করোনাকাল থেকে লাগাতার লক ডাউন আর তার সাথে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ঠেলায় ঘাড়ে-কোমরে আর পিঠে ব্যথা বেড়েছে। বাড়িতে থেকে ভাল-মন্দ খেয়ে শরীর আরও ভারী হয়েছে। একটানা বাড়িতে থাকা, বাড়ি থেকেই অফিসের যাবতীয় কাজ, মিটিং, টার্গেট মিট! তাতে একদিকে যেমন সুবিধে, তেমনি অসুবিধেও বিস্তর। একে তো বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করলে কাজের সময়টা এমনিতেই বেড়ে যায়। তার উপর অফিস গেলে বাস-ট্রাম বা ক্যাব ধরা, সহকর্মীদের ডেস্কে গিয়ে কথা বলা, ভেন্ডিং মেশিন থেকে চা বা কফি নিতে যাওয়া বা বাইরে অ্যাসাইনমেন্টে বেরোনোর মতো কাজে যতটুকু হাঁটাচলা করতে হত, এখন সে সব পাট চুকে গেছে। আবার অনেকের বাড়িতেই অফিসের মতো নির্দিষ্ট উচ্চতার চেয়ার-টেবিল অমিল, তাঁরা বিছানায় অথবা সোফায় বসে কাজ করছেন। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে চারপাশের অস্থির পরিস্থিতিজনিত টেনশন আর স্ট্রেস। সব মিলিয়ে পিঠ, কাঁধ, কোমর, পায়ের অসহ্য ব্যথায় ভুগতে শুরু করেছেন অনেকে। পেনকিলার দিয়ে সামাল দিলেও তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রচুর!
তা হলে কীভাবে মুক্তি মিলবে এই ব্যথার হাত থেকে?
- একটানা বসে কাজ করবেন না। একঘণ্টা অন্তর উঠে দু’পাক হেঁটে আসুন, একটু স্ট্রেচিং করুন। স্কিপিং বা পুশআপ করতে পারেন। ঘাড় ডান-বাঁ, উপর-নিচে ঘোরান, গোড়ালি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আড়ষ্টতা কাটিয়ে নিন। খুব ব্যথা হলে জায়গাটায় আইসপ্যাক বা হটব্যাগের হালকা সেঁক নিলে আরাম পাবেন। বিছানায় বসে কাজ করলে চেষ্টা করুন ল্যাপটপটা একটা উঁচু পিঁড়ি বা ওইরকম কিছুর উপর রাখতে, যাতে সোজা হয়ে বসতে পারেন। দরকার হলে কোমরের পিছনে একটা কুশন দিয়ে সাপোর্ট রাখুন। বসার ভঙ্গি মাঝেমাঝে বদলে নিলে আড়ষ্টতা কমবে। রাতে ঘুমোনোর সময় পাতলা তোষক দেওয়া শক্ত বিছানায় শোয়ার অভ্যেস করুন, এড়িয়ে চলুন নরম গদি দেওয়া বিছানা।
- তার সঙ্গে নজর দিতে হবে খাবারের প্লেটের দিকে। হালকা, পুষ্টিকর খাবার খান। ফল আর শাকসবজি খান, তাতে শরীর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট পাবে। সঙ্গে ভিটামিন ই আর সি খাওয়াও খুব দরকারি।
- কাজের সময়ের বাইরে বাকি সময়টা বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কাটান, ভালো বই পড়ুন, সিনেমা দেখুন। শারীরিক-মানসিক সুস্থতা বাড়লে ব্যথার বোধ অনেক কমে যাবে।
- তবে যদি এমন ব্যথা হয় যে স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারছেন না, তা হলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।