পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ একটু জ্বর জ্বর ভাব বা বেশি কোনও সমস্যা সবকিছুতেই ডাক্তারের সম্মুখীন হন সাধারণ মানুষ। ভগবানের পরেই নাকি ডাক্তারের স্থান। হ্যাঁ ভগবানের পরে কেউ যদি জীবন বাঁচাতে পারেন তিনি হলেন ডাক্তার। এই বিশ্বাস রয়েছে পৃথিবীর সব মানুষেরই। কিন্তু যখন কোনও ডাক্তার নিজেই অসুস্থ হন তখন? ছোট খাটো সমস্যা হলে নিজের ডাক্তারি নিজেই করেন, নাহলে অন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয় তাদেরও।
কিন্তু যদি এমন হয় সেখানে সে ছাড়া আর কোনও ডাক্তার নেই তখন? তখন নিজেকেই নিজের ভগবান হতে হয়। তাই বলে নিজের শরীরে প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার নিজেই করেছেন কোনও ডাক্তার এমন ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। কিন্তু তেমন ঘটনাই ঘটেছিল ১৯৬১ সালে অ্যান্টার্কটিকায়।
১৯৬০ সালে অ্যান্টার্কটিকায় স্থাপিত হয়েছিল রাশিয়ার নভোলাজারেভস্কায়া গবেষণা কেন্দ্র। ১৩ জন বিজ্ঞানীর একটি দল গিয়েছিল সেখানে গবেষণার কাজে। তাদের দলে ছিলেন একমাত্র চিকিৎসক ডাক্তার লিওনিড রোগোল্ভ। গবেষণার পাশাপাশি অন্যান্য গবেষকদের শারীরিক অসুস্থতার দিকে নজর রাখতেন তিনি। ১৯৬১ সালের ২৯ সে এপ্রিল হঠাৎই পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়ে স্বয়ং চিকিৎসকের।
চিকিৎসক বুঝতে পারেন পেরিটোনাইটিসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। অত্যন্ত দ্রুত অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন করা প্রয়োজন। কিন্তু নিকটবর্তী গবেষণা কেন্দ্র প্রায় ১০০০ মাইল দূরে। এত দূর পাড়ি দেওয়ার মত সময় বা শরীরের অবস্থা কোনটাই ছিল না তার।
তখন বাধ্য হয়েই তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। নিজের করেন নিজের শরীরের অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের কিছু না জেনেই অন্যান্য গবেষকরা সেদিন তার সহকারীর ভুমিকা পালন করেছিলেন। বলা বাহুল্য সেই অপারেশন সফল হয়েছিল এবং দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ডাক্তার লিওনিড রোগোলভ।