সঞ্জয় কাপড়ী পূর্ব মেদিনীপুর:– নন্দীগ্রাম-১ নম্বর ব্লক মৎস্য বিভাগের অভিনব বার্তা কর্মসূচীতে বেকারত্ম ঘোঁচাতে বাড়ির দালানে মাছ চাষ করে স্বনির্ভরতার দিকটি তুলে ধরা হচ্ছে। উদাহরন হিসেবে বলা হচ্ছে বাড়ির উঠানে তুলসির চৌবাচ্চায় হরেক মাছের চাষে উপার্জনের বিষয়টি।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম-১নম্বর ব্লকের মাধবপুর গ্রামের বছর আটান্নের তুলসি দাস বাড়ির উঠানে অল্প জায়গায় স্বল্প ব্যায়ে চৌবাচ্চায় হরেক মাছের চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সকলকে। তিনি দেখিয়েছেন মনের উদ্যোম ও ইচ্ছা থাকলে বড় পুকুর কিংবা ভেড়ি নয় ছোট চৌবাচ্চাতেই মাছ চাষ করে হাজার হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। কই, শিঙি, মাগুরের মত জিওল মাছের পাশাপাশি পাবদা, জাপানিপুটি, পেংবা, সিলভার কার্পেরও চাষ করছেন অনায়াসে। মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যের জন্য চৌবাচ্চায় দিয়ে রেখেছেন অ্যাজোলা। তাছাড়া চৌবাচ্চার সবুজ শ্যাওলা নিয়ন্ত্রনের জন্য সিলভার কার্প মাছও ছেড়েছেন। এছাড়া কই, শিঙি প্রভৃতি মাছের কৃত্রিম প্রজনন করে নিজের চারা মাছ নিজেই তৈরি করে নেন। নিজস্ব চাষের পাশাপাশি একি সাথে নন্দীগ্রাম-১ নম্বর ব্লক মৎস্য বিভাগের সাথে মাছ চাষে স্বাবলম্বী হতে বেকার যুবকদেরও উৎসাহীত করছেন।
তুলসি বাবু বলেন, “মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে একশো দিনের কাজের কনভার্জেন্স প্রকল্প থেকে এই ইটের চৌবাচ্চা বানানো হয়েচ্ছে । ২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ -এ ব্লক মৎস্য বিভাগ থেকে শিঙি মাছের চারাও পেয়েছি। চাষ সম্পর্কে তুলসি আরো বলেন, ছোট জায়গার ওপর এই পদ্ধতির চাষ লাভজনক। স্থানীয় বাজার লক্ষ করে চৌবাচ্চায় মাছ চাষ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, পাইকারি রেট ভালো থাকলে লাভ ভালো হয় । দু’শো টাকার ওপরে যেকোনো মাছ বিক্রি হলে পঞ্চাশ শতাংশ লাভ পাওয়া যায়। তবে দেশী খাবার মাছ ও রঙিন মাছ পাশাপাশি চাষ করলে লাভ বেশি পাওয়া যাবে।“
নন্দীগ্রাম-১ নম্বর ব্লকের মৎস্যচাষ সম্প্রসারন আধিকারিক সুমন কুমার সাহু বলেন, “তুলসি দাস একজন সফল মৎস্য চাষী। তিনি মাছ চাষ করেই সফল হয়েছেন। তিনি অনেককেই মাছ চাষে আগ্রহী করে তুলেছেন। পুকুর কিংবা ভেড়িতে যেমন স্বাভাবিক নিয়মে মাছ চাষ হয় তার থেকে সামান্য আলাদা এই মাছ চাষের পদ্ধতি। যেহেতু অল্প জায়গায় স্বল্প মূলধন নিয়ে এই উদ্যোগ নেওয়া যায়, তাই উপার্জনের এই সহজ পথ অবলম্বন করলে স্বনির্ভর হওয়া যায়। মাছ চাষকে পেশা করে এগিয়ে যেতে আমরা দপ্তরগত ভাবে প্রত্যন্ত গ্রামে ছোট ছোট দল গঠন করে এই সমস্ত মাছ চাষের আলোচনা করছি । অনালাইন ও অফ লাইন প্লাটফর্মে সরকারি প্রকল্পের সুবিধার পাশাপাশি মৎস্য প্রযুক্তি সম্প্রসারিত করা হচ্ছে”
নন্দীগ্রাম-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মৌসুমি পানি বলেন, “ব্লক মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে বেকার যুবক যুবতী, স্বনির্ভর দলের মহিলা , মৎস্যজীবী মাছ ব্যাবসায়ী সকলকে মাছ চাষের বিভিন্ন পেশার মাধ্যমে স্বনির্ভরতার উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও গঠন করা হচ্ছে, এই বিষয়ে অভিনব বার্তা কর্মসূচীতে প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে পাড়া বৈঠক করা হচ্ছে, বলা হচ্ছে যাদের পুকুর নেই তারাও বেকারত্ম ঘোঁচাতে বাড়ির দালানে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।“