পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ হ্যাঁ গান গাওয়ার জন্য মিত্র ইনস্টিটিউশনের রেজিস্টার থেকে তার নাম কেটে দেওয়া হয়েছিল। স্কুল শিক্ষকরা বলেছিলেন এবার গান গেয়ে বেরাও। বাড়িতে তার বাবাও বলেছিল পড়াশোনা ছেড়ে গান গাইবে এটা সম্ভব না। বাড়ি স্কুল সব জায়গা থেকেই গান বন্ধ করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি যদি গান না গাইতেন বাংলা গানের কি হত? তিনি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, বাংলা গানের জগতে এক মাইল স্টোন।
তাহলে এত বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও তিনি শুরু করলেন কি করে? তার প্রথম কৃতিত্ব কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ছিলেন তার সহপাঠী এবং প্রিয়তম বন্ধু। সে প্রথম জেদ করে হেমন্ত বাবুকে নিয়ে যান আকাশবাণীর অডিশনে। অডিশনে এক বারেই পাশ করে গেলেন তিনি। সেটা তো স্বাভাবিক কিন্তু তার স্বর যে ঈশ্বরপ্রদত্ত। কিন্তু সুযোগ পেলে কি হবে বাড়িতে তো মত নেই। অনেক চেষ্টার পর মায়ের অনুরোধে বাবা মত দিলেন।
তাও থেকে গেল সমস্যা কোন গান গাইবেন তিনি। প্রিয় বন্ধুকে দিয়ে জোর করে গান লিখতে বললেন। ‘’আমার গানেতে এল চিরন্তনী…’’ গান দিয়ে দুই শিল্পীর নতুন যাত্রা শুরু হল। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের প্রথম লেখা গান জীবনে প্রথম রেডিও তে গাইলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। সেই শুরু, তার পরের গল্পটা সকলেরই জানা।
সেই থেকে মৃত্যুর কিছুদিন আগে পর্যন্ত গান উপহার দিয়ে গেছেন তিনি। বাংলা হিন্দি দুই ভাষাতেই সমান জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। আজ তার ১০৩ তম জন্মদিন। তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন ৩৪ বছর আগে, কিন্তু আজও তার গান সমান প্রাসঙ্গিক হয়ে বেঁচে আছে প্রত্যেক বাঙালির মনের মণিকোঠায়।