স্বর্ণালী পাত্র, কলকাতা: ২০১৩ সালের ৩১ শে মে মুক্তি পেয়েছিল অয়ন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি “ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি”। শুধু বক্স অফিসে নয়,মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল ছবিটি। বুধবার এই ছবির 10 বছর পূর্ণ হল। তবে এখনো এই ছবির ডায়ালগ কিংবা গল্প অনুরাগীদের কাছে প্রথম দিনের মতোই উজ্জ্বল। এই ছবিটি বন্ধুত্ব,প্রেম,ভালোবাসা, স্বপ্ন,ক্যারিয়ার সবকিছুর একটা ফুল প্যাকেজ। এখনো জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে প্রাসঙ্গিকতা বজায় রেখে এই ছবির সংলাপ দর্শকরা ব্যবহার করে থাকে।
শুধু অনুরাগী বা দর্শকরা নয় এই ছবির গোটা টিম বুধবার আবেগপ্রবণ হয়ে সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে স্মৃতিচারণ করেন। দীপিকা পাডুকোন থেকে শুরু করে কারণ জোহার বুধবার ইনস্টাগ্রামে ছবির কয়েকটি দৃশ্য এবং কিছু ডায়লগ পোস্ট করে স্মৃতিচারণ করেন।
বুধবার রনবীর কাপুর, দীপিকা পাডুকোন, আদিত্য রয় কাপুর, কল্কি কেকলার পাশাপাশি গোটা টিম উপস্থিত হয় মুম্বাইয়ের একটি হাই প্রোফাইল পার্টিতে। মূলত, এটি ছিল “ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি” – এর দশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে রিইউনিয়ান। এদিন পার্টির একাধিক ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন দীপিকা পাড়ুকোন। তাতে দেখা মেলে পরিচালক অয়ন মুখোপাধ্যায়, ডিজাইনার মানিশ মালহোত্রা, সুরকার প্রীতম সহ আরো অনেকের। এই ছবি দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে অনুরাগীরাও।
“জিতনা ভি ট্রাই কারলো বানি কুচ না কুচ তো ছুটেগাহি, তো জাহা হে ওহি কা মাজা লেতে হে”- ছবিতে দীপিকা পাডুকোন অভিনীত নেয়না তলোয়ার চরিত্রটি যখন এই ডায়লগটি বলেছিল, অনেকেই এই কথাটির প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পেয়েছিল। ১০ বছর পরও এই কথাটি কতটা প্রাসঙ্গিক তা এখনো লোকের মুখে মুখে সংলাপটি শুনে বোঝা যায়। আজও রনবীর কাপুর অভিনীত রিল লাইফ বানির মতো স্বপ্ন ছোঁয়ার আশায় অনেক রিয়াল লাইফ বানিরা বলে থাকে, “মে উরনা চাহাতা হু, দৌড়না চাহতা হ্ন, গিরনা ভি চাহতা হ্ন। বাস রুকনা নেহি চাহতা।” ছবিটি অনুরাগীদের মনে দাগ কেটে যায়। বিশেষ করে যুবসমাজ ছবিটি আপন করে নেয় এবং ১০ বছর পরেও এর সমান প্রভাব রয়েছে দর্শকের মনে।
এটি এমনি একটি ছবি যা বন্ধুত্ব,প্রেম,ভালোবাসা,দূরত্ব স্বপ্ন,এডভেঞ্চার সব কিছুকে সংজ্ঞায়িত করে। মন খারাপের সময় কাছের মানুষ বা বন্ধুকে পাশে পেলে বুঝি, “কুছ লোগো কে সাথ ওয়াকত বিতানেসে সাব কুছ সেহি হো জাতা হ্যায়।” সকলের কাছেই এই ছবিটি “কমফোর্ট মুভি” হিসেবে পরিচিত। চোখের কোণে জলের সাথে মুখে তৃপ্তির হাসি নিয়ে অনায়াসে ছবিটি বারবার দেখা যায়। প্রতিবারই দেখার পর নতুন করে জীবনের মানে ও সম্পর্কের গুরত্ব বোঝা যায়। বোঝা যায়, “লাইফ মে থোরা বহত কিমা পাও, টাংরি কাবাব , হাক্কা নুডলস্ ভি হোনা চাহিয়ে না?”
স্কুল কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে কাজের চাপ, বিদেশ যাত্রা,ক্যারিয়ার গড়তে অনেক "ফ্রেন্ডস ফরএভার" - এর গ্রুপ আর নেই। তবে, তাদের একসাথে করা প্ল্যানিং,অ্যাডভেঞ্চারের উদ্দেশ্যে রওনা,একসাথে পাহাড় জয় করার ইচ্ছে সব কিছুই রয়ে যায় স্মৃতিতে। "ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি" - এর বানি,নেয়না,অভি,অদিতি এদের মধ্যে দিয়ে যা উজ্জীবিত হয় বার বার। জীবনের বিভিন্ন পর্যায় বিভিন্ন সময় অনেকেই এই ছবির চরিত্র গুলির প্রাসঙ্গিকতা অনুভব করে আজও। "ওয়াক্ত রুকতা নেহি বিত জাতা হ্যায়, আউর হাম খারাচ হো জাতে হ্যায়"- ১০ বছর আগে সিনেমাটা দেখার সময় সবাই যে অবস্থানে ছিল আজ আর নেই। সময় বদলেছে,সময়ের সাথে বদলেছে জীবনের ধরন, সম্পর্কের সমীকরণ শুধু বদলায়নি স্মৃতিরা। "ইয়াদে মিঠাই কে ডিব্বে কি তারহা হোতি হ্যায়,একবার খুলা তো সিরফ এক টুকরা নেহি খা পাওগে।" সত্যিই কথাটা খুব খাঁটি,অনেক হাসির মুহূর্ত স্মৃতি হয়ে গেলে তা মনে করে চোখের কোনায় জল আসে আবার অনেক কষ্টের মুহূর্ত মনে করে পরে শুধুই স্বস্তির হাসি ফোটে। এই স্মৃতিগুলোর মতোই অনুরাগীদের কাছে এবং গোটা "ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি" - টিমের কাছে ছবিটি চিরকাল অমলিন থাকবে।
কিছুদিন আগেই সমাজ মাধ্যমের পাতায় একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে রানবীর কাপুর একটি প্রেস মিটে বলেন, “ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি – এর একটা ভালো সিক্যুয়াল বানানো যেতে পারে। অয়ন এর কাছে ভালো গল্পও রয়েছে। নেভার সে নেভার,হতেই পারে ২ বছর পর সে সত্যিই সিনেমাটা বানালো।” যদিও এই বক্তব্যে কোনো নিশ্চয়তা নেই,তবুও এই ইন্টারভিউ অনেক অনুরাগীর মনেই আশার সঞ্চার করেছে।