বহতা নদী সরকার
ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল আবগারি (মদ) নীতি মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছেন। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার কেজরীকে অন্তর্বর্তী জামিনের শর্ত স্থির করার নির্দেশ দিয়েছে নিম্ন আদালতকে। পূর্বেই দুই বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন যে কেজরীওয়াল স্বভাবগত অপরাধী নন, বারবার অপরাধ করার নজিরও তাঁর নেই। অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে জামিন দেওয়া হলেও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি কোনো ফাইলে সই করতে পারবেন না। বিচারপতিদের এই শর্তের জবাবে কেজরীওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেছিলেন, তিনি নিশ্চিতভাবেই আবগারি নীতিসংক্রান্ত কোনো সরকারি নথিতে সই করবেন না। তবে তা না করার জন্য উপরাজ্যপালও যেন জনহিতকর কাজ বন্ধ করে না দেন।
কেজরীওয়ালকে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাঁর গ্রেপ্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করে আম আদমি পার্টি (আপ)।
ইডির হয়ে প্রথমে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু ও পরে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জামিনের বিরোধিতা করে বলেছিলেন যে ফৌজদারি আইনে একজন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক নেতার কোনো পার্থক্য নেই। তিনি জামিন পেলে ভুল বার্তা যাবে। তাঁকে মোট নয়বার সমন পাঠানো হয়েছিল। তিনি একবারও আসেননি। এখন জামিন পেলে লোকে ভাববে, তিনি কিছুই করেননি।
ইডি বিরোধিতা করলেও বিচারপতিদের কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি তাদের হতে হয়েছিল। তদন্ত কেন এত ঢিমেতালে চলছে? সাক্ষী ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জেরা করতে কেন এত সময় লাগছে? কেন দুই বছর ধরে কিছুই করা হয়নি? এসব প্রশ্ন ইডিকে শুনতে হয়েছিল। ইডি জানিয়েছিল, প্রথম দিকে কেজরিওয়ালের সংশ্রব পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত যত এগিয়েছে, ততই প্রমাণ পাওয়া গেছে। দুর্নীতি স্পষ্টতর হয়েছে।
আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধানকে গ্রেফতারি কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর বেআইনি পদক্ষেপ কি না, সে সম্পর্কে অরবিন্দ কেজরীর আবেদনের প্রেক্ষিতেই জামিনের এই নির্দেশ। যদিও অরবিন্দ কেজরীর এখন সিবিআই হেফাজতে থাকায় তিনি সেই মামলায় পৃথকভাবে জামিন নিতে হবে তাঁকে। আগামী ১৭ জুলাই সেই মামলার শুনানি হবে দিল্লি হাই কোর্টে।