ভুবনেশ্বরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, উত্তাল ওড়িশা
ওড়িশার ভুবনেশ্বরে এক বিদেশি যুবতীর উরুতে প্রভু জগন্নাথের ট্যাটু করানোর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ট্যাটু পার্লারের মালিক ও শিল্পীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, যেখানে অনেকেই একে ‘সাংস্কৃতিক অবমাননা’ হিসেবে দেখছেন।
কীভাবে শুরু হলো বিতর্ক?
সম্প্রতি এক বিদেশি মহিলা, যিনি ভুবনেশ্বরে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত, তিনি স্থানীয় এক ট্যাটু পার্লারে গিয়ে তাঁর উরুতে প্রভু জগন্নাথের ছবি আঁকান। কিছুদিনের মধ্যেই সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়, যা দেখে ক্ষুব্ধ হন ভক্তরা। তাঁদের দাবি, প্রভু জগন্নাথের মতো পূজনীয় দেবতার ট্যাটু উরুর মতো স্থানে করানো অসম্মানজনক এবং এটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত।

পুলিশি তদন্ত ও গ্রেফতার
বিতর্ক চরমে ওঠার পর কয়েকজন জগন্নাথভক্ত শহিদনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তের পর পুলিশ ট্যাটু পার্লারের মালিক ও শিল্পীকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি ওই বিদেশি মহিলার বিরুদ্ধেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫(এ) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সংক্রান্ত অপরাধের আওতায় পড়ে।

ক্ষমা চাইলেন যুবতী ও ট্যাটু শিল্পী
বিতর্কের পর বিদেশি যুবতী একটি ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চেয়ে বলেন,
“আমি প্রতিদিন ভগবান জগন্নাথের পুজো করি এবং তাঁর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি না বুঝে ভুল করে এই ট্যাটুটি করিয়েছি। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং যত দ্রুত সম্ভব এটি সরিয়ে ফেলব।”
অন্যদিকে, গ্রেফতার হওয়া ট্যাটু পার্লারের মালিক জানান,
“আমাদের কর্মীরা তাঁকে আঙুল বা বাহুতে ট্যাটু করার পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি নিজেই উরুতে করানোর অনুরোধ করেন। আমাদের উদ্দেশ্য কারও অনুভূতিতে আঘাত করা ছিল না। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”
সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনের হুঁশিয়ারি
এই ঘটনায় ওড়িশার হিন্দু সংগঠনগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে কড়া আইনি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। পুলিশও সতর্ক করেছে যে, ধর্মীয় প্রতীক বা দেব-দেবীদের অসম্মান করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপসংহার
এই ঘটনা শুধু ওড়িশা নয়, সমগ্র দেশে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতার গুরুত্বকে নতুন করে সামনে এনেছে। জগন্নাথভক্তদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখেই বোঝা যায়, এই ধরনের বিষয়গুলো সমাজে কতটা গভীর প্রভাব ফেলে। এখন দেখার বিষয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং এই ঘটনা ভবিষ্যতে ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী বার্তা দেয়।