বহতা নদী সরকার
বর্ষা শুরু। শুরু রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গির প্রকোপ। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম বর্ধমান জেলার মানুষও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতরের চিন্তা বাড়িয়েছে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, হুগলির মতো জেলাগুলো।
গত কয়েক বছরে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি ছিল কলকাতায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, এ বার শহরের ৬৪টি ওয়ার্ড চিহ্নিত করা হয়েছে হটস্পট হিসেবে। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে, ওয়ার্ডগুলোয় সে সব কাজ হচ্ছে কি না, সেটা বরো অফিসের পাশাপাশি আমাদের সদর দফতর থেকেও দেখা হবে।’
সে জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের নির্মীয়মাণ আবাসন এবং বন্ধ বাড়িগুলোর ওপর স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। পুরকর্তাদের বক্তব্য, শহরের অনেক জায়গাতেই নির্মাণাধীন আবাসন এবং দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ পড়ে থাকা বাড়িতে জল জমে থাকছে। সেই জমা জলে জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গির বাহক। কোনও ওয়ার্ডে নজরদারির ক্ষেত্রে গাফিলতি ধরা পড়লেই সংশ্লিষ্ট পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার, হেল্থ অফিসার ও স্যানিটারি অফিসারের কাছে কৈফয়ত তলব করার হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
২০২৩ সালে ১২ বছরের রেকর্ড ভেঙে গোটা রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ছুঁয়েছিল। এ বার যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাইছে পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলো। মূলত নিকাশিনালা এবং আবর্জনা পরিষ্কার, মশানিরোধক ওষুধ ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। মশার কামড় রুখতে মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের একাংশ মনে করছেন, বর্ষার শুরুতে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়লেও পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে। তবে ডেঙ্গিরোধে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে চাইছে প্রশাসন।
বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকেই ডেঙ্গির ঝুঁকিতে আছেন। ডেঙ্গি একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশা সাধারণত ভোরবেলা ও সন্ধার পূর্বে কামড়ায়। সাধারণ চিকিৎসাতেই ডেঙ্গিজ্বর ভালো হয়ে যায়, তবে ডেঙ্গি শক সিনড্রোম ও হেমোরেজিক ডেঙ্গিজ্বর মারাত্মক হতে পারে। এই বর্ষার সময় সাধারণত ডেঙ্গি রোগের প্রকোপ বাড়ে। এডিস মশার বংশবৃদ্ধি রোধের মাধ্যমে ডেঙ্গিজ্বর প্রতিরোধ করা যায়।