এই ভূত, প্রেতাত্মা, জ্বীন ইত্যাদি বিষয়ে তর্কের শেষনেই। বলা ভালো তর্ক শেষ হয়েছে তর্কাতর্কিতেই। মানব সভ্যতার ইতিহাসের গোড়া থেকেই এই বিষয়ে রয়েছে বিতর্ক। দিদিমা ঠাকুমার মুখের গল্প থেকে সাহিত্য আর সাহিত্য থেকে বিনোদন জগত সব ক্ষেত্রেই এই ভূত নিয়ে রয়েছে প্রভূত জল্পনা কল্পনা। প্রশ্ন ওঠে “ভূত” বলে কি আদৌ কিছু আছে বা হয় ? হলেও তাদের ঠিকানা কি? তাদের দেখতে কেমন? তারা কি সত্যিই ক্ষতিকর? মৃত্যুর পরে কারা ভূত হয়? আর এই ভূত যদি আপনাকে বলে “I love You”…..?
বর্তমান এই তীব্রগতির তথ্য প্রযুক্তির যুগে এই ভূত নিয়ে আলোচনা কে একেবারেই গুরুত্বহীন মনে করবেন না, বরং না জানলে আপনি পিছিয়ে পড়বেন। সময় হয়েছে এবার আমাদের জ্ঞ্যানচক্ষুর বিকাশ ঘটানোর। এবার সময় হয়েছে মৃত্যুর পরের জীবন বা অশরীরী জীবন সম্পর্কে জানার। যা চিরন্তন সত্য কিন্তু বাজারের খাঁটি গরুর দুধের মতোই দূষ্প্রাপ্য।
বিষয়টির গভীরে যাবার আগে আপনাদের আরো কয়েকটি কথা বুঝতে হবে বিজ্ঞান মানসিকতার সাথেই।
একটা সময় ছিল যখন উদ্ভীদ জগতকে আমরা চোখে দেখতে পেতাম কিন্তু গাছপালা তো মানুষের মতো কথা বলেনা, হাটা চলা করেনা কিন্তু তাদের মধ্যেও আছে প্রান। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু যখন আবিষ্কার করলেন তখন আমরা বিশ্বাস করলাম গাছেদের প্রান আছে। আজ আমরা সকলেই সেই কথা মানি।
আবার, বাতাস কে আমরা চোখে দেখতে পাইনা। কিন্তু তার প্রবাহ অনুভব করতে পারি। আমরা চোখে দেখতে পাইনা বলে কি বাতাস আছে সেটা অশ্বীকার করতে পারি ?
আবার, ধরে নেওয়া যাক একটি জন্মান্ধ মানুষের কথা। সে কখনও পৃথিবীর আলো দেখেনি। তার কাছে পৃথিবী মানেই তো অন্ধকার তাহলে কি আপনি সেই জন্মান্ধের কথাই মেনে নেবেন ?
ভূত মানে অতীত আর বর্তমান থাকলেই তার অতীত থাকবেই। সেই ভাবেই “ভূত বা অশরীরি” চিরন্তন সত্য। তবে তা দিদিমা ঠাকুমা বা সাহিত্যে বর্নিত কাহিনীর মতো নয়। আমরা কথা বলেছিলাম ভারতবর্ষ তথা কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত “ভূত গবেশক” ( Paranormal Investigator ) দল ডিটেক্টিভস অফ সুপার ন্যাচারাল ( Detectives of super natural ) এর অন্যতম সদস্য ডাঃ উজ্জ্বল গুপ্তের সাথে। পেশায় চিকিৎসক হলেও “ভূত গবেশনা”য় তার উৎসাহ বেশ ছোট থেকেই।।
এই মুহুর্তে Detectives of Supernatural এর তদন্তে ভরসা রাখেন বলিউড টলিউড থেকে শুরু করে কলকাতা পুলিশের দুঁদে অফিসাররাও। অবাক হলেন তো…..? হ্যা ঠিকই পড়েছেন। কলকাতা পুলিশের উত্তর কলকাতার একটি থানায় অনেক পুলিশ কর্মী অশরীরির উপস্থিতি অনুভব করছিলেন। পরবর্তীকালে Detectives of Supernatural এখানে তদন্ত করে বা বলা ভালো কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারাই এই তদন্তের অনুরোধ করেন। কি পাওয়া গেছিল তা জানতে হলে Detectives of Super Natural এর ইউটিউব চ্যানেলে গেলেই দেখতে পাবেন।
