দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে আর

Days
Hours
Minutes
Seconds

দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে আর

Days
Hours
Minutes
Seconds
Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)
Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

চাকরি নয়, বিক্রি হয়েছে বাঙালির মেরুদণ্ড!

Table of Contents

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

এপার আর ওপার, পদ্মা বাঙালির মূল দুই ঠিকানার মধ্যে রেখা টেনে দিয়েছে। এই বাঙালি কোনদিনই সেভাবে সিন্ধি, গুজরাতি, মারোয়াড়িদের সঙ্গে আর্থিক প্রতিপত্তিতে পাল্লা দিতে পারেনি। মুর্শিদকুলি খাঁ বা তারপর সিরাজউদ্দৌলা যখন বাংলার অধিপতি ছিলেন তখনও বাংলার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিটা ছিলেন মারোয়াড়ি জগত শেঠ। তবে ওই পদ্মার রেখার মতই তার শরীরের একটা রেখা বহু যুগ ধরে খুব শক্ত সমর্থ ছিল। যাকে আমরা শিরদাঁড়া বা মেরুদণ্ড নামে চিনি।

এই মেরুদণ্ড ভাঙতেই লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গের ছক। তা অবশ্য আটকে দেওয়া যায়। যদিও কলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী স্থানান্তর ঠেকানো যায়নি। তারপর ১৯৪৭ সালে এক্কেবারে বাঙালির মেরুদণ্ডে পড়ল মোক্ষম আঘাত। মেরুদণ্ড দু’টুকরো হ‌ওয়ার মত দু’ভাগ হয়ে গেল বাংলা।

বাঙালির বোধহয় অভিযোজন ক্ষমতাটাও বেশ শক্তপোক্ত। তাই টুকরো হওয়া মেরুদণ্ডকেই এপারে-ওপারে স্বতন্ত্র শিড়দাঁড়ায় পরিণত করা গেল। তার ছোট্ট উদাহরণ পাওয়া গেল পঞ্চাশের দশকেই। প্রবল কংগ্রেস জমানাতেও নেহেরু-বিধান রায়দের ছক ভেস্তে বিহারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সংযুক্তিকরণ ঠেকিয়ে দিল এপারের বাঙালি। আর ওপারে? খান সেনার ভয়ঙ্কর, কুৎসিত অত্যাচার সামলে শুধু বাংলায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে যারা স্বাধীন দেশ তৈরি করে ফেলতে পারে তাদের মেরুদণ্ডের দৃঢ়তা নিয়ে প্রশ্ন থাকাটাই অনুউচিৎ।

কিন্তু আবার বিপত্তি বাঙালির জীবনে। মেরুদণ্ডের এই প্রবল দৃঢ়তার পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও তা আবার ভেঙে পড়ল। অর্থ নয়, ওপারের বাঙালির মেরুদণ্ড তিন দশক আগেই ধর্মের কাছে বিকিয়ে গিয়েছে। আজকের যে বাংলাদেশ, সেখানে বাঙালির মেরুদণ্ড বলে সত্যিই কিছু অবশিষ্ট নেই।

কিন্তু নতুন শতকেও আশার আলো ছিল এপার বাংলায়। কারণ নৈতিকতা, চাপের কাছে মাথা নত না করার বেশ কিছু লড়াইয়ের নমুনা নতুন শতাব্দীতেও দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল এপারে, মানে আমাদের পশ্চিম বাংলায়। কিন্তু তারপর?

তারপর বলে কিছু নেই। এর পরের গল্পটা স্রেফ ধান্দাবাজি এবং অসম্ভব ত্যাগের গর্ভ থেকে (মনের বিরুদ্ধে গিয়ে ত্যাগ করলে, বিশেষ করে নিজেকে ত্যাগী হিসেবে সর্বসমক্ষে প্রতিষ্ঠিত করার বাসনা থেকেই এমন লালসার জন্ম হয়) যে লোভের উদগীরণ হয়, সেই অপরিসীম লোভ ও লালসার কাছে চড়া দামে নিজের মেরুদণ্ডটা সুন্দর করে বিক্রি করে দেওয়ার এক বিস্তৃত কাহিনী!

