বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। দুই বাংলার চলচ্চিত্রের কোলাবোরেশান নিয়ে আলফা আই, চরকি ও ভারতীয় স্বনামধন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ ফিল্মস এবার এক হয়েছে। এই তিন প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হতে যাচ্ছে বড় পর্দার ২টি সিনেমা।
সেই সিনেমার একটির ঘোষণা দেয়া হয়েছে আজ অর্থাৎ ৯ ডিসেম্বর। রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে বিকেল ৫টায় আয়োজন করা হয় এক প্রেস কনফারেন্সের। আগামী ১১ ডিসেম্বর আসবে আরেকটি সিনেমার ঘোষণা।
খানিকটা দম নিয়ে নির্মাণে ফিরছেন আলোচিত ও জনপ্রিয় নির্মাতা রেদওয়ান রনি। ‘দম’ (Domm) শিরোনামে সেই সিনেমায় মূল ভূমিকায় দেখা যাবে সময়ের ও দুই বাংলার পরিচিত তারকা চঞ্চল চৌধুরীকে।
বেশ খানিকটা বিরতির পর নির্মাণে ফেরা নিয়ে পরিচালক রেদওয়ান রনি বলেন, ‘সত্য ঘটনা আমাকে সব সময়ই অনুপ্রাণিত করে। অনেক বছর পর চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষুধা মেটানোর জন্য এই গল্পটাই আমাকে তাড়িত করছিল। সাধারণ মানুষের ভয়াবহ মানসিক শক্তি তাকে যে কোনো ভয়ংকর বিপদ থেকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে নিমিষেই। দমচলচ্চিত্রে এই গল্পটাই বলার চেষ্টা করছি।’
‘সেই সাথে এই কাজটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুই বাংলার সিনেমার কান্ডারি। এসভিএফ, আলফা ও চরকি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’
‘দম’-সিনেমার মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন চঞ্চল চৌধুরী। পরিচালক রেদওয়ান রনির সাথে তার সম্পর্কটা প্রায় ২০ বছরের কাছে। এমনটাই বলছিলেন অভিনেতা নিজে।
এই সিনেমায় অভিনয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘রনির সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কটা অনেক দিনের। সে একসময় নিয়মিত নির্মাণ করেছে। কিছুদিন নিজে নির্মাণ না করলেও নির্মাণ প্রক্রিয়ার মধ্যেই ছিল। এবারের সিনেমার গল্প যখন রনি আমাকে শুনিয়েছে তখন আমি হতবাক হয়েছি। অসাধারণ একটা গল্প। আমার চরিত্রটা বেশ চ্যালেঞ্জের। সেই সাথে অনেক আয়োজন ও বিগ ক্যানভাসের সিনেমা দম।
‘আমার সবচে বেশি ভালো লাগছে একই সাথে চরকি, এসভিএফ, আলফা-এর মতো বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আমাদের এই সিনেমার সাথে আছে। এই সিনেমাটা দুই বাংলা মিলিয়ে নতুন কোনো দিগন্তের সূচনা করবে।’
আলফা-আই স্টুডিওজ লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘আলফা-আই স্টুডিওস সবসময় বাংলাদেশের বিনোদন জগতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। একটি অগ্রগামী চিন্তার প্রোডাকশন হাউস, আমরা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম যে বাঙালি দর্শক ভালো মানের কনটেন্ট দেখতে চায়।
আমরা প্রতিবারই সেটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। এবার আলফা, এসভিএফ এবং চরকির এক হয়েছি বাংলা চলচ্চিত্রের বাজারকে উন্নত করতে এবং বিশ্বব্যাপী দর্শকের কাছে পৌঁছাতে।’
২৮ বছর ধরে যারা একাই বদল করে চলেছে বাংলা সিনেমার ইতিহাস! রেইনকোট, চোখের বালি, অটোগ্রাফ, ২২শে শ্রাবণ এর মতো অসংখ্য ফিল্ম দিয়ে যারা সমৃদ্ধ করেছে বাংলা ফিল্ম-এর ভান্ডার। বলছি এসভিএফ-এর কথা।
এসভিএফ-এর ডিরেক্টর ও কো-ফাউন্ডার মহেন্দ্র সোনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের বিনোদন শিল্পের সাথে আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে এসভিএফ। আমরা শুধু চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি না; বাংলা সিনেমাকে উদযাপন করে আমরা একটি সম্প্রদায়, একটি সংস্কৃতিকে লালন করছি। আমাদের লক্ষ্য বাংলা ভাষার সিনেমাকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরি করে বিশ্বের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে দেয়া।’
চরকির ইনভেস্টর ও স্ট্র্যাটেজি প্রেসিডেন্ট যারেফ হোসেন বলেন, ‘শুরু থেকেই চরকির লক্ষ্য ছিল সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে মানসম্পন্ন কনটেন্ট পৌঁছে দেয়া। এবার চরকি ও আলফা আই, এসভিএফ এক সঙ্গে সেই মিশনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য এক হয়েছে। আমাদের বিনোদন শিল্পের কাজকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়ার এটি একটা বড় সুযোগ ও উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হতে চলেছে।
এই প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, পরিচালক সৈয়দ আহমেদ শাওকী, চরকির কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকবৃন্দ।