দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে আর

Days
Hours
Minutes
Seconds

দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে আর

Days
Hours
Minutes
Seconds
Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)
Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

ঋত্বিক ঘটক : এক ব্রাত্য পরিচালক

ঋত্বিক ঘটক—ভারতীয় সিনেমার এমন এক অধ্যায়, যাঁর জীবন এবং সৃষ্টি মূলধারার বাইরে থেকেও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে আজও গভীর রেখাপাত করে। সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের সমসাময়িক হয়েও তিনি ছিলেন আলাদা—প্রথাবিরোধী, বিদ্রোহী এবং গভীরভাবে মানবতাবাদী। তাঁর সিনেমা বাণিজ্যিক সাফল্যের আলো না পেলেও চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। তাঁর জীবন ও চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, তবে এমন কিছু অজানা তথ্য আছে, যা তাঁকে নতুন করে চিনতে সাহায্য করবে।

Table of Contents

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

ঋত্বিক ঘটক—ভারতীয় সিনেমার এমন এক অধ্যায়, যাঁর জীবন এবং সৃষ্টি মূলধারার বাইরে থেকেও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে আজও গভীর রেখাপাত করে। সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের সমসাময়িক হয়েও তিনি ছিলেন আলাদা—প্রথাবিরোধী, বিদ্রোহী এবং গভীরভাবে মানবতাবাদী। তাঁর সিনেমা বাণিজ্যিক সাফল্যের আলো না পেলেও চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। তাঁর জীবন ও চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, তবে এমন কিছু অজানা তথ্য আছে, যা তাঁকে নতুন করে চিনতে সাহায্য করবে।

১. বাল্যকালে অভিনয়ের হাতেখড়ি

অনেকেই জানেন না যে ঋত্বিক ঘটকের চলচ্চিত্র জীবন পরিচালনা দিয়ে শুরু হয়নি। তিনি অভিনয়ও করেছেন। কৈশোরে নাটকের প্রতি তাঁর গভীর টান ছিল এবং তিনি একাধিক মঞ্চনাটকে অভিনয় করেছিলেন। এমনকি, তিনি নবান্ন নাটকে অভিনয় করেছিলেন, যা সেই সময়ের থিয়েটার আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টি।

২. লেখক ঋত্বিক

পরিচালক হিসেবে তাঁর পরিচিতি বিস্তৃত হলেও, ঋত্বিক ছিলেন একজন শক্তিশালী সাহিত্যিকও। তিনি গল্প, প্রবন্ধ ও নাটক লিখেছেন। তাঁর লেখা ‘রাজা’, ‘দোস্তিদ’, ‘বেদিনীর প্রেম’, ‘বিপ্লবী’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এমনকি তাঁর বহু চিত্রনাট্য চলচ্চিত্রে রূপ পায়নি, তবে এগুলো সাহিত্য হিসেবেও মূল্যবান।

৩. ‘মেঘে ঢাকা তারা’র শেষ সংলাপ ছিল তাঁর ব্যক্তিগত জীবন থেকে নেওয়া

‘মেঘে ঢাকা তারা’ সিনেমার বিখ্যাত সংলাপ—“দাদা, আমি বাঁচতে চাই!”—আসলে ছিল ঋত্বিক ঘটকের ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিচ্ছবি। তাঁর নিজের জীবনও ছিল সংগ্রামে ভরা, যেখানে অর্থাভাব, মানসিক যন্ত্রণা, এবং সমাজের ব্রাত্যতার শিকার হয়েছিলেন তিনি।

৪. ছবির মধ্যে রাজনৈতিক দর্শন

ঋত্বিক ঘটক কেবল গল্প বলতেন না, তাঁর সিনেমার প্রতিটি দৃশ্য ছিল রাজনৈতিক। দেশভাগ, উদ্বাস্তু সমস্যা, সমাজতান্ত্রিক আদর্শ এবং শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট তাঁর প্রতিটি সিনেমায় গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। ‘সুবর্ণরেখা’, ‘কোমল গান্ধার’ বা ‘যুক্তি, তক্কো আর গপ্পো’—সবখানেই এই দর্শন স্পষ্ট।

৫. সিনেমার সংগীত রচনায় তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ

ঋত্বিক ঘটকের ছবির সংগীত নির্বাচনের পেছনেও তাঁর অসাধারণ রুচি ছিল। তিনি বাংলার লোকগান ও ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে সিনেমার আবহসংগীতে ব্যবহার করতেন। ‘মেঘে ঢাকা তারা’ বা ‘সুবর্ণরেখা’-তে সংগীত ব্যবহারের যে ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা তিনি করেছিলেন, তা সেই সময়ের বাংলা সিনেমার জন্য এক নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।

৬. হলিউডেও সুযোগ এসেছিল, কিন্তু ফিরিয়ে দিয়েছিলেন

শোনা যায়, হলিউডের কিছু নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বিদেশে কাজ করার জন্য। কিন্তু তিনি সেই সুযোগ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, কারণ তিনি চেয়েছিলেন নিজের দেশ, নিজের সমাজ, নিজের বাস্তবতাকে সিনেমার মাধ্যমে তুলে ধরতে।

৭. মৃত্যুর পরেই প্রকৃত স্বীকৃতি

জীবদ্দশায় তিনি কখনোই জনপ্রিয়তা পাননি, এমনকি তেমন আর্থিক স্বাচ্ছল্যও ছিল না। তাঁর অনেক ছবিই মুক্তির পর দর্শক টানতে পারেনি। কিন্তু মৃত্যুর পর তাঁর সিনেমাগুলো নতুন করে আলোচনায় আসে এবং ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে তাঁর আসল মূল্যায়ন হতে শুরু করে।

