পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ বাঙালির রবিবার দুপুর খাসীর মাংস ছাড়া কিছুটা অচল। এছাড়া উৎসব অনুষ্ঠানের প্রধান খাদ্যের তালিকায় ঢুকে পড়েছে মটন। মটন বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য তো কোনও অনুষ্ঠানও দরকার পড়েনা। যদিও হাই প্রেসার বা কিছু অসুস্থতার কথা মাথায় রেখে মটন খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে ফেলেছেন এখন বেশিরভাগ মানুষ। তবুও মটন খাবেই না এটা হয়তো সম্ভব নয়। আর যুব সমাজ তো মটন ছাড়া ভাবতেই পারে না কিন্তু এখন মটন থেকে ছড়িয়ে পড়ছে এক বিষাক্ত অ্যালার্জি, যার কোনও ওষুধও আবিস্কার হয়নি এখনও।
বেগুন, কচু নানারকম সবজিতে বা চিংড়ি মাছে অ্যালার্জির কথা তো প্রায়ই শোনা যায়। তবে মাংসে অ্যালার্জি এটা শোনা যায়না সেভাবে। তবে আক্ষরিক অর্থেই মাংস থেকে অ্যালার্জি ছড়িয়ে পড়ে সারা দেহে। যেকোনো রেড মিট থেকেই হতে পারে এই অসুখ। এর নাম আলফা-গ্যাল সিনড্রোম। এই রোগ যাদের শরীরে বর্তমান তাদের রেড মিট খেলেই ছড়িয়ে পড়বে অ্যালার্জি। এর পিছনে দায়ী হচ্ছে লোনস্টার টিক নামে একটি ছোট্ট পোকা। মূলত দক্ষিণ পূর্ব আমেরিকাতেই দেখা পাওয়া যায় এই পোকার।
এই পোকা কামড়ালে মানুষের শরীরে আলফা-গ্যাল নামের এক চিনির অণুর প্রবেশ ঘটায়। এই অণু শরীরে থাকলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। পরবর্তী যেকোনো সময়ে রেড মিট খেলে শরীরে সক্রিয় হয়ে ওঠে এই অণু। যার ফলেই সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এই অ্যালার্জি। পরবর্তীকালে যখনই যতবারই রেড মিট খাওয়া হবে সব সময়ই একই ঘটনা ঘটবে। এই রোগের কোনও চিকিৎসা বা ওষুধ এখনও তৈরি হয়নি। তাই এই রোগীদের তখন রেড মিট খাওয়া ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকে না।
লোনস্টার টিক এমন ছোট একটি পোকা যে কামড়ালে সেই ভাবে টের পাওয়াও যায় না। তাই কার শরীরে আলফা-গ্যাল সিনড্রোম রয়েছে তা জানা যায় না। তবে চিন্তার এখনও তেমন কোনও কারণ নেই। কারণ ভারতবর্ষে এখনও এই পোকার বা এই রোগের সন্ধান পাওয়া যায়নি।