দক্ষিন কলকাতার মধ্যে ব্যাস্ততম পথ গুলির অন্যতম হল ডায়মন্ড হাড়বার রোড যাকে অনেকেই ডি এইচ রোড বলে থাকেন। আর এই ডি এইচ রোডের সব থেকে ঘনজনবসতি পূর্ন ও দূর্ঘটনা প্রবন জায়গাটি শুরু ঠিক ঠাকুরপুকুর থেকে শুরু করে তারাতলার মোড় পর্যন্ত। কারন এর মধ্যেই রাস্তার দুপাশে রয়েছে অসংখ্য দোকান বাজার যা ফুটপাথ ছেড়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে। তারাতলা থেকে ঠাকুরপুকুরের মধ্য সব থেকে ভয়ঙ্কর বা দূর্ঘটনা প্রবন দুটি ক্রসিং হল তারাতলার মোড় ও চৌরাস্তার মোড়। সুর্যাস্তের শুরু থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলাচল করে ভারি যানবাহন ও তার সাথে থাকে সাধারন মানুষের ভীড়।
ঠিক তারাতলা মোড় থেকেই ঠাকুরপুকুর অবধি ভারি যানবাহনের সাথে পাল্লাদিয়ে চলে অসংখ্য অটো। আর এই অটো গুলি নাকি বেশিরভাগই বেআইনি বলে আগেই স্থানীয় মানুষের অভিযোগ আছে। আজকের দূর্ঘটনার পরেই বেহালার চৌরাস্তা হয়ে ওঠে রনক্ষেত্র। না বেহালাবাসীর কাছে এই দূর্ঘটনা নতুন কিছুনা তবে ফুটফুটে একটি শিশুর মৃত্যুতে তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেগেছে। কারন প্রতিদিনই এই তারাতলার মোড় থেকে বেহালা ঠাকুরপুকুর অবধি দূরঘটনা ঘটে সাথে প্রানহানীও হয়। তবে সব দূর্ঘটনায় মানুষ ক্ষিপ্তহন না আর খবরও হয়না। তারাতলার মোড়, চৌরাস্তা মোড় ও ঠাকুরপুকুর বাজার ক্রসিংএ সব সময় পুলিশ যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করলেও স্থানীয় মানুষের অভিযোগ ট্রাফিক পুলিশের অবহেলাতেই এই দূর্ঘটনা ঘটে। সরকারি ভাবে রাস্তার সম্প্রসারন হলেও বেহালার এই রাস্তাটিকে কখনই হকার মুক্ত করা যায়নি। ফলত বেপরোয়া অটো, লড়ি আর বাস গুলির নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক রেষারেষির ফলে প্রতিদিনই ঘটে দূর্ঘটনা।
আজ সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ, দ্বিতীয় শ্রেনীর একটি ক্ষুদে ছাত্র তার বাবার সাইকেলে চেপে স্কুলে যাবার পথে, ঠিক বেহালা চৌরাস্তা ক্রসিংএ পিছন থেকে একটি লড়ি ধাক্কা মারে। তীব্রগতি বেগে ধাক্কা মারার ফলে বাবা ও ছেলে দুজনেই সাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন রাস্তায়। সুত্রের খবর অনুযায়ী ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়
এবং শিশুটির বাবা কে স্থানীয় পথচারীরা দ্রুত বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। এরপরেই জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশের গাড়ীসহ বেশ কয়েকটি সরকারি বাস ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে নামে স্পেশাল কমব্যাট বাহিনীও। ঘাতক লড়িটি পালিয়ে গেলেও সিসিটিভি দেখে হাওড়া থেকে লড়িটিকে পুলিশ আটক করেছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। শুরু হয়েছে আবার স্বাভাবিক যানচলাচল। শুধু চলেগেল দুটি তরতাজা প্রান। এক মুহুর্তে এক নারী হলেন স্বামী ও সন্তানহারা। তবে মানুষের জীবন এখন ক্রমেই মূল্যহীন হয়ে উঠছে।