপালের একটি বিশেষ স্থানে একটি বিশেষ পুজার আয়োজন করা হয়। জিওলজিকাল ও আর্কিওলজিকাল দফতরের আধীকারিকরা এই পুজোর মাধ্যমে স্বয়ং বিষ্ণুদেবের কাছে খনন কার্যের অনুমতি নিয়ে খনন কার্য চালিয়ে, প্রায় ৬ কোটি বছর পুরানো ও বিশালাকার এই শালগ্রাম শিলা উদ্ধার করেন যা বিশাল ট্রাকের মাধ‍্যমে অযোধ্যার দিকে রওনা হয়েছে।

বিভিন্ন সুত্র অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, বিতর্কিত এই রাম মন্দিরে ৫ফুট উচ্চতার মুর্তি তৈরী করা হবে। শিল্পীর নাম এখনো ঘোষনা না হলেও রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত কোন শিল্পিকেই এই দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।