দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলস “শারদ সুন্দরী ২০২৩” (Season – 1) এর গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত ১৪ই অক্টোবর, শনিবার, মহালয়ার সন্ধ্যায়। এদিন দুপুর থেকেই নাগের বাজারের অজিতেশ মঞ্চে ছিল চোখে পড়ার মতো ভীড়। বেশীর ভাগটাই ছিল শারদ সুন্দরীর প্রতিযোগীদের অবিভাবক ও জন্মাষ্টমীতে বিজয়ী ছোট্ট ছোট্ প্রতিযোগীদের ভীড়।
এছাড়াও এদিন সমাজের বিশিষ্ট ছয়জন মহিলা কে দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলস, সমাজে তাদের বিশেষ অবদানের জন্য “অন্যনা সম্মান” এ সম্মানিত করেন।
এদিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট শিল্পপতি শ্রী দেবরাজ রায়চাঁদ, বরিষ্ঠ সাংবাদিক জে সাগর, বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার ইরানী মিত্র, রিসার্চার, লেখিকা ও ফিল্ম মেকার রুপালি সরকার, দুধ পিঠের গাছ খ্যাত চিত্র পরিচালক উজ্বল বসু, ডিটেকটিভস্ অফ সুপার ন্যাচরালের অন্যতম সদস্য ডাঃ উজ্জল গুপ্ত ও অভিনেতা মৃত্যঞ্জয় নাথ।
দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলস আয়োজিত “শারদ সুন্দরী ২০২৩” শুরু হয়েছিল প্রায় তিন মাস আগে। গ্রুমিং এর দায়িত্বে ছিলেন কলকাতার ফ্যাশন জগতের প্রখ্যাত মডেল সিলভিয়া সাহা।
একেবারেই অন্য ধারার এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্যে ছিল – শারীরিক নয়, হৃদয়ের সৌন্দর্য্য কেই প্রাধান্য দেওয়া। তাই এখানে বয়সের, উচ্চতা বা মোটা বা রোগা ইত্যাদি মাপদন্ডের কোন পরিসীমা ছিলনা। প্রথম থেকেই পরিবেশ ছিল পারিবারিক। ফলত প্রতিযোগীরা সবাই নির্ধিধায় গ্রুমিং করতে পেরেছিলেন।
সকলেই একে অপরের খুব কাছের বন্ধু বা আত্মীয় হয়ে উঠেছিলেন। সব মিলিয়ে প্রতিযোগী সংখ্যা ছিল ৩২ জন। সকলকেই ফাইনালের মূলপর্ব অবধি আনা হয়েছিল। সেখান থেকে প্রথমে সেরা দশ অর্থাৎ পাঁচজন সেরা মিস ও পাঁচজন সেরা মিসেস কে বেছেনেন বিচারকরা। এরপরেই শুর হয় জটিল প্রশ্ন উত্তরের উত্তজনাপূর্ন রাউন্ড। আর সেখান থেকেই বিচারকরা বেছেনেন বিজয়ীদের।
দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলস শারদ সুন্দরী ২০২৩ এর মিসেস বা শ্রীমতী দের মধ্য প্রথম স্থান অর্জন করেন শ্রীমতী সোমাশ্রী দাস, একেবারেই মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারের সাধারন গৃহবধু নিজের নাম প্রথম বিজয়ী ঘোষনা হবার সাথে সাথেই মঞ্চেই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন সৃজনী দাম ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন ডা. অন্তরা ভদ্র। এরপরেই ঘোষনা হয় মিস শারদ সুন্দরী ২০২৩ এর বিজয়ীদের নাম। প্রথম স্থান অর্জন করেন আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে আসা সোহিনী মান্ডি, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন প্রতীক্ষা সরকার আর তৃতীয় স্থান অর্জন করেন নেহা ঘোষ।
বাংলার বুকে এই প্রথমবার কোন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মেয়ে সুন্দরী প্রতিযোগীতায় প্রথম স্থান অর্জন করে ইতিহাস রচনা করলো। সোহিনী মান্ডির নাম ঘোষনা হবার সাথে সাথেই বাংলার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে মিষ্টি মুখ করানোর উৎসব শুরু হয়ে যায়।
এছাড়াও এদিন অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন বিশেষ ভাবে সক্ষম ও দৃষ্টিহীন সঙ্গীতশিল্পী শিবানী ঘোষ। যার সমধুর সঙ্গীত পরিবেশনায় সকল দর্শক মোহিত হয়ে পড়েন। প্রাক্তন জী নেটওয়ার্কের বরিষ্ঠ সাংবাদিক জে সাগর, শিবানীর যাতে গান কোন বিখ্যাত মিউজিক কোম্পানী থেকে রেকর্ড হয় সেই ব্যাবস্থা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
এছাড়া শারদ সুন্দরীর সেরা পাঁচ প্রতিযোগীদের বিভিন্ন বিনোদন জগতে অভিনয়ের সুযোগ করে দেবারও প্রতিশ্রুতি দেন। নাচ গান কবিতা নৃত্য সব মিলিয়ে এদিন অনুষ্ঠান ছিল নক্ষত্র খচিত ও জমজমাট।
দ্যা ইন্ডিয়ান ক্রনিকেলস থেকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েচে আবার আগামী বছর শারদ সুন্দরী আয়োজন করা হবে তবে আসন্ন শীতকালে নতুন একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতে পারে।