অযোধ্যার মুমতাজ নগরে দশকের পর দশক ধরে রামলীলার আয়োজন করে চলেছেন এক মুসলিম চিকিৎসক। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির এই ব্যতিক্রমী উদাহরণ আজ দেশের সামনে এক শান্তির বার্তা।

নিজস্ব সংবাদদাতা | অযোধ্যা
অযোধ্যার নাম শুনলেই অনেকের মনে ভেসে ওঠে সংঘর্ষ, বিভাজন আর উত্তেজনার চিত্র। কিন্তু সেই একই শহরে, সম্প্রীতির নিঃশব্দ দীপ জ্বালিয়ে রেখেছেন একজন মুসলিম চিকিৎসক — ডা. সৈয়দ মজিদ আলি।
মুমতাজ নগর এলাকায় তাঁর বাড়ি। পেশায় চিকিৎসক হলেও, প্রতি বছর তিনিই নিজ উদ্যোগে আয়োজন করে থাকেন রামলীলা। শুধু তাই নয়, গত প্রায় ৬০ বছর ধরে তাঁর পরিবার এই রীতিকে ধরে রেখেছে — শুরু করেছিলেন তাঁর বাবা ১৯৬৩ সালে।
“আমার বাবা বলতেন, যদি আমরা সত্যিকারের ভক্তি, ভালোবাসা আর সৌহার্দ্য বিশ্বাস করি, তাহলে ধর্ম বাধা হয়ে দাঁড়াবে না,” বলেন ডা. মজিদ। “আমি চেষ্টা করি সেই বিশ্বাসকে জীবিত রাখতে।”
এই রামলীলায় মুমতাজ নগরের হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই অংশগ্রহণ করেন। প্রায় ১১০০ জনের মধ্যে ৮০০ জনই মুসলিম, তবুও কোনও ধর্মীয় বিভেদ ছাড়াই এখানে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।

বিশেষ দিকগুলো:
প্রায় ৬০ বছরের ঐতিহ্য: ১৯৬৩ সালে শুরু, আজও চালু
হিন্দু-মুসলিম যৌথ অংশগ্রহণ: মঞ্চ নির্মাণ, আলো, আবহসঙ্গীতে মুসলিমদের সক্রিয় ভূমিকা
ধর্মীয় সংবেদনশীলতা বজায় রেখে চরিত্র বাছাই: হিন্দু শিল্পীরা অভিনয় করেন রাম-লক্ষ্মণ চরিত্রে
সম্প্রীতির বার্তা: কোনও সংঘর্ষ বা বিতর্ক নয়, উৎসব হয় মিলেমিশে
এই বছর যখন দেশের নানা প্রান্তে রাম নবমীকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে, তখন ডা. মজিদের শান্তির বার্তা যেন আশার আলো।
এই আয়োজন শুধু একটি নাটক নয়, বরং এটি একটি বার্তা — যেখানে ধর্ম নয়, মানুষের হৃদয় বড় কথা।

এইটাই আসল অযোধ্যা, যেখানে রাম-রহিম একসাথে উৎসব করেন।