কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনলো CBI। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, নিয়োগ কেলেঙ্কারির মূল হোতা বলে পরিচিত “কালীঘাটের কাকু”-কে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছিলেন এক বিজেপি নেতা অরুণ। CBI-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এই টাকার পরিমাণ প্রায় ৭৮ কোটি টাকা।
CBI-এর তদন্তে কী উঠে এল?

তদন্তে জানা গেছে, স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের মাধ্যমে হাজার হাজার চাকরি বিক্রির পিছনে ছিল বিশাল অর্থ লেনদেন। CBI সূত্রের দাবি, এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতারা। তদন্তের সময় একাধিক সূত্র ও ব্যাঙ্ক লেনদেন বিশ্লেষণ করে উঠে আসে বিজেপি নেতা অরুণের নাম।
অরুণ কে? কীভাবে জড়িত এই কেলেঙ্কারিতে?

CBI-এর তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, অরুণ দীর্ঘদিন ধরে চাকরি বিক্রির এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার মাধ্যমে বহু অযোগ্য প্রার্থী মোটা টাকা দিয়ে সরকারি চাকরি পেয়েছে। তথ্য বলছে, ২০২০-২১ সালের মধ্যে অরুণ একাধিকবার কালীঘাটের কাকুকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাঠিয়েছিলেন। এই টাকা কোথায় গিয়েছে এবং কাদের কাছে পৌঁছেছে, তা জানতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে CBI।
“কালীঘাটের কাকু”-র ভূমিকা কী?

নিয়োগ দুর্নীতিতে “কালীঘাটের কাকু”-র নাম বহুদিন ধরেই আলোচনায় ছিল। CBI ও ED ইতিমধ্যেই এই ব্যক্তির একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তির হিসাব খতিয়ে দেখছে। সূত্রের দাবি, শুধু চাকরি বিক্রি নয়, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকেও তিনি কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করেছেন।
বিজেপি ও তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
এই রিপোর্ট সামনে আসার পর বিজেপি পুরো অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “এটি রাজনৈতিক চক্রান্ত। বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই এই মিথ্যা গল্প বানানো হচ্ছে।”
অন্যদিকে, তৃণমূলের দাবি, “বিজেপি নিজেদের দুর্নীতি আড়াল করতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। এখন তাদেরই নেতার বিরুদ্ধে তথ্য সামনে এসেছে।”
তদন্ত কোন পথে এগোচ্ছে?

CBI এই মামলায় অরুণকে তলব করতে পারে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই তার বেশ কিছু সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্যের রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এখন দেখার, CBI-এর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয় এবং কালীঘাটের কাকু ও অরুণের মধ্যে টাকার লেনদেনের রহস্য কতদূর উন্মোচিত হয়!