পশ্চিমবঙ্গের তথ্য কমিশনার নিয়োগ নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বয়কট করে বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট করেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠক থেকে বিজেপির ইচ্ছাকৃত দূরত্ব
১৯ মার্চ, ২০২৫ তারিখে তথ্য কমিশনার নিয়োগের জন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। নিয়ম অনুযায়ী, এই বৈঠকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও থাকার কথা ছিল। তবে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতির কারণ দেখিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দিতে অস্বীকার করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারীর এই পদক্ষেপ আসলে বিজেপির পূর্বপরিকল্পিত একটি রাজনৈতিক চাল। তারা নিজেদের অনুপস্থিতির মাধ্যমে পরবর্তীতে এই নিয়োগকে ‘একপাক্ষিক’ বলে প্রচার করতে চাইছে।
বিজেপির পুরনো কৌশল: দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো
এর আগেও, ২০২৩ সালে রাজ্যের মুখ্য তথ্য কমিশনার পদে নিয়োগের সময় শুভেন্দু অধিকারী একই ধরনের নাটক করেছিলেন। তখনও তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে, যদিও পরে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।

বিজেপির এই কৌশল নতুন নয়। সংসদে গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশের সময় হোক বা রাজ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপার, বিজেপি বারবার বৈঠক থেকে দূরে থেকে পরে দোষারোপের রাজনীতি চালিয়ে গেছে।
তৃণমূলের কটাক্ষ: বিজেপির “ড্রামাবাজি”
বিজেপির এই বয়কটের সিদ্ধান্তের পর তৃণমূল কংগ্রেস কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছে। রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “বিজেপি জানে যে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, তাই ইচ্ছাকৃতভাবে বয়কট করে পরবর্তীতে ভিত্তিহীন অভিযোগ করার জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করছে।”
অন্যদিকে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি রাজ্যে শুধু নাটক করছে। বৈঠকে না গিয়ে, আবার সেই নিয়োগ নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করা বিজেপির নতুন চাল।”
উপসংহার
রাজ্যের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলোর ক্ষেত্রে বিজেপির বারবার দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া এবং পরে তা নিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করা এক চেনা ছক হয়ে উঠেছে। শুভেন্দু অধিকারীর এই অনুপস্থিতি তারই একটি অংশ। তবে তৃণমূল সরকার নিয়ম মেনে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তথ্য কমিশনার নিয়োগ করেছে, যা রাজ্যের স্বার্থে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