প্রচলিত কথায় আছে, “বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ”, তার মধ্যে জামাইষষ্ঠীও বাঙালির কাছে এক ধরনের পার্বণ। কিন্তু এই আনন্দ উৎসব পালন করতে গিয়ে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারকে আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। জামাই আদর করতে গিয়ে অনেক মেয়ের বাবা-দেরকে অনেক রকম সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অর্থের অভাব থাকার সত্বেও অনেক মেয়ের বাবা টাকা ধার করে হলেও জামাই আপ্যায়ন করে।এইদিন মাছ, মাংসের দোকান থেকে শুরু করে মিষ্টির দোকানের মালিকদের লাভ হলেও অনেক মেয়ের বাবার পকেট হয়তো শূন্য হয়ে যায়। মাছ- মাংস থেকে শুরু করে সমস্ত বাজারদরের দাম বেশি হওয়ার সত্বেও, সকাল থেকে উঠে মেয়ের বাবাকে সমস্ত বাজার করতে হয়। সাথে ফলমূলের দামও এইদিন আকাশ ছোঁয়া হয়। প্রতিবছর বুড়ো বাবার টাকায় জামাইষষ্ঠী পালন না করে, তার ওপর এরকম চাপ না দিয়ে এই প্রথার পরিবর্তন আনা দরকার।
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা রীতি অনুযায়ী, মেয়ের মা এইদিন উপস করে থেকে জামাইষষ্ঠী পালন করে। সারাদিন উপস করে থেকেও বিভিন্ন রকম পদ রান্না করে জামাই আপ্যায়ন করে, যেই পদ গুলো অনেক বাঙাল বা কায়স্থ বাড়ির মায়েরা নিজেরা খায়না, সারাদিন ফলমূল খেয়েই থাকে।সারাদিন এরকম উপস করে থাকার ফলে অনেক সময় শরীর খারাপ হতে পারে, তাই এই রীতি টা বন্ধ করা দরকার।
অনেক পরিবারে আবার জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে বাইরের রেস্তোরাঁয় খেতে যায়। কিন্তু এইদিন সমস্ত রেস্তোরাঁয় যেরকম ভিড় বেশি হয় সেরকম সমস্ত খাবারের দামও হয় আকাশ ছোঁয়া। খাবারের পরিমানের তুলনায় খাবারের দাম বেশী হওয়ায় রেস্তোরাঁর মালিকের পকেটও ডবল হতে থাকে এইদিন।
বাঙালিরতো মাতামাতি করার জন্যে যেকোনো কিছু একটা পেলেই হলো। কিন্তু সবার তো আর্থিক অবস্থা সমান হয়না সব কিছু পালন করার জন্য। তাও কিছু মানুষ লোক দেখানোর জন্য হলেও এসব পালন করে। তাই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর কিছু মানুষের কথা মাথায় রেখে জামাইষষ্ঠী প্রথার পরিবর্তন আনা দরকার