শোভন মল্লিক, কলকাতা: রানীগঞ্জে অবস্থিত ৩০০ বছরের পুরনো মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস। সেখানেই দেবী কালীর নিত্যপূজো হয়ে আসছে ৩০০ বছর ধরে । ভক্তরা আজও এই মন্দিরে বিপদে-আপদে ছুটে আসেন। তাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন স্বয়ং দেবী কালিকা।
এই ৩০০ বছরের পুরনো বড়মার কালী মন্দির। আজ থেকে ৩০০ বছর আগে ছিল শ্মশান ভুমি। এই শ্মশানে পাশ থেকে বয়ে যেত দামোদর নদ। কিন্তু এই কিছুই আজ আর দেখতে পাওয়া যায় না এই অঞ্চল আজ রানীগঞ্জের বড়বাজার নামে পরিচিত।
৩০০ বছর আগে এক মধ্যরাতে অন্ডালের বাসিন্দা তারাচরণ চট্টোপাধ্যায় দেবী কালীর স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নদেশ অনুযায়ী তারাচরণ ছুটে আসে গভীর জঙ্গলে এবং সেখানে শ্মশানের পাশে প্রতিষ্ঠা করেন দেবী কালীর এই মন্দির। রোজ দেবীর পুজোর জন্য তিনি অন্ডাল থেকে ছুটে আসতেন এখানে। যা আজও বংশ পরম্পরায় হয়ে আসছে । রোজ এই চট্টোপাধ্যায় পরিবারের হাত থেকেই পূজো পান দেবী কালিকা ।
আজও এই মন্দিরে ভক্ত সমাগমের কোন খামতি নেই। ভক্তদের মুখে শোনা যায় দেবীর কাছে যা চাওয়া হয় , ভক্তরা এখানে তাই পায়। দেবী এবং ভক্তের মধ্যে এক মধুর সম্পর্ক যেন স্থাপন হয়েছে এখানে । করালবদনী কালিকা যেন এখানে সকল ভক্তের করুণাময়ী মা । এখানে কথিত আছে দেবীর খাঁড়া ধোয়া জল খেলেই নাকি রোগ-ব্যাধি সেরে যায়। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সমস্যা থেকেও তাঁরা এই জল পান করার জেরেই মুক্তি পান।
এই মন্দিরে রয়েছে নানা অলৌকিক কথা, কাহিনী তার মধ্যে একটি আজও বহু চর্চিত। এই মন্দিরে একটি কুয়ো রয়েছে।যেটা সবসময় ঢাকা থাকে । কিন্তু সূর্যের এক বিন্দু আলো না প্রবেশ করলেও, এই জল একেবারেই নির্মল ও স্বচ্ছ। এমনকি গ্রীষ্মের দাবদাহে খড়ার সময় সমস্ত রানীগঞ্জে পুকুর, জলাশয় এমনকি দামোদর নদ পর্যন্ত শুকিয়ে গেলেও এই কুয়ো জল সর্বদা পরিপূর্ণ থাকে। এমনই দেবী নানান মাহাত্ম্য লুকিয়ে আছে মন্দিরের আনাচে-কানাচে । প্রতি অমাবস্যায় বহু ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দিরে। প্রতি সন্ধ্যায় শঙ্খধ্বনি ও ঘন্টার আওয়াজে মেতে ওঠে মন্দির চত্বর । দীপান্বিতা অমাবস্যার কালী পূজার সময় এখানে হয় মায়ের বিশেষ পুজো। সেই দিন দূর দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে নিজের মনস্কামনা পূর্ণ করতে।