বড়দিন অর্থাৎ ২৫শে ডিসেম্বর, বিশ্বপিতা যিশুর জন্মদিন এলেই বাজারে ছেয়ে যায় নানান ধরনের কেক। প্রতিষ্ঠিত দোকান ছাড়াও অস্থায়ী স্টল বানিয়ে নানা ধরনের কেকের পসরা নিয়ে বসেন বেশ কিছু ব্যাবসায়ি। বড়দিনে কেক খাওয়া একটা ঐতিহ্যবাহী রীতি হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু এই ঐতিহ্যবাহী রীতির পিছনে ইতিহাস কি আমরা জানি? কেন বড়দিনে কেক খাওয়া হয়? জানেন কি যিশুর জন্মের সময় কিন্তু কেকের প্রচলন ছিল না।
হ্যা ঠিকই পড়েছেন, যিশুর জন্মের সময় কেকের প্রচলন ছিলনা কিন্তু ধারনা করা হয় সেই সময় “প্লাম পারিজ” খাওয়ার একটা প্রচলন ছিল। প্রধানত উপবাস ভাঙার পর খাওয়া হত এই “প্লাম পারিজ”। বহুদিনের প্রচলিত প্লাম পারিজের রেসিপিতে পরিবর্তন আসে। রেসিপিতে যুক্ত হয় মধু, ড্রাইফ্রুট ও মশলা। এই সব উপাদান যুক্ত হবার পর প্লাম পারিজ বদলে গিয়ে হয় পুডিং। জানাযায় প্রায় ১৬ শতক অবধি এই প্রচলন চলতে থাকে। এর সাথে যোগ হয় ডিম আর মাখন। ফলত প্লাম পুডিং বদলে এবার হল প্লাম কেক। ক্রিসমাসে এই প্লামকেক খাবার প্রচলন ছিল।
জানাযায়, প্রাচীন নোরস শব্দ “কাকা” থেকেই কেক শব্দটির উৎপত্তি যার সুইডিশ ভাষায় অর্থ হল মিষ্টি। গ্রীস সভ্যতায় প্রথম কেক তৈরীর নিদর্শন পাওয়া যায়। আবার নানা রকমের ড্রাইফ্রুট মিশিয়ে প্রথম ফ্রুটকেক তৈরী করার দাবী রাখে রোমানরা।
কেক আবিষ্কার নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন, বেক করে কেক তৈরী শুরু হয়েছিল এশিয়া মহাদেশ থেকেই। প্রাচীন মিশরেই বেক করে কেক তৈরীর সন্ধান পাওয়া গেছিল। প্রথমদিকে চিনির গুড়ো, ডিমের সাদা অংশ আর সুগন্ধী দিয়ে তৈরী হত কেক সাজানোর আইসিং আর বেক করার সময় মেশানো হত ড্রাইফ্রুট।
তবে উনিশ শতকের দিকে আবারও পরিবর্তন আসে কেকের রেসিপি তে। ১৮৯২ সালে ইলেকট্রিক ওভেন আবিস্কারের পরে সাদা ময়দা আর বেকিং পাওডার মেশানো শুরু হয়। চিনি আর চকলেটের দাম সেই সময় অনেক বেশী থাকায় মনে করা হত ওই সব দামী খাবার শুধুমাত্র ধনীদের জন্য। তবে অবাক হবেন জানলে, ওই সব ধনী পরিবারের কেক তৈরীতে যোগ করা হত ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্বাদের মশলা। সেই প্রচলন আজও চলে আসছে। এই ভাবেই শুরু হয়েছিল বড়দিনে কেক খাওয়ার প্রচলন।