কলকাতা: রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি রুখতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নতুন একটি বিল আনতে চলেছে। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, অভিভাবকদের আর্থিক চাপ কমাতে এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চলেছে।
কেন এই বিল আনা হচ্ছে?
সম্প্রতি দেখা গেছে, বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলে ফি বৃদ্ধির হার অত্যন্ত বেশি, যা মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত অভিভাবকদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বারবার অভিযোগ উঠছে যে, কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়া স্কুলগুলি বেতন বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সরকার উদ্যোগী হয়ে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করতে চলেছে, যা স্কুলগুলির ফি কাঠামো নিয়ন্ত্রণ করবে।

ব্রাত্য বসুর বক্তব্য
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, “আমরা চাই না শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করা হোক। প্রতিটি শিশুর শিক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং সেটিকে নিশ্চিত করতে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে। নতুন আইনের মাধ্যমে স্কুলগুলির স্বেচ্ছাচারী ফি বৃদ্ধি রোধ করা হবে।”
বিলের প্রধান বৈশিষ্ট্য:
✔ ফি নিয়ন্ত্রণ কমিটি: প্রতিটি স্কুলের ফি বৃদ্ধির জন্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে।
✔ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি: স্কুলগুলিকে তাদের ব্যয়ের হিসাব পেশ করতে হবে।
✔ অভিভাবকদের স্বার্থরক্ষা: অতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনীয় চার্জ আরোপ বন্ধ করা হবে।
✔ শাস্তির ব্যবস্থা: নতুন আইনের লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া
অনেক অভিভাবকই সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, এতদিন ধরে স্কুলগুলি নিজেদের ইচ্ছেমতো ফি বৃদ্ধি করত, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। নতুন আইন বাস্তবায়িত হলে শিক্ষাক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ পরিবেশ তৈরি হবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের মতামত
তবে কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে, যদি সরকারের নিয়ন্ত্রণ অতিরিক্ত কঠোর হয়, তবে স্কুলগুলির মান বজায় রাখা কঠিন হতে পারে। তাঁরা চাইছেন, সরকার ও স্কুলগুলির মধ্যে সমঝোতা করে একটি যৌক্তিক সমাধান বের করা হোক।
শিক্ষাক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার জন্য এই নতুন আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে এটি কতটা কার্যকর হবে এবং অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় বজায় থাকবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আপনার মতামত কী? আপনি কি মনে করেন এই পদক্ষেপ অভিভাবকদের স্বার্থরক্ষা করবে? কমেন্টে জানান!