কলকাতায় ফ্যাশন ও বিনোদন জগতে কাজকরার জন্য আছে কিন্তু প্রকৃত শিক্ষার অভাবে তারা সব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মুম্বাই দিল্লীর মত ভালো ইন্সটিটিউট কলকাতায় একটাও নেই। যা আছে সব টাই ফেক। ফ্যাশন ও বিনোদন জগতের নবাগতা রম্যানি রায় সরকারের সাথে আলোচনায় উঠে এলো বেশ কিছু প্রকৃত সত্য তথ্য।
রম্যানি রায় সরকার। জন্ম এক সম্ভ্রান্ত রুচিশীল উচ্চশিক্ষিত পরিবারে। বাবা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে অবসর প্রাপ্ত একজন রিসার্চ বিজ্ঞানী। এছাড়াও পরিবারের সকলেই বেশ ঊচ্চ শিক্ষিত এবং রুচিশীল।
প্রতিটি নারীই চায়, বা বেশীর ভাগ নারী চায় নিজেকে অন্যের কাছে সুন্দর করে তুলে ধরতে। রম্যানিও সেখানে বাদ যায়নি। কিন্তু তার সাথেই ছোট বেলা থেকেই শহরের বড় হোর্ডিং বা ম্যাগাজিনের বিজ্ঞাপনে দেখা চরিত্র গুলো কোথাও তাকে ভীষণ আকর্শন করতো। ২০১৭ পড়াশোনা শেষ করার পর চাকরি শুরু করেন একটি বহুজাতিক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায়। ২০২১ এ চাকরি করতে করতেই জানতে পারেন শহরে আয়োজন হচ্ছে একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতা যা আমরা Beauty Pegant নামে শুনে থাকি। সেখান থেকেই তার এই যাত্রাশুরু হয়। ছোট থেকে তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা ইচ্ছা কেই আত্মবিশ্বাসে রুপান্তরিত করে সেই প্রতিযোগিতায় নিজেকে তুলে ধরেন এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।
এরপরেই রম্যানি পায় একের পর এক সুযোগ। ফটোশুট, র্যাম্প বা ছোট ছোট বিজ্ঞাপনে কাজ করার সুযোগ। রম্যানি বলেন – আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি এবং সেটার খুব দরকার ছিল। কারন প্রথমত কলকাতায় অন্য রাজ্য গুলির মত ( মুম্বাই, দিল্লী, হায়দ্রাবাদ, বেঙ্গালুরু ইত্যাদি ) ফ্যাশন মডেলিং ও গ্রুমিং ইনষ্টিটিউট নেই। নিজে খোঁজ খবর করে জেনেছি যা আছে তার পরোটাই বোকা বানিয়ে টাকা রোজগারের ফেক প্রতিষ্টান। অনেকেই ভাবেন মডেলিং আর অ্যাক্টিং বা অভিনয় করা এক জিনিস। আসলে তা নয়। দুটোর মধ্যেই রয়েছে বিস্তর ফারাক সাথে দুটি জগতেই আছে অনেক কিছু শেখার।
মডেলিং এ সবার আগে আপনার নিজেকে তৈরী করতে হবে ভীষন আকর্ষণীয়। যাতে মানুষ আপনার দিকে তাকালে চোখ ফেরাতে না পারে আর তার সাথে সাথে থাকতে হবে Beauty with the Brain.. যা অন্য কেও অনুপ্রানিত করবে। ( ইদানিং কালে যেটার ভীষন অভাব। ) তবেই আপনাকে বিজ্ঞাপনী সংস্থা গুলি, কোন প্রডাক্ট কে আপনার মাধ্যমে তুলে ধরতে চাইবে। আপনাকে জানতে বা শিখতে হবে আপনি কোন পোষাকে নিজেকে কিভাবে তুলে ধরবেন। শুধুমাত্র কিছুশুট করে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে বা রিলস বানালেই হবেনা।
সোস্যাল মিডিয়া আপনাকে অনেক যোগাযোগ দেবার পরও কাজ না পাবার কারন আপনার এই জগত সম্পর্কে প্রকৃত শিক্ষার অভাব। আপনি একজন ফ্যাশন ফটোগ্রাফার এর কাছে গিয়ে ছবি তুললেন অথচ সেই ফটোগ্রাফার আদৌ ফ্যাশন ফটোগ্রাফার কিনা আপনি জানেন না। সে হয়তো খুব ভালো ওয়েডিং ফটোগ্রাফার কিন্তু ফ্যাশন ফটোগ্রাফি বোঝেই না। বোঝেনা ঠিক কি লাইট করতে হবে। এখানে ফটোগ্রাফার নিজেই লাইট করেন কিন্তু আদপে তা হয়না। প্রতিটা শুটের জন্য করতে হয় বিশেষ লাইট যা একজন লাইট বিশেষজ্ঞ করে থাকেন।
আসলে কেরিয়ারের ভিত্তি প্রস্তর টাই দূর্বল থেকে যাচ্ছে। আপনাকে দিনের শেষে ভাবতে হবে আমি নিজেকে মেনেটেইন করতে কি অর্থ উপার্জন করছি। সেখানে আপনার যদি বেসিক অর্থনৈতিক ক্ষমতা দূর্বল থেকে যায় তার সাথে অজ্ঞানতা ! এই দুটোই আপনার জন্য ক্ষতিকারক হয়ে দাড়াবে।
ভালো খারাপ সব ইন্ডাস্ট্রিতেই আছে। ঘরে বাইরে পথে ঘাটে। কিন্তু যদি আপনার এই দুটি বেসিক সমস্যা না থাকে তাহলে আপনাকে কেউ আটকাতে পারবেনা।
কলকাতা ফ্যাশন ও বিনোদন জগতের প্রতিভার উৎস হলেও প্রতিভাবান সবাই অন্য রাজ্যে চলে যাবার কারন এই দুটি সমস্যা। ফ্যাশন, অভিনয় বা ফটোগ্রাফি নিয়ে অভাব প্রকৃত শিক্ষার ও শিক্ষার্থীদের।