স্বর্ণালী পাত্র, কলকাতা: গানের দুনিয়ায় খ্যাতি অর্জন করার সাথে সাথে বহু মানুষের ভালোবাসা এবং সম্মানও অর্জন করেছেন আজকের দিনে সব চেয়ে জনপ্রিয় গায়ক অরিজিত সিং। প্রতি নিয়ত তার মার্জিত ব্যবহার মন জিতেছে মানুষের। বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি অর্জন করার সত্ত্বেও মাটির মানুষ তিনি। তাই সকলের পকেটের কথা ভেবেই তার শহর জিয়াগঞ্জে খুলেছেন “হেঁশেল” নামের এক রেস্তোরাঁ।
এখন বহু বলিউড তারকা থেকে ক্রিকেটার অনেকেরই কোন না কোন বিকল্প আয়ের উৎস রয়েছে। তবে আর পাঁচটা তারকার থেকে এখানেও আলাদা তিনি। ব্যবসায়িক লাভের স্বার্থে নয় বরং স্বল্পমূল্যে খাবার দেওয়াই লক্ষ্য অরিজিতের। তার রেস্তোরাঁ “হেঁশেল” – এ খাবারের দাম রাখা হয়েছে ন্যূনতম। যেখানে মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুরের রেস্টুরেন্ট গুলোয় খাবারে দাম চড়া সেখানে অল্প খরচেই সকলে খাবার পাবেন অরিজিতের হেঁশেল – এ। বহরমপুরের রেস্টুরেন্টে বাটার নানের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা কিন্তু হেঁশেলে এই খাবার মিলবে মাত্র ৫০ টাকায়। এছাড়াও পড়ুয়াদের জন্য রয়েছে বিশেষ ছাড়। আগে পড়ুয়াদের পকেটের কথা ভেবে ভেজ থালি পরিবেশন করা হতো ৩০ টাকায়। এখন তার দাম সদ্য বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে পেয়ে যাবেন বিরিয়ানি, নান জাতীয় আরো মুখরোচক খাবার। সবকিছুর মূল্যই ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে।
কাজের জন্য নানান জায়গায় যেতে হলেও, বছরের বেশিরভাগ সময় অরিজিৎ কাটান তাঁর দুই ছেলে ও স্ত্রী কোয়েল সিংহের সাথে জন্মভূমি জিয়াগঞ্জেই। এমনিতেও তাঁর জনপ্রিয়তার কারণে এবং তাকে একবার দেখার আশায়, জিয়াগঞ্জ হয়ে উঠেছে ভ্রমণের জায়গা। মানুষের ভিড় বাড়ছে তাঁর খাবার হোটেল”হেঁশেল” – এও। এই রেস্তোরাঁর দেখাশোনা করেন অরিজিৎ সিং – এর পিতা সুরেন্দ্র সিংহ ওরফে কাক্কা সিং। এই রেস্তোরাঁয় কর্মচারী রয়েছেন ২৯ জন। দু তোলা হোটেলটি খোলা থাকে সকাল ১১ টা থেকে রাত ১০:৩০ পর্যন্ত। শহরে থাকলে মাঝে মধ্যে গায়ক নিজেও আসেন রেস্তোরাঁর দায়িত্ব সামলাতে।
গুণের জন্যে বিশ্বব্যাপি নাম অর্জন করেছেন অরিজিৎ। কোটি কোটি টাকা রোজগার করেও বিলাসিতার ছাপ নেই তার জীবনে। আর পাঁচটা মানুষের মত অতি সাধারণ থাকতে পছন্দ করেন তিনি। তাই সকল সাধারণ মানুষের ২ বেলা স্বচ্ছন্দে খাওয়ার ব্যবস্থা করতেই তৈরি হয়েছে তার “হেঁশেল”। হাসপাতাল নির্মাণ থেকে খেলার মাঠ নির্মাণ করা কিংবা ইংরেজী শিক্ষার ক্লাস চালু করা,উপার্জনের সিংহভাগ টাকা তিনি ব্যবহার করেন সমাজ কল্যাণ মূলক কাজে। তাই শুধু গানের সুর নয়, তার কর্মও বারংবার আমাদের মন ছুঁয়ে যায় ।