বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কাছারিবাড়িতে দুষ্কৃতীদের হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে বাংলাদেশের সরকারের কাছে কড়া বার্তা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

১১ জুন ২০২৫ তারিখে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী “কাছারিবাড়ি”–তে ঘটে এক নিন্দনীয় ঘটনা। স্থানীয়দের সঙ্গে একটি পার্কিং ফি নিয়ে শুরু হওয়া তর্ক মুহূর্তে হিংসাত্মক আকার নেয়। এরপরই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহাসিক আবাসস্থলের জানালা-দরজা, অফিস কক্ষ ও মিলনায়তনে চলে ভাঙচুর। বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি এমন আচরণে ক্ষুব্ধ দুই বাংলার নাগরিক সমাজ।

📩 মমতার চিঠির মূল বক্তব্য:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন—
“এই বাড়িটি শুধু বাঙালির নয়, বিশ্বের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই ধরনের হামলা অসভ্যতার পরিচয় বহন করে।”
তিনি চিঠিতে তিনটি প্রধান অনুরোধ জানিয়েছেন:
- বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনা করা।
- এই ঘটনার দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করা।
- এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক স্তরে কড়া বার্তা দেওয়া।

🗣️ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মহলের প্রতিক্রিয়া:
- BJP–র মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। সংস্কৃতি ও চেতনাকে আঘাত করা হয়েছে। এই ঘটনার বিরুদ্ধে গোটা দেশের প্রতিবাদ জানানো উচিত।”
- বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও সাহিত্যিক মহলের মত, “রবীন্দ্রনাথ আমাদের সাংস্কৃতিক আত্মার প্রতীক। এমন স্থানে হামলা মানে পুরো জাতির অপমান।”
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া:
বাংলাদেশ প্রশাসন ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং ঘটনাস্থলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে। তারা জানিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
📷 সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর এমন আঘাত কেন গুরুত্বপূর্ণ?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু একজন কবি বা সাহিত্যিক নন; তিনি দুই বাংলার আত্মিক বন্ধনের প্রতীক। তাঁর সাহিত্য, সংগীত ও দর্শন আজও দুই দেশের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে আছে। কাছারিবাড়িতে ‘বৌঠাকুরানীর হাট’, ‘শেষের কবিতা’-র মত বহু সাহিত্যকর্ম রচিত হয়েছিল। এমন একটি ঐতিহ্যবাহী স্থানে হামলা শুধু স্থাপত্য নয়, বাঙালি আত্মপরিচয়ের উপর আঘাত।