বাড়ি বেহালাতে হলেও, গোবেচারা চেহারার এই সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র -ই কালীঘাটের কাকু নামে পরিচিত। ইডির হাতে গ্রেফতার হবার পর থেকেই এই সুজয় কৃষ্ণের লীলাখেলা কম দেখা যাচ্ছে না। লিপস এন্ড বাউন্স কোম্পানির আড়ালেই রেখেছেন কাগজে কলমে আরো বারোটি ভূয়া কোম্পানি যাদের মাধ্যমেই হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন চলেছে বলেই সুত্রের খবর। এবং অদ্ভুত ভাবেই তিনি অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র নিজেকে প্রভাবশালী হিসাবেই প্রমান করছেন।
তিনি অন্যদের মতোই নিজেকে “পিজি”তে সেফ রাখার যে চেষ্টা করছেন এবং তার ভয়েসটেস্ট কে ক্রমাগত বিলম্ব ঘটাচ্ছেন তা ইতিমধ্যেই ইডি মহামান্য হাইকোর্টের নজরে এনেছেন। ফলত: আগামীদিনে বেহালা নিবাসী “কালী ঘাটের” কাকু যদি অনুব্রতর মতো তিহাড় জেলে স্থানান্তরিত হন তাতে অবাক হবার কিছুই থাকবেনা। বীরভূমের তৃনমুল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডল ও ঠিক এই পন্থা অবলম্বন করেই কন্যাসহ আজ তিহাড় জেলে রয়েছেন। কিন্তু আরো একটি অদ্ভুত বিষয় হলো এই রহস্য জনক লিপস এন্ড বাউন্ড কোম্পানির যিনি হিসাব রক্ষক বা একাউন্টটেন্ট তার হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। ইডি তাকে কেন আর ডাকছে না সেটি এই মুহুর্তে আরো একটি রহস্য হয়ে দাড়িয়েছে।
অন্যদিকে মাননীয়া মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সাম্প্রতিক কালের নেতাজী ইনডোরে যতই হুঙ্কার দিন, বিরোধী দলের নেতাদের নানান অভিযোগে জেলে ঢোকাবেন তা অতটা সহজ হবেনা। কারন ইডি সিবিআইয়ের তদন্ত সম্পূর্ন চলছে আদালতের তত্বাবধানে। এর আগেও প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ইডির হাতে গ্রেফতার হবার সময় মাননীয়া বলেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়র শারীরিক সমস্যা হলে ইডি বা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন কিন্তু সে পদক্ষেপ নেওয়াটাও হয়নি কারন জ্যোতিপ্রিয় বাবু গ্রেফতার হবার প্রথম দিকে অসুস্থ বোধ করলেও ইডির কাছে ক্রমশ “মনের কথা বলে হালকা” হয়ে সুস্থ বোধ করছেন। আবার অন্যদিকে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক কে কয়লা পাচার তদন্তে ইডি প্রায় এগারোবার তলব করায় একবারই মাত্র হাজিরা দিয়ে আদালতের কাছে রক্ষাকবচ চেয়েছিলেন। কিন্তু আদালত আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক কে সেই রক্ষাকবচ দেননি। ইতিমধ্যেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঘনিষ্ঠ এই নেতা অর্থাৎ মলয় ঘটক সহ ইডির র্যাডারে থাকা অন্যরাও “যা ঘটেছে তাই বলার” সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। অবশ্য এই রকম সিদ্ধান্ত নেবার যথেষ্ট কারন আছে।
দেশের অন্য পাঁচটি রাজ্যে ইতিমধ্যেই ভোট শেষ হয়েছে। বিভিন্ন সুত্র ও সংবাদ মাধ্যমে জানা যাচ্ছে বিজেপি এই ভোটে ভালো ফল করাল জায়গায় রয়েছে আর ফলাফল ঘোষনা হলেই কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা পশ্চিমবঙ্গে ঝাপিয়ে পড়বে এবং ডিসেম্বরেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব দের জাতায়াত বাড়বে ফলত ইডি ও সিবিআইয়ের ওপর তদন্তের গতি বাড়াতে আরো চাপ বাড়বে। আগেই মহামান্য হাইকোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা নিয়োগ ও গরু পাচারেল তদন্ত আগামী দুমাসের মধ্যেই শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কয়লা পাচার, গরু পাচার, অবৈধ বালি খাদান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতি, পুরসভা নিয়োগ দূর্নীতি, রেশন দূর্নীতির পর মিড ডে মিল দূর্নীতিও তদন্তের আওতায় এসেছে। একের পর এক দূর্নীতির তদন্ত অন্যদিকে এক এক করে মন্ত্রীদের গ্রেফতারী সব মিলিয়ে শাষক দলের অবস্থা ক্রমেই শোচনীয় হয়ে উঠছে।। সব মিলিয়ে আশাকরা যায় ডিসেম্বর মাসে চাপ আরো অনেক বাড়বে।