এই মুহূর্তে বাংলায় সাড়ম্বরে চলছে বাণিজ্য সম্মেলন Bengal Business Summit 2025, দেশ বিদেশের নামী দামী শিল্পপতি দের আমন্ত্রিত করা হয়েছে এই সম্মেলনে, যাতে রাজ্যে বাণিজ্যয়িক শিল্পের প্রসার ঘটে এবং একই সাথে বেকার যুব সম্প্রদায় সেখানে তাঁদের জীবিকা খুঁজে নিতে পরেন। কিন্তু প্রদীপের তলাতেই থাকে গভীর অন্ধকার। নতুন বাণিজ্য শিল্পের আহ্বানে চলচিত্র শিল্প বা বিনোদন শিল্প ইতিমধ্যেই অন্ধকারে বিসর্জন হতে চলেছে।
বাংলার চলচিত্রের খ্যাতি আন্তর্জাতিক জগতেও সমাদৃত। এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু আজ সেই বাংলা চলচিত্র জগৎ প্রায় স্তব্ধ হতে চলেছে। বেশ কিছু দিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল শুটিং বন্ধের। শুটিং বন্ধ রয়েছে একাধিক পরিচালকদের। যার ফলে একাধিক প্রযোজনা সংস্থা ও পরিচালকদের লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে লোকসানের শেষ এখানেই নয়। এই প্রজেক্ট গুলিতে যারা অভিনয় করতেন সেই সব অভিনেতা অভিনেত্রীরাও কাজ হারালেন, কাজ হারালেন বহু টেকনিশিয়ান রাও। এর দায় কার??
কোটি কোটি টাকা খরচা করে কলকাতায় আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসব প্রতি বছর আয়োজন করা হয়। দেশ ও বিদেশের বিখ্যাত পরিচালক, অভিনেতা অভিনেত্রীদের আমন্ত্রিত করা হয় এই উৎসবে। যারা ছুটে আসেন ঋত্বিক, সত্যজিৎ, মৃণালের শহর কলকাতায়। সেখানেই বন্ধ ষ্টুডিও পাড়া। এর দায় কার??
কাজ বন্ধ হয়েছে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলির, সিরিয়াল পরিচালক সৃজিত রায়ের, সাথে যোগ হলো একেন বাবু খ্যাত পরিচালক জয়দীপ মুখার্জী। সকলের সাথেই গিল্ড এর প্রধান স্বরূপ বিশ্বাসের সাথেই মতানৈক্য। যার ফলে শুটিং শুরু করাই যাচ্ছে না, এমনকি পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলির প্রযোজক পর্যন্ত পিছিয়ে গেছেন প্রয়োজনা থেকে।
পরিচালক জয়দীপ মুখার্জী আজ সামাজিক মাধ্যমে এসে তার ক্ষোভ উগরে দিয়ে এও বললেন, তিরিশ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে বহু কাজ করার পরেও আগামী তে তিনি আর কোন কাজ করতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, একটি বিখ্যাত ও টি টি প্ল্যাটফর্ম এ তার একটি ওয়েবসিরিজ শুটিং এর জন্যে তারা গিল্ড এর কাছে লিখিত অনুমতি চাইলে গিল্ড তাঁদের সাথে সময় মতো যোগাযোগ না করেই ভুল ত্রুটি উল্লেখ করছেন। যার ফলে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও কবে শুটিং শুরু করা যাবে সেনিয়ে কোন কিছুই ঠিক করা যায়নি। ফলত সবটাই বাতিল করতে হয় যার ফলে লোকেশন ও আর্টিস্ট বুকিং সমেত প্রায় ৮-৯ লক্ষ্য টাকার লোকসান হয়েছে যা কোন ভাবেই ফিরে পাওয়া যাবে না।
এই অচলবস্থা নতুন একেবারেই নয়। কিছু মাস আগেই পরিচালক রাহুল চক্রবর্তী কে গিল্ড থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়, সেই সময় পরিচালক রাহুলের পাশে সব পরিচালকরাই দাঁড়িয়ে গিল্ড এর বিরোধিতা করেছিলেন। প্রতিবাদে বন্ধ হয়েছিল শুটিং। সেই অচলাবস্থা কাটাতে মধ্যস্ততা করতে হয়েছিল মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কে স্বয়ং। সেদিনের আলোচনায় ছিলেন অভিনেতা ও তৃণমূল সাংসদ দেব, পরিচালক গৌতম ঘোষ, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মাননীয়ার নির্দেশে নতুন কমিটি গঠন হবার কথা ছিলো যা আজ অবধি হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে।
বর্তমানে ও আগামীতে বিনোদন বা চলচিত্র জগৎ বেশ অন্ধকারে থাকবে বলেই অনেকেই আশা করছেন। পুরোনো পরিচালকদের অবস্থাই করুন সেখানে নতুন প্রতিভা আসার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। আগামীতে চলচিত্র বলে কিছু থাকবে তো??
প্রশ্ন উঠছে এখনই।