পর্ণা চ্যাটার্জী, কলকাতাঃ বিশ্বে যত ভাষা আছে সব ভাষার সাহিত্যেই কমবেশি গোয়েন্দা গল্প রয়েছে। গোয়েন্দা গল্পের জনপ্রিয়তা সব সাহিত্যেই খুব বেশি। বাংলা সাহিত্যে তো প্রখ্যাত গোয়েন্দার অভাব নেই। নারী পুরুষ নির্বিশেষে বাংলায় অসংখ্য গোয়েন্দা চরিত্র রয়েছে। এমনকি বয়সের সীমারেখা অতিক্রম করেও তৈরি হয়েছে গোয়েন্দা চরিত্র। ফেলুদা, ব্যোমকেশের পাশাপাশি কিরীটী রায়, শবর, একেন বাবু, মিতিন মাসি, অর্জুন, গোগল, পাণ্ডব গোয়েন্দা আরও কত শত নাম। বাংলায় গোয়েন্দা কাহিনীতে প্রায়ই গোয়েন্দাদের ‘টিকটিকি’ বলে সম্বোধন করা হয়।

টিকটিকির স্বভাব সকলেই জানে। শিকার ধরার জন্য টিকটিকির মত একটা নিরীহ প্রাণীও নিশ্চল ওঁত পেতে থাকে। সময় বুঝে শিকারের ওপর অতর্কিতে ঝাপিয়ে পড়ে। তাই টিকটিকির মত সুক্ষ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা অন্য কোনও প্রাণীর নেই।

টিকটিকি জানে শিকারের সমস্ত খুঁটিনাটি ভালো করে না জানলে হবে না। তেমনই একজন ভালো গোয়েন্দারও এই সুক্ষ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা থাকা খুব প্রয়োজন। অপরপক্ষের সমস্ত খবর ভালো ভাবে জেনে না নিলে সঠিক কাজ করা সম্ভব নয়। গোয়েন্দারা টিকটিকির মত দেওয়ালে কান পেতে হলেও রহস্যভেদ করে। তাই গোয়েন্দাদের টিকটিকি বলা হয়। এটা ব্যঙ্গাত্মক ভাবেও যেমন বলা হয় তেমনই এটা কিন্তু গোয়েন্দাদের প্রশংসাও বলা যেতে পারে।

এছাড়াও গোয়েন্দার ইংরেজি প্রতিশব্দ ডিটেকটিভ শব্দের সাথে টিকটিকি শব্দের একটা ধ্বনিগত মিলও রয়েছে। ব্রিটিশ ইংরেজিতে টিক (tec) হল ডিটেকটিভ (detective) শব্দের সংক্ষিপ্ত কথ্য রূপ। তাই অনেকের মতে সেই শব্দের বঙ্গীকরণ করতে গিয়ে টিকটিকি শব্দটি ব্যবহার করেন কাহিনীকার। যদিও এই কথার কোনও সত্যতা বা প্রমান নেই। তবে যে অর্থেই ব্যবহার করা হোক না কেন তা যে গোয়েন্দাদের প্রখর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা এবং দূরদর্শিতাকে প্রশংসা করেই বলা হয় সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।