বারো মাসে তেরো পার্বনের রাজ্য আমাদের এই বাংলা বা পশ্চিমবঙ্গ। উৎসব অনুষ্ঠানের শেষ নেই বললেই চলে কিন্তু আমরা কি সবাই সব উৎসব অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানি?
বাংলার সব থেকে বড় উৎসব দূর্গা পুজো যা বছরে দুবার পালিত হয়। মূলত আমরা আশ্বিন মাস অর্থাৎ অক্টোবর মাসের দশ দিনের দূর্গা পুজোকেই অকাল বোধন বা শারদীয়া দুর্গাপুজো বলে মনে করি কিন্তু চৈত্র মাসেও বহু হিন্দু দূর্গা পুজো করে থাকেন যা বাসন্তী পুজো হিসাবে জানি।


শারদীয়া দূর্গা পুজোর আগেই মূলত বিশ্বকর্মা পুজো হয়ে থাকে। হিন্দু ধর্মে বিশ্বকর্মা কে শিল্পের দেবতা। তাই হিন্দু ব্যবসায়ী, শ্রমিক, চাষী ইত্যাদি সবাই তাদের যন্ত্রাংশ কে সঠিক ও মঙ্গলময় রাখার জন্যে বিশ্বকর্মার পায়ে অর্পণ করেন। কিন্তু হুগলীর বেগমপুর, তাজপুর অঞ্চলে এই শীত কালে হচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজো। না হঠাৎ করেই কোন সপ্নাদেশ পেয়ে নয়। এই শীতকালীন বিশ্বকর্মা পুজো চলে আসছে প্রায় ৭০ বছর ধরে। তবে এখানে এই বিশ্বকর্মার বাহন হাতি নয়, এখানে বিশ্বকর্মার বাহন ঘোড়া।

আমরা জানতে পারলাম, হুগলীর বেগমপুর, খড় সরাই,তাজপুর সংলগ্ন এলাকার প্রচুর মানুষ তাঁত শিল্পের সাথে জড়িত। আশ্বিন মাসে দূর্গা পুজোর সময় নতুন শাড়ির চাহিদা তুঙ্গে থাকার ফলে এই তাঁতিরা সেই সময় বিশ্বকর্মা পুজোতে অংশগ্রহণ করতে পারেননা। তাই তারা এই শীতকালীন বিশ্বকর্মা পুজো করে থাকেন। প্রথমদিকে ঘরোয়া পুজো হিসাবে প্রচলন থাকলেও এখন এই পুজো বারোয়ারী রূপ ধারণ করেছে।


প্রতি বছরের মতো এবার ও চন্দন নগরের আলোকসজ্জা ও কুমারটুলির প্রতিমা দিয়ে এই অকাল বিশ্বকর্মা পুজো জমে উঠেছে। হুগলীর বেগমপুর ও তাজপুর ইত্যাদি গ্রাম গুলিতে মণ্ডপে মণ্ডপে হাজার দর্শণার্থীর ভীড় চোখে পড়ছে।