টিভি খুললে, খবরের কাগজ পড়লে বা নিউজ পোর্টাল খুললেই চাকরি বিক্রির খবর। এতদিন মোটামুটি স্কুলের চাকরি বিক্রি নিয়েই খবর হচ্ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে উঠে আসছে পুরসভার চাকরি সহ রাজ্য সরকারের অন্যান্য সরকারি দফতরেও চাকরি বিক্রি হয়েছে। একটা আধটা নয়, বরং কেজি রেটে বিকিয়েছে চাকরি। শাসকদলের নেতা বা ঘনিষ্টরা যেমন এইভাবে বহু টাকা কামিয়েছেন, তেমনই রাজ্যের সাধারণ মানুষ এই পথটাকেই সঠিক বলে বেছে নিয়েছেন। হায়!

চাকরি বিক্রি বা যোগ্যকে বঞ্চিত করে অযোগ্যের থেকে টাকা নিয়ে তাকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার এই ঘটনা কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রথম করল?

প্রায় প্রথম, কিন্তু একেবারেই প্রথম নয়। আর তাছাড়া বিষয়টা সরকার করেছে কিনা বা সরকারের মাথারা এতে কতটা ইনভলভ আছে তা এখনও তর্কের খাতিরে প্রমাণ সাপেক্ষ। কিন্তু বিষয়টি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে ভয়ঙ্করভাবে ঘটেছে তা সত্যি। অতীতের বাম আমলে টুকটাক টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার ঘটনা কিছু ঘটে থাকলেও, তা এমন মহামারীর আকার নেয়নি। সেই সময় বরং যেটা ছিল, নিজের কাছের লোককে চাকরিতে ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। সেটাও কিন্তু অন্যায়। তবে অর্থের বিনিময়ে চাকরি বিক্রির মহামারী তখন যে ছিল না তা হলফ করে বলা যায়।

কিন্তু সে যাক। এই তৃণমূল সরকারের জমানায় চাকরি বিক্রি নিয়ে চারিদিকে হৈচৈ হচ্ছে। এটা নিশ্চয়ই আইনের চোখে অপরাধ। এর জন্য বহু মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। গোটা সমাজ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু সমস্যাটা এখানেও অতটা গুরুতর নয়। গুরুতর হল, এই চাকরি বিক্রির নামে স্রেফ এপার বাংলার বাঙালির মেরুদণ্ডটা বিক্রি হয়ে গিয়েছে!

এর আগে ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়াটা ছিল ব্যতিক্রম। কিন্তু যে ছবি প্রকাশ্যে উঠে এসেছে তাতে বোঝা যাচ্ছে ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়াটাই নিয়ম হয়ে উঠেছে। বরং সৎপথে চাকরি পাওয়াটাই ক্রমশ ব্যতিক্রমের উদাহরণে পরিণত হতে চলেছে। চায়ের দোকানে, ট্রেনে-বাসে বা বন্ধু-বান্ধবদের আড্ডায় কান পাতলেই শুনবেন, বলা হচ্ছে টাকা না দিলে চাকরি হয় না। তাই ওই পথেই সরকারি চাকরি হাসিল করতে হবে। মানে বাঙালির কাছে আজ ধান্দাবাজি, অসততা এবং দুর্নীতিই স্বাভাবিক। সে মেনে নিয়েছে সৎভাবে আর কিছু হবে না!

ঠিক এটাই, এই মনোভাব‌ই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। আপনার চারপাশ পুঁতিগন্ধময় হয়ে উঠতে পারে, ভয়ঙ্কর খারাপ মানুষজন আধিপত্য চালাতে পারে। কিন্তু যারা ছড়ি ঘোড়াচ্ছে তারা আসলে খারাপ, এই বোধটা যতক্ষণ আপনার মধ্যে থাকছে ততক্ষণ কিন্তু আশার আলো আছে। কারণ আজ না হলে কাল, কাল না হলে পরশু আপনি ঠিক এই খারাপের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠবেন। আপনার মতই আরও হাজার হাজার মানুষ এগিয়ে এসে এই খারাপ অনাচারের প্রতিকার ঘটাবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যেভাবে চাকরি বিক্রিকে বর্তমান সমাজ জীবনের স্বাভাবিক অংশ হিসেবে মেনে নিতে শুরু করেছে তাতে মুক্তির সূর্যের উদয় হওয়াটা বেশ কঠিন!

