চন্দননগরের ফটকগোড়া এলাকার জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সদস্য সুশ্রিকা দত্তের (২৩) জীবন একটি কুকুর নিয়ে পুজো মন্ডপে প্রবেশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিরতরে থেমে গেল। ফটকগোড়া নন্দঘোষ লেনের বাসিন্দা সুশ্রিকার বাবা সুমন দত্ত জানিয়েছেন, ষষ্ঠীর দিন তিনি এবং তার স্ত্রী তাদের দুই পোষ্য কুকুর নিয়ে মেয়ে সুশ্রিকার সঙ্গে পুজো মন্ডপে যান। মেয়ে ছোট কুকুরটিকে কোলে করে মন্ডপে প্রবেশ করেছিলেন, আর বড় কুকুরটি নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন মা।
এমন সময় পুজো কমিটির এক প্রবীণ সদস্য সুশ্রিকাকে কুকুর নিয়ে মন্ডপে ঢোকায় কড়া ভাষায় ভৎসনা করেন। অপমানিত হয়ে সুশ্রিকা বাড়ি ফিরে এসে এই অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন। তবে, তাঁর পোস্টে মন্তব্যের মাধ্যমে নানাবিধ কটুক্তি ধেয়ে আসতে থাকে। চাপের মুখে তিনি পোস্টটি মুছে ফেলেন। এরপর আরও একটি পোস্ট করে তিনি জানান যে পরিস্থিতি মিটমাট হয়ে গেছে এবং ভুল বোঝাবুঝির জন্য সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি এই পুজো কমিটির সদস্য ছিলেন।
সুশ্রিকার বাবা আরও অভিযোগ করেন যে, কমিটির পক্ষ থেকে ফোন করেও তাকে নানা কথা বলা হয়, যার ফলে তিনি মানসিক চাপে ভুগতে থাকেন। অতিরিক্ত অবসাদে ভুগতে ভুগতে তিনি শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল রাতে সুশ্রিকার মা-বাবা ঠাকুর দেখতে বাইরে গেলে, তিনি একা ঘরে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। আজ সকালে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে তার দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। চন্দননগর থানায় এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফটকগোড়া পুজো কমিটির সম্পাদক বিপ্লব দাস জানান, “এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। ওনার বাবা যে অভিযোগ করেছেন সেটা হয়তো ঘটনার আকস্মিকতায় বলা। তবে পুজোর সঙ্গে এই ঘটনার সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। সেদিন ষষ্ঠীর রাতে প্রচুর ভিড় ছিল। কুকুর নিয়ে প্রবেশ করায় দর্শনার্থীদের অভিযোগ আসে। তখন কুকুর নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কি পোস্ট করেছে সেটা পুজো কমিটির দায়িত্ব নয়, কেউ ব্যক্তিগতভাবে কিছু মন্তব্য করলে তার দায়ভার কমিটি নেয় না।”