আজকের ভারতে একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে, যারা হাতের মুঠোয় ইন্টারনেট নিয়ে বেড়ে উঠছে। তাদের নায়ক-নায়িকা আর সিনেমার চরিত্র নয়, বরং ইনস্টাগ্রাম রিলের ভাইরাল ‘জ্যোতি’-রা। এই অদ্ভুত ডিজিটাল চর্চার পেছনে রয়েছে এক ভয়ঙ্কর বাস্তবতা—জাতীয় নিরাপত্তা, সামাজিক মূল্যবোধ, ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধ্বংস।
ভাইরাল কনটেন্ট না কি সাইবার যুদ্ধ?
“জ্যোতি”-দের উত্থান নিছকই মজা বা বিনোদনের জন্য নয়। এর পেছনে রয়েছে এক অদৃশ্য গ্লোবাল ইকোসিস্টেম, যেখানে বিদেশি সামাজিক মাধ্যমগুলি আমাদের দেশের সার্ভার ব্যবহার করে আমাদের মন-মানসিকতা ও আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এই তথ্য আমাদের দেশের বাইরেই সঞ্চিত হচ্ছে। আজকের ‘রিল’ ভবিষ্যতের ‘ডেটা মাইন’।
কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকাঃ সুবিধা না সর্বনাশ?
সামাজিক মাধ্যমগুলিকে প্রায় পুরোপুরি ‘ফ্রি-পাস’ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ এই মাধ্যমগুলিই দেশবিরোধী কার্যকলাপ, পর্নোগ্রাফিক কনটেন্ট এবং বিভিন্ন ধরনের মস্তিষ্কপ্রণালী নিয়ন্ত্রণকারী এআই অ্যালগরিদমকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। দেশের তথ্য, মানসিকতা এবং সমাজব্যবস্থাকে দিনের পর দিন দুর্বল করে তোলা হচ্ছে।
ডিজিটাল বেশ্যাবৃত্তি – এক নতুন সমাজব্যাধি
কনটেন্টের নামে চলছে শরীর প্রদর্শনের বণিকবৃত্তি। “ভিউস” আর “ফলোয়ার”-এর লোভে যুবসমাজ নিজেদের মর্যাদা বিসর্জন দিয়ে দিচ্ছে। এসব ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে ১০ বছর বয়সী শিশুর ফোনেও।
এই প্রবণতা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যৌনতা যেন হয়ে উঠেছে বিনোদনের নতুন সংজ্ঞা। অথচ মূল্যবোধ, চিন্তাশক্তি, মননের বিকাশ কোথাও নেই।
সমাজ কোন পথে?
এই রিল-সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে এক ভয়ঙ্কর অস্তিত্ব সংকটে। পরিবার, শিক্ষা, ও নৈতিকতার যে ভিত্তি আমাদের গর্বের জায়গা ছিল, আজ তা রীতিমতো ভেঙে পড়ছে।
এটাই সময় প্রশ্ন তোলার—কে ঠিক করছে আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ? কেন এই সামাজিক মাধ্যমগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না? আমরা কি নিজেরাই নিজেদের সর্বনাশের পথ তৈরি করছি?
দেশের সরকার, সমাজ এবং সচেতন নাগরিকদের একসঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে। নয়তো আগামী প্রজন্ম এক এমন ভার্চুয়াল জগতে হারিয়ে যাবে, যেখান থেকে আর ফেরার পথ থাকবে না।