বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া পাহাড়। সমগ্র জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম হল শুশুনিয়া পাহাড়। শুশুনিয়া পাহাড়টি একটি ঐতিহাসিক মূল্যবান সমৃদ্ধি। এই পাহাড়ের কোলেই একটি শিলালিপি রয়েছে, যা পশ্চিমবঙ্গের ‘প্রাচীনতম’ শিলালিপি হিসাবে বিবেচিত। রাজা চন্দ্রবর্মণের শিলালিপি বলে পরিচিত এই শিলালিপি। জানা যায় রাজা চন্দ্রবর্মণ এই স্থানে তৈরি করেছিলেন তাঁর দুর্গ। যদিও বর্তমানে এই দুর্গের কোনও চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। শুশুনিয়া পাহাড়ের একটি দুর্গম স্থানে অবস্থিত এই শিলালিপি। শিউলিবোনা গ্রামে যাওয়ার রাস্তায় ঢুকলেই চোখে পড়বে সুবিশাল একটি মাঠ। সেই মাঠের পথ অনুসরণ করে কিছুটা পাহাড়ে উঠলেই পেয়ে যাবেন শিলালিপিটি। ইতিমধ্যেই শুশুনিয়া পাহাড় বেড়াতে এসে, একাধিক মানুষ পৌঁছে যাচ্ছেন ইতিহাসের স্বাদ নিতে।
প্রাচীন এই শিলালিপিতে রয়েছে দুটি অংশ। ‘চক্র’ বা চাকা এবং একটি লিপি। প্রথম অংশটি ইঙ্গিত দেয় যে এই শিলালিপিটি রাজা চন্দ্রবর্মণের এবং দ্বিতীয় অংশে চোষগ্রাম গ্রাম সম্পর্কিত কিছু কথা। পাহাড়ের এই দুর্গম অংশ থেকে দেখতে পাওয়া যাবে দূর দূরান্ত পর্যন্ত। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন জয় করবে প্রত্যেকের। তবে এই জায়গায় আসার আগে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যে রাস্তা দিয়ে উপরে উঠবেন সেটাকে রাস্তা বলাই বাহুল্য। আদতে একটি পাথুরে বক্র রেখা। যদিও এই দুর্গম অঞ্চলেও ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। বলছেন কষ্ট করে উপরে আসা সার্থক হয়েছে। শিলালিপিটি প্রত্যক্ষ করার পর সব কষ্ট মুছে গেছে।
প্রাগৈতিহাসিক ভূখণ্ড শুশুনিয়া পাহাড়। শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে পর্যটনের কারণ ছাড়াও গবেষণার কারণে ভিড় জমান আগ্রহী মানুষরা। বাঁকুড়া জেলার ইতিহাসের পাতায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে এই শুশুনিয়া পাহাড়।
রাজা চন্দ্র বর্মনের শিলালিপি সেই ঐতিহাসিক গুরুত্বকে অন্য পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে! সবে পুজো পেরিয়ে শীত শীত অনুভূত হচ্ছে। তাই দোনামনা না করে, চলে আসুন শুশুনিয়া পাহাড়ের এই ইতিহাস খুঁজতে। আশা করি হতাশ হবেন না। বাঁকুড়া থেকে দেবজিৎ দত্ত