পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ রথযাত্রা জগন্নাথ দেবকে কেন্দ্র করে পালিত হওয়া এক উৎসব। ওড়িশা বাসীর কাছে সবথেকে আনন্দের উৎসব এটি। বাঙালি তথা সাড়া ভারত থেকে বহু মানুষ এই রথের দিন পুরী গিয়ে উপস্থিত হয়। কিন্তু বাঙালির কাছে রথের দিন শুধু মাত্র রথ উৎসব নয় রথ মানে শুভসূচনা রথ মানে দিনগোনা শুরু।
বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রথ অনুষ্ঠিত হয় আষাঢ় মাসে এবং দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয় আশ্বিন মাসে। কিন্তু রথ থেকেই বাঙালির বছর বা পুজো শুরু হয়ে যাওয়া। রথের দিন খুঁটি পুজো দিয়েই পুজোর সূচনা হয়। দুর্গাপূজো বাঙালির রক্তে মিশে আছে। তাই সেই উৎসবের আরম্ভের ঘণ্টা বাজে বলেই বোধহয় রথযাত্রা বাঙালির কাছে খুব কাছের।
মা দুর্গা বাঙালির কাছে দেবী বা ভগবান নয় সে নিজের মা ঘরের মেয়ে। ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরলে আনন্দ তো সবার তাই। বাঙালি সারাবছর অপেক্ষা করে থাকে এই পাঁচটা দিনের জন্য। না শুধু আনন্দ নয় পুজোর একটা বড় বিশেষত্ব হল এই সব ধনী থেকে গরীব সকলের জীবিকা ক্ষেত্রে আসে এক নতুন উদ্দ্যম। পুজোর আগে জমিয়ে শপিং শুরু করে মানুষজন। আবার কিছু মানুষ পুজোর সময়কার উপার্জন টুকু দিয়ে পুজোর পর প্রয়োজনীয় পোশাক বা দরকারি জিনিস টুকু কিনে নেন। তাই রথের দিন থেকেই শুরু হয় সমস্ত প্রস্তুতি।
কুমোরটুলির মানুষজন, ঢাকি, ঠাকুর বাহক, রাস্তায় হঠাৎ একটা কাপড় দিয়ে ঘেরা রোলের দোকানী বা হাতে করে বেলুন বিক্রি করা বস্তির বাচ্চাটা এদের সকলের কাছে পুজোর থেকে আনন্দের আর কি আছে? অন্যান্যদের আনন্দের থেকে এদের আনন্দ একটু অন্যরকম, ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরে এদের মুখের হাসিটুকু ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। বাকি সকল মানুষের থেকে এদের কাছে পুজোর গুরুত্ব সবথেকে বেশি। সেই প্রতিটা মানুষের হাসির শুরু আজ থেকেই। কোন উৎসবের এর থেকে বড় স্বার্থকতা বোধহয় আর কিছু হতে পারেনা।