অর্থনৈতিক প্রতারনার দায়ে কিছুদিন আগেই গ্রেফতার হয়েছেন বরানগর কালিতলা লেনের বাসিন্দা ও কলকাতা ফ্যাশন ও গ্ল্যামার জগতের স্বঘোষিত জনক জয়ন্ত দাশগুপ্ত ওরফে “জেডি বুড়ো”। নিজের বয়সের ভার জেনে নিজেেই নিজের এই নাম “জেডি বুড়ো” রেখেছিলেন এই জয়ন্ত দাশগুপ্ত।
বর্তমান দ্রুতগতির ইন্টারনেট জুগের ডিজিটাল দুনিয়ায় নিজেকে গ্ল্যামার জগতের আইকন বানাতে চান বহু যুবক যুবতী। ইতিমধ্যে অনেকেই তাদের নানান প্রতিভা দিয়ে বেশ সাফল্য অর্জন করে ফেলেছেন। তাদের মধ্যে আছেন বংগাই, স্যান্ডি সাহা ইত্যাদি আরো অনেকেই। সেফবুক ও অন্য সামাজিক মাধ্যমে এদের কোটি কোটি ফলোয়ার যার ফলে এদের দিয়ে বহু বানিজ্যিক সংস্থা তাদের নানান ধরনের প্রচার করাতে বেশ ভালো টাকার বরাত দিয়ে থাকেন আর এখানেই এই জয়ন্ত দাশগুপ্তের প্রবেশ।
নিজে কোন কিছু না হয়ে, প্রতিভাহীন হয়েও নিজেকে সমাজের বুকে গ্ল্যামার জগতের ও উঠতি যুবক-যুবতীদের ( ফটোগ্রাফার / মেকাপ আর্টিস্ট ও মডেল) কেরিয়ারের নানান প্রলোভন দেখিয়ে তাদের মাথায় পা রেখে নিজেকে বিখ্যাত করার নেশায় মেতে উঠেছিলেন। নব্য যুবক যুবতীরাও জেডি বুড়োর দেখানো রঙিন স্বপ্নে বুঁদ হয়ে সত্য মিথ্যার জাচাই করা ভুলে তার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই তার লোভ ও লালসার শিকার হয়েছেন।
আরো ভয়ঙ্কর তথ্য হল সামাজিক মাধ্যমে তার যে ৮০ হাজার সদস্যের গ্রুপটি বর্তমান তা কোন সভয় ছিল অন্য কোন ব্যাক্তির, এবং এই ৮০ হাজার সদস্যের জনপ্রিয় সমর্থন এ মূলধন করে শাষক দলের নেতাদের কাছে যেমন মদন মিত্র, কুনাল দোষ ও দেবাশীষ কুমারের বিশ্বাস অর্জন করতে গিয়েছিলেন।
অর্থাৎ এই “জেডি বুড়ো” কোন কিছু না হয়েও গ্ল্যামার জগত ও রাজনৈতিক মহলে নিজের নাম টিকে আরো বেশী জনপ্রিয় করার ষড়যন্ত্র করে ফেলেছিলেন যাতে পরবর্তীকালে রাজনৈতিক নেতাদের সাহচর্যে বানিজ্যিক সংস্থা গুলির কাছে আরো বিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারেন। ঠিক সেই দেখেই তো বিশ্বাস করেছিলেন শহরের ব্যাবসায়ী দেবরাজ রায়চাঁদ। জয়ন্ত দাশগুপ্ত ওরফে জেডি বুড়ো, দেবরাজ রায়চাঁদের থেকে বানিজ্যিক প্রচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতি ও প্রতারনা করেন ও তার বৃদ্ধ মা কেও ফোনে হুমকি দেন। এর পরেই গ্রেফতার হন জেডিবুড়ো।
এর পরেই এক এক করে জয়ন্ত দাশগুপ্তের হাতে শিকার হওয়া যুবক-যুবতীরাও তার অত্যাচারের কথা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করতে শুরু করেন। আজ সামাজিক মাধ্যমে জনৈক কুশল পাপাই ভৌমিক নামে এক যুবক কিছু রেকর্ডিং শেয়ার করেন যেখানে একটি ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে জয়ন্ত দাশগুপ্ত কে কোমরে দড়ি পরিয়ে, খালি পায়ে এক পুলিশ আধিকারিক প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে থানায় নিয়ে যাচ্ছেন। অন্য দুটিতে রেকর্ডিং শোনা যাচ্ছে এক মহিলা কে কিভাবে মানসিক ভাবে চাপ দিতেন তার সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতে ও কিভাবে একজন উঠতি ফটোগ্রাফার এর বিরুদ্ধে মানসিক রোগীর তকমা লাগিয়ে তার কেরিয়ার নষ্ট করেছিলেন।
আগামী দিনে হয়তো এরকম আরো অনেকেই মুখ খুলবেন বলেই আশা করা যায়।