তবে আমরা ডাঃ উজ্জ্বল গুপ্তের থেকে জানতে পারি তার সাম্প্রতিক তম তদন্তের কথা। দূর্গাপুরের একটি ঘন জনবসতি পূর্ন এলাকার একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুল কে নিয়েই এই তদন্ত। ডাঃ গুপ্ত জানান, বছর সাতেক আগে এই স্কুল থেকেই তার “ভূত গবেশনা”র শুরু। বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতিতেই তাঁদের উপস্থিতি বা তাদের সাথে কথাবলা বা সম্পর্ক স্থাপন করা হয়।
ডাঃ গুপ্তের DOS এর সাথে একাধিক তদন্তের মধ্যে দূর্গাপুরের এই তদন্ত টি ছিল বেশ রোমাঞ্চকর। তিনি জানান, দূর্গাপুরের এই স্কুলটি এক সময় বেশ সচল ও ছাত্রদের কোলাহল মূখর ছিল। কিন্তু একদিন স্কুলচলাকালীন সময়েই স্কুলের পাতকুয়ার কাছে একটি ছাত্রের মৃতদেহ পাওয়া যায়। কিভাবে ঠিক মৃত্যু হয়েছিল তা পরিস্কার জানা যায়নি তবে তারপর থেকেই স্কুলে নানা রকম উপদ্রব দেখা যায়। কখনও টিচার্স রুমের দরজা কেউ বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়, আবার কখনও বা কেউ বাচ্ছাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। প্রথমদিকে বিষয়টিকে নজর আন্দাজ করলেও পরবর্তীকালে শিক্ষকদের মধ্যেও ভীতি জমতে শুরু করে এবং এক সময় স্কুলটি বন্ধ হয়েযায়।
বছর সাতেক আগে ডাঃ গুপ্ত এই স্কুলে রাতে প্রবেশ করার অনুমতি না পেলেও এবার রাতে ওই পরিত্যক্ত স্কুলে ঢোকার অনুমতি পেয়েছিলেন। এবং তদন্তে যা পেয়েছিলেন তা সত্যিই গায়ে কাঁটা দেবার মতোই।
ডাঃ গুপ্তের সাথে যান্ত্রিক মাধ্যমে সেই আত্মার সাথে যোগাযোগ স্থাপন হয়েছিল। যারা এখনও এই বিষয় টিকে অনুভব করতে পারছেন না তাদের জন্য বলব – বিজ্ঞান বলে “এনার্জী” কে ধংস্ব করা যায়না আর যদি সত্যিই অনুভব করতে চান তাহলে ভারতবর্ষের এরকম অনেক জায়গা আছে যেখানে সরকারি ভাবে নিষেধাজ্ঞা লাগানো আছে – সূর্যাস্তের সময় থেকে ভোর অবধি ওই স্থানে থাকা বা ভ্রমন নিষিদ্ধ। এমনকি পুলিশ প্রশাসন ও কাউকেই ওই সময়ে প্রবেশ করতে দেয়না। যেমন – ভানগড়, কুলধারা ইত্যাদি।
যাইহোক, এবার দূর্গাপুরের ওই পরিত্যক্ত স্কুলের অশরীরির সাথে ডাঃ গুপ্তের আলাপচারিতার মধ্যেই ইকোভক্সের মাধ্যমে ডাঃ গুপ্তকে বলল – I love you. না এটাকে নিছক প্রেম নিবেদন ভাববেন না। জানতে হলে দেখতে হবে এই ভিডিও টি।
তবে পরোলৌকিক জগতের অনেক কিছুই বাস্তব যা আমরা জানিনা বা জানতে পারিনা। হয়তো বিজ্ঞানের অজুহাতে লাভবান হবার স্বার্থেই কিছু মানুষ এই অজানা কে জানতে দিতে চান না। আত্মা বা স্পিরিট, কালাজাদু বা তন্ত্র বা অপদেবতা নিয়ে রয়েছে অনেক অজানা তথ্য যা আমাদের এই বাংলায় বা তার আশে পাশের অঞ্চলে বা…… হয়তো আপনার আশে পাশেই রয়েছে। আপনার অজান্তেই।