আদর শব্দেই রয়েছে ভীষণ কাছের মানুষ কে হৃদয়ের মিষ্টি অনুভূতি প্রকাশের ছোঁয়া। যা একান্তই ভীষণ রকমের ব্যক্তিগত এবং ব্যক্তিগত মানুষের জন্যই এবং যা কখনোই অন্যের জন্য নয়। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এরকম গুটি কয়েক মানুষ থাকেন যাদের জন্য আমরা এই আদর তুলে রাখি আমাদের মনে মনিকোঠায়। কারণ সেই মানুষ গুলোও সব সময় মনের মনিকোঠা তেই বাস করেন। তাদের যখন তখন জড়িয়ে ধরা যায়, তারা ছাড়া জীবন অসম্পূর্ণ। কিন্তু হঠাৎ করেই যদি তারা ভ্যানিস বা উধাও হয়ে যায়? ঘরের মধ্যে থেকেই তারা নিখোঁজ হয়ে যায়? সেখানেই আবার যদি দেখা যায় নারকীয় হত্যার বিভীষকা ?
আপনারা ভাবছেন, আদর দিয়ে শুরু করে কেনই বা এতো নারকীয় কল্পনায় যাচ্ছি??? আসলে এই কল্পনা অংশুমান চট্টোপাধ্যায়ের। সুদূর লাকসেম্বার্গ থেকেও যিনি আজও বাংলা ও বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ কে ভুলতে পারেননি। তাই নিজের কল্পনা কে বাস্তব রূপ দিতে প্রযোজনা করলেন “আদর” এর। যদিও আদরের কৃতি তালিকায় যার নাম না নিলেই নয় তিনি হলেন শ্রীমতী দিয়ান চট্টোপাধ্যায়।
পরিচালনার দায়িত্বে অংশুমান চক্রবর্তী। সাথে কলকাতার এক ঝাঁক অভিনেতা।
সম্প্রতি নিউটানের রবীন্দ্রতীর্থে হয়েগেলো “আদর” ছবির একটি বিশেষ ব্যক্তিগত স্ক্রিনিং। যেখানে সমস্ত কলাকুশলী দের সাথে উপস্থিত ছিলাম আমরাও। শুরু হলো সন্ধ্যা ঠিক ৬টায়। দেড় ঘন্টার একটু কম বেশী সময় টান টান উত্তেজনায় কি ভাবে কেটে গেলো বোঝাই গেলোনা। গল্প বলার ধরণ টা অনেক টা বিদেশী ভঙ্গিমাতে হলেও খুব একটা অপরিচিত নয়। মূলত কাহিনীকার ও প্রযোজক অংশুমান চট্টোপাধ্যায় গল্পের দুই অন্যতম প্রধান চরিত্র “তদন্তকারী অফিসার” পাকড়াশী ও সহায় কে দিয়ে গল্প এমন ভাবে বলিয়েছেন যে দর্শকদের কোন একটি দৃশ্য থেকে পরের ঘটনা আন্দাজ করার সুযোগ দেননি। চেরা চরিত এক ঘেয়ে সেমি কমারশিয়াল ছবির মিথ ভেঙে দিতে পারে এই ছবি। অফিসার পাকড়াশীর ভূমিকায় প্ৰখ্যাত অভিনেতা অমিতাভ ভট্টাচার্য্য ও তার এসিস্ট্যান্ট সহায় এর ভূমিকায় মনীশ চক্রবর্তী।
অভিনেতা অমিতাভ ভট্টাচার্য্য, যার অভিনয় আমরা ছোট পর্দা থেকে শুরু করে সিলভার স্ক্রিন অবধি দেখেছি। দেখেছি বলিউড থেকে দক্ষিনি ছবিতেও তার অভিনয়ের দাপট কিন্তু কোন অজানা কারণে এই অভিনেতা কে চলচিত্র জগৎ সেই ভাবে ব্যবহার করতে পারেনি কিন্তু এবার অমিতাভ ভট্টাচার্য্য ফিরলেন এক নতুন অবতারে। গোয়েন্দা পাকড়াশীর চরিত্রে এই অমিতাভ ভট্টাচার্য্য কে চেনাই কঠিন। সাথে সহকারী সহায় অর্থাৎ বাংলা বিনোদন জগতের চেনা মুখ অভিনেতা মনীশ চক্রবর্তীর যুগলবন্দী সব মিলিয়ে বাংলার দর্শকদের কাছে, অজিত ও ব্যোমকেশ, ফেলুদা ও তোপসে, গোয়েন্দা শবর এর পর আবার ও নতুন সিকুয়েল দাবী করতেই পারে।
গল্পের অন্য মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন বিক্রমজিৎ চক্রবর্তী ও অনিন্দিতা দাস। এই মুহূর্তে বিক্রমজিৎ নবাগত হলেও ক্রমশ পরিচিত মুখের তালিকায় আসছেন, একই সাথে তার অভিনয় দক্ষতা কোথাও আমাদের ৯০ এর দশকের বিখ্যাত বলিউড মুভি “ডার” এর রাহুলের কথা মনে করায়। যা ফুটিয়ে তুলেছিলেন স্বয়ং কিং খান। চরিত্রের চরিত্রয়ণের জন্য বিক্রমজিৎ কে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়েছিল তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ছবির প্রধান নারী চরিত্র “মেঘ” এর চরিত্রে অনিন্দিতা দাস। ছোট পর্দার ভীষণ পরিচিত মিষ্টি মুখ অনিন্দিতা। যিনি কিশোরী বয়স থেকেই হারবাট এর প্রেয়সী তার অভিনয় নিয়ে নতুন করে বলার থাকেনা কিন্তু “আদর” এ অনিন্দিতার অভিনয় দর্শকের রাতের ঘুম কেড়ে নেবার জন্য যথেষ্ট। সব মিলিয়ে “আদর” আপনার শিরায় শিহরণ জাগাতে আসছে একটি জনপ্রিয় ও টি টি প্লাটফর্মে।