সব মিলিয়ে সরস্বতী পুজো শুধুই বিদ্যার দেবীর আরাধনা নয়, এটি ভালোবাসারও এক রঙিন উৎসব!
শহরের প্রাণকেন্দ্র কুমারটুলি এখন ব্যস্ততার চূড়ান্ত পর্যায়ে। সরস্বতী পুজো আসতে আর মাত্র একদিন বাকি, তাই মৃৎশিল্পীদের ঘরে এখন শেষ মুহূর্তের তোরজোড়। একের পর এক প্রতিমা রঙের ছোঁয়ায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে। শিল্পীদের চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ থাকলেও, তাদের হাতের তুলির টানেই দেবীর রূপ ফুটে উঠছে অপূর্ব মাধুর্যে। কেউ প্রতিমার চোখ আঁকছেন, কেউ বা অলংকারের কাজ শেষ করছেন। কুমারটুলির গলিতে গলিতে প্রতিমার সারি, যেন বিদ্যার দেবী নিজেই এই শহরের আনাচে-কানাচে বিস্তার করছেন তাঁর ঐশ্বর্য।

বিদ্যালয় ও কলেজ চত্বরে সাজসাজ রব। সরস্বতী পুজো মানেই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এক বিশেষ দিন। প্যান্ডেল সাজানো থেকে প্রতিমা বসানো, অঞ্জলির আয়োজন থেকে প্রসাদ বিতরণ—সবকিছুতেই ব্যস্ত তারা। ধুতি-পাঞ্জাবি আর হলুদ শাড়িতে সেজে উঠবে সকলে, ক্যাম্পাস জুড়ে থাকবে উৎসবের আমেজ।

এই উৎসবের আরেকটি বিশেষ দিক হলো প্রেম। সরস্বতী পুজোকে অনেকেই “বাংলার ভ্যালেন্টাইনস ডে” বলে থাকেন। নবম-দশম শ্রেণির উচ্ছ্বাস, কলেজ পড়ুয়াদের মুগ্ধ দৃষ্টি—সব মিলিয়ে পুজোর দিনটিকে প্রেমের রঙে রাঙিয়ে তোলে। কেউ হয়তো প্রথমবার তার মনের মানুষকে ভালোবাসার কথা বলবে, কেউ হয়তো দীর্ঘদিনের বন্ধু হয়ে উঠবে বিশেষ। অঞ্জলির ফুল দেওয়া মানেই যেন একসঙ্গে পথচলার অঙ্গীকার!

শহরের বাতাসে মিশে থাকবে মন্ত্রোচ্চারণ, ধূপের গন্ধ, আর এক টুকরো শৈশব-যৌবনের স্মৃতি। দেবীর আরাধনার সঙ্গে সঙ্গে সারা শহর জুড়ে প্রেমও যেন এক নতুন ভাষা খুঁজে পায়। সরস্বতী পুজোর সকালে শুরু হওয়া এই আনন্দ-উৎসব সন্ধ্যার আলোয় প্রেমের গানে, গল্পে, আড্ডায় নতুন রূপ নেয়।

তাই, কুমারটুলির শিল্পী, ছাত্র-ছাত্রীদের আয়োজন, আর তার সঙ্গে প্রেমের মিষ্টি অনুভূতি—সব মিলিয়ে সরস্বতী পুজো শুধুই বিদ্যার দেবীর আরাধনা নয়, এটি ভালোবাসারও এক রঙিন উৎসব!