🔹 পরিবর্তনের ঝড় পুলিশ ব্যবস্থায় — Zero FIR নিয়ে নতুন SOP
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সম্প্রতি এমন এক নির্দেশিকা জারি করেছে, যা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তন আনছে। এখন থেকে আর ‘কোন থানার অধীনস্থ এলাকা’ সেই হিসেব করে FIR করার প্রয়োজন নেই। যে কোনও থানায় গিয়ে, বিশেষ করে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে, Zero FIR করা যাবে।

কী এই Zero FIR?
Zero FIR হল এমন একটি অভিযোগ যা আপনি নিজ এলাকার বাইরেও দায়ের করতে পারেন। অর্থাৎ, অপরাধ যেখানেই ঘটুক না কেন, আপনি নিকটবর্তী থানায় গিয়ে FIR করতে পারবেন এবং সেই থানাই দায়বদ্ধ থাকবে FIR গ্রহণের জন্য। এরপর যথাযথ থানা বা তদন্তকারী সংস্থায় সেটি পাঠানো হবে।
📄 SOP অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি:
✅ FIR গ্রহণে বাধ্যতামূলক নিয়ম:
- মৌখিক, লিখিত বা ইমেল—যেকোনোভাবে অভিযোগ আসলেই থানাকে তা গ্রহণ করতে হবে।
- অভিযোগকারীর সই নিয়ে ৩ দিনের মধ্যে GD-তে রেকর্ড করতে হবে।
- অভিযোগকারীকে বিনামূল্যে FIR-এর কপি দিতে হবে।
✅ Zero FIR হস্তান্তরের সময়সীমা:
- একই রাজ্যে হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠাতে হবে।
- অন্য রাজ্যে হলে সময়সীমা ৪৮ ঘণ্টা।
- FIR পাঠানোর পর অভিযোগকারীকে জানাতে হবে স্থানান্তরের বিবরণ।
✅ স্পর্শকাতর ক্ষেত্রে:
ধর্ষণ, শিশু নিগ্রহ বা মহিলাদের উপর সহিংসতার ক্ষেত্রে পুলিশের ওপর মেডিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
✅ SOP লঙ্ঘনে শাস্তির ব্যবস্থা:
কোনো পুলিশ অফিসার যদি “জুরিসডিকশন নেই” এই অজুহাতে FIR নিতে অস্বীকার করেন, তবে তা BNSS-173 অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য হবে। সেই অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
🔎 কেন এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ?
- 🔹 সাধারণ মানুষের হয়রানি কমবে — FIR ফেলার আগে “আপনার এলাকা নয়” বলে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