আসলে শিরদাঁড়াটা থাকতে হয়, আব্বুলিশ হয়ে গেলে শত হাতড়েও লাভ হয় না।।

More Related Articles

“জয় বাংলা’ কাঁপাবে দিল্লি, ২০২৬-র পর বিজেপিকে বলাব ‘জয় বাংলা’: ধর্মতলায় হুঁশিয়ারি অভিষেকের”
সংবাদ ও রাজনীতি
“জয় বাংলা’ কাঁপাবে দিল্লি, ২০২৬-র পর বিজেপিকে বলাব ‘জয় বাংলা’: ধর্মতলায় হুঁশিয়ারি অভিষেকের”

২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে বিস্ফোরক ভাষণে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, বাংলার সংস্কৃতিকে যারা তাচ্ছিল্য করে, তাদের জবাব ২০২৬-এর নির্বাচনে মিলবে। দিল্লি কাঁপাতে ‘জয় বাংলা’র ডাক, হুঁশিয়ারি পদ্মফুল উপড়ে ফেলারও।

Read More »
“বাংলার ভাষায় কথা বললে গ্রেফতার? এবার দিল্লিতেই হবে লড়াই”: শহিদ মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি মমতার

২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ ছিল স্পষ্ট এবং আগুনঝরা। ‘বাংলা ভাষার উপর আক্রমণ চললে ছাড়বে না’, জানিয়ে তিনি ঘোষণা করলেন ২৭ জুলাই থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হবে নতুন ভাষা আন্দোলন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি বিজেপির ‘বাংলাবিদ্বেষী রাজনীতি’ ও ‘গ্রেপ্তার আতঙ্ক’ নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি।

Read More »
"ট্রামের ঘণ্টিতে ঘুম ভাঙতো কলকাতা – হারিয়ে যাওয়া এক শহরের সুর"
সম্পাদকীয়
“ট্রামের ঘণ্টিতে ঘুম ভাঙতো কলকাতা – হারিয়ে যাওয়া এক শহরের সুর”

“ট্রামের ঘণ্টিতে ঘুম ভাঙতো কলকাতা – হারিয়ে যাওয়া এক শহরের সুর”
একটা সময় কলকাতার সকাল মানেই ছিল ট্রামের টুংটাং আওয়াজ। সেই ধীর গতি, কাঠের সিট, আর কনডাক্টরের ঝনঝনে টিকিট ব্যাগ—এ সবই ছিল শহরের ছন্দের অংশ। সময়ের সাথে সব বদলে গেলেও হারিয়ে যাওয়া এই ট্রাম আজও বেঁচে আছে স্মৃতির শহরে।

Read More »
"সিঙারা-সীতাভোগের সুগন্ধে মোড়া এক শতাব্দীর গল্প—চিরতরে থেমে গেল ‘দেশবন্ধু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’-এর পদচারণা!"
সম্পাদকীয়
“সিঙারা-সীতাভোগের সুগন্ধে মোড়া এক শতাব্দীর গল্প—চিরতরে থেমে গেল ‘দেশবন্ধু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’-এর পদচারণা!”

একটা সময় ছিল, যখন হাওড়া ব্রিজ থেকে নামলেই ঘিয়ের গন্ধে মন ভরে যেত। আজ সেই ‘দেশবন্ধু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’ শুধুই স্মৃতি। এক শতাব্দীর ইতিহাসের ইতি টেনে চুপিচুপি হারিয়ে গেল কলকাতার মিষ্টির কিংবদন্তি ঠিকানা।

Read More »
আজকের রাশিফল | ১৭ই জুলাই ২০২৫
সম্পাদকীয়
আজকের রাশিফল | ২১শে জুলাই ২০২৫ , দিনটি কেমন কাটবে! প্রেম, স্বাস্থ্য, অর্থ ও কর্মজীবনের বিস্তারিত রাশিফল।

২১শে জুলাই ২০২৫ – আজকের রাশিফল দেখে নিন আপনার প্রেম, স্বাস্থ্য, কাজ ও অর্থ ভাগ্যে কী লেখা আছে। প্রতিদিনের আপডেট পেতে পড়ুন The Indian Chronicles।

Read More »
"পুজোর হুল্লোড়ে ঢাকিদের হারিয়ে যাওয়া গল্প: কে রাখে তাঁদের খোঁজ?"
সম্পাদকীয়
“পুজোর হুল্লোড়ে ঢাকিদের হারিয়ে যাওয়া গল্প: কে রাখে তাঁদের খোঁজ?”

কর্পোরেট পুজোর জাঁকজমকের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে ঢাকিদের কষ্টের কাহিনি। পাঁচদিনের উৎসব তাঁদের কাছে আনন্দের নয়, বরং জীবনধারণের এক কষ্টকর সংগ্রাম। এবার সময় তাঁদের কথাও বলার।

Read More »
error: Content is protected !!