ভারতের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী ও দেশের জনক মহাত্মা গান্ধীর সেই তিনটি বাঁদরের মুর্তির কথা আপনাদের মনে আছে? একজন নিজের চোখ হাতদিয়ে ঢেকে রেখেছে, দ্বিতীয়জন নিজের হাত দিয়ে মূখ বন্ধ রেখেছে আর তৃতীয় জন নিজেল হাতদিয়ে নিজের দুকান বন্ধ রেখেছেন। এই তিন টি বাঁদরের মুর্তির অর্থ ছিল – খারাপ কিছু দেখ না, খারাপ কিছু বোলো না আর খারাপ কিছু শুনোনা। কিন্তু এরমানে এই নয় যে খারাপ কিছু দেখলে তার প্রতিবাদ কোরো না।
গতকাল বাংলাদেশে একটি বই কে ও তার প্রকাশন সংস্থা কে নিষিদ্ধ করার কারনে, বিশ্বকবির একটি বিকৃত মূর্তি দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বকবির পূর্নাঙ্গ একটি মুর্তি যার মুখে “টেপ” লাগানো এবং বিশ্বকবির হাতে গীতাঞ্জলি যা একটি “গজাল” বা পেরেক বিদ্ধ । সাথে লেখা – গুম হয়েগেছেন রবীন্দ্রনাথ।
পেরেকবিদ্ধ ‘গীতাঞ্জলি’ হাতে বাক্রুদ্ধ রবীন্দ্রনাথ৷ মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা ও স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর সেন্সরশিপ এবং সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বাঁশ, থার্মোকল আর বইয়ের কাগজ দিয়ে সাড়ে ১৯ ফুট উচ্চতার এই ভাস্কর্য নির্মাণ করেছেন #ঢাকা_বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের একদল শিক্ষার্থী।
এই ছবি নেট মাধ্যমে ভাইরাল হলেও অদ্ভুত ভাবে আমাদের দেশের বা বাংলার প্রথম সারির কোন সংবাদ মাধ্যম এই সংবাদ পরিবেশনে সেরকম কোন উৎসাহ দেখাননি। এমন কি বাংলা তথা ভারতবর্ষের সাহিত্যপ্রিয় সুশীল সমাজের কেউই এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানাননি। অদ্ভুতভাবে চুপ করে আছে কেন্দ্রীয় সরকার, বিশ্বভারতী ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারও।
গনতান্ত্রিক ভাবে প্রতিবাদ করা যেতেই পারে কিন্তু সেখানে কোন মনিষীর মুর্তিকে বিকৃত করে সেটিকে প্রতিবাদের ভাষা হিসাবে কি ব্যাবহার করা যায়?
কোলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গে যদি এই ঘটনা ঘটতো তাহলে কি একই প্রতিক্রিয়া হত?