পুরী জগন্নাথ মন্দির হিন্দু ধর্মের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান। শতাব্দীপ্রাচীন এই মন্দির শুধুমাত্র ধর্ম নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও প্রতীক। এই ঐতিহ্য ও ভক্তদের অনুভূতি রক্ষা করতেই এবার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে ওড়িশা সরকার। তারা ‘জগন্নাথ ধাম’, ‘মহাপ্রসাদ’, ‘রথযাত্রা’, এমনকি মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত প্রতীক ও নামগুলিকে ট্রেডমার্ক বা পেটেন্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করছে।

এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য, মন্দিরের নাম ও ভাবমূর্তিকে বাণিজ্যিকভাবে অপব্যবহার থেকে রক্ষা করা।
ওড়িশা সরকারের মুখপাত্রদের মতে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পণ্য তাদের বিজ্ঞাপন ও ব্যবসার স্বার্থে এই নামগুলি ব্যবহার করছে। এতে মন্দিরের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, এবং ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত লাগছে।
পুরীর গজপতি রাজা দিব্যসিংহ দেব এই পদক্ষেপের সমর্থনে জানিয়েছেন, “জগন্নাথ ধাম বলতে শুধুমাত্র পুরীকেই বোঝায়। এই শব্দের অনধিকার ব্যবহার ভক্তদের বিশ্বাসে আঘাত করে।”
এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে সাম্প্রতিক একটি বিতর্ক, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় তৈরি নতুন জগন্নাথ মন্দিরকে ‘জগন্নাথ ধাম’ বলা হচ্ছিল। ওড়িশার বহু হিন্দু ভক্ত এই নিয়ে আপত্তি জানান।
আইনি দৃষ্টিকোণ:

ওড়িশা সরকার এই বিষয়ে একাধিক ট্রেডমার্ক অ্যাপ্লিকেশন জমা দিতে চলেছে। যা ভারতীয় ট্রেডমার্ক আইন ১৯৯৯ অনুযায়ী নাম, প্রতীক ও ধারণাকে আইনি সুরক্ষা প্রদান করবে। অনুমতি ছাড়া কেউ যদি এই শব্দ বা প্রতীক ব্যবহার করে, তাহলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সামাজিক গুরুত্ব:
পুরী জগন্নাথ মন্দির কেবল একটি তীর্থ নয় — এটি সংস্কৃতি, রীতি, ইতিহাস ও মানুষের বিশ্বাসের কেন্দ্র। তাই এর নাম ও প্রতীক শুধুমাত্র ভক্তির জায়গা নয়, ঐতিহ্যের অংশও বটে। এই ট্রেডমার্ক উদ্যোগ সেই ঐতিহ্য রক্ষার দিকেই এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।