ঋত্বিক ঘটক ছিলেন এক ব্রাত্য পরিচালক—যিনি মূলধারার গডফাদারদের মধ্যে জায়গা পাননি, কিন্তু চিন্তায়, চেতনায় এবং শৈলীতে ছিলেন অনন্য। তাঁর সিনেমা শুধু গল্প নয়, একেকটি আন্দোলন। আজ যখন চলচ্চিত্র নতুন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও পরীক্ষানিরীক্ষার দিকে যাচ্ছে, তখন ঋত্বিক ঘটকের কাজ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।

More Related Articles

"টানা রিক্সা: কলকাতার ঘামে ভেজা এক শহরের হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি"
সম্পাদকীয়
“টানা রিক্সা: কলকাতার ঘামে ভেজা এক শহরের হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি”

“টানা রিক্সা একসময় ছিল কলকাতার নাড়ির স্পন্দন। আজ তা হারিয়ে যেতে বসেছে। এই কাহিনিতে উঠে এল এক শহরের মানবিকতার, লড়াইয়ের আর পরিবর্তনের ছায়াছবি।”

Read More »
ভোটার তালিকাই এবার যুদ্ধক্ষেত্র! অনুপ্রবেশ বিতর্কে মমতার হুঙ্কার: "বাংলা ভাষার উপর সন্ত্রাস চলছে"
সংবাদ ও রাজনীতি
ভোটার তালিকাই এবার যুদ্ধক্ষেত্র! অনুপ্রবেশ বিতর্কে মমতার হুঙ্কার: “বাংলা ভাষার উপর সন্ত্রাস চলছে”

২১ জুলাইয়ের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিলেন—২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ‘আসল লড়াই’ হবে ভোটার তালিকা ঘিরে। অনুপ্রবেশ বিতর্কে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে বাংলাভাষা ও পরিচয়ের রাজনীতি সামনে আনলেন তৃণমূল নেত্রী।

Read More »
“জয় বাংলা’ কাঁপাবে দিল্লি, ২০২৬-র পর বিজেপিকে বলাব ‘জয় বাংলা’: ধর্মতলায় হুঁশিয়ারি অভিষেকের”
সংবাদ ও রাজনীতি
“জয় বাংলা’ কাঁপাবে দিল্লি, ২০২৬-র পর বিজেপিকে বলাব ‘জয় বাংলা’: ধর্মতলায় হুঁশিয়ারি অভিষেকের”

২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে বিস্ফোরক ভাষণে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, বাংলার সংস্কৃতিকে যারা তাচ্ছিল্য করে, তাদের জবাব ২০২৬-এর নির্বাচনে মিলবে। দিল্লি কাঁপাতে ‘জয় বাংলা’র ডাক, হুঁশিয়ারি পদ্মফুল উপড়ে ফেলারও।

Read More »
সংবাদ ও রাজনীতি
“বাংলার ভাষায় কথা বললে গ্রেফতার? এবার দিল্লিতেই হবে লড়াই”: শহিদ মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি মমতার

২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ ছিল স্পষ্ট এবং আগুনঝরা। ‘বাংলা ভাষার উপর আক্রমণ চললে ছাড়বে না’, জানিয়ে তিনি ঘোষণা করলেন ২৭ জুলাই থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হবে নতুন ভাষা আন্দোলন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি বিজেপির ‘বাংলাবিদ্বেষী রাজনীতি’ ও ‘গ্রেপ্তার আতঙ্ক’ নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি।

Read More »
"ট্রামের ঘণ্টিতে ঘুম ভাঙতো কলকাতা – হারিয়ে যাওয়া এক শহরের সুর"
সম্পাদকীয়
“ট্রামের ঘণ্টিতে ঘুম ভাঙতো কলকাতা – হারিয়ে যাওয়া এক শহরের সুর”

“ট্রামের ঘণ্টিতে ঘুম ভাঙতো কলকাতা – হারিয়ে যাওয়া এক শহরের সুর”
একটা সময় কলকাতার সকাল মানেই ছিল ট্রামের টুংটাং আওয়াজ। সেই ধীর গতি, কাঠের সিট, আর কনডাক্টরের ঝনঝনে টিকিট ব্যাগ—এ সবই ছিল শহরের ছন্দের অংশ। সময়ের সাথে সব বদলে গেলেও হারিয়ে যাওয়া এই ট্রাম আজও বেঁচে আছে স্মৃতির শহরে।

Read More »
"সিঙারা-সীতাভোগের সুগন্ধে মোড়া এক শতাব্দীর গল্প—চিরতরে থেমে গেল ‘দেশবন্ধু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’-এর পদচারণা!"
সম্পাদকীয়
“সিঙারা-সীতাভোগের সুগন্ধে মোড়া এক শতাব্দীর গল্প—চিরতরে থেমে গেল ‘দেশবন্ধু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’-এর পদচারণা!”

একটা সময় ছিল, যখন হাওড়া ব্রিজ থেকে নামলেই ঘিয়ের গন্ধে মন ভরে যেত। আজ সেই ‘দেশবন্ধু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’ শুধুই স্মৃতি। এক শতাব্দীর ইতিহাসের ইতি টেনে চুপিচুপি হারিয়ে গেল কলকাতার মিষ্টির কিংবদন্তি ঠিকানা।

Read More »
error: Content is protected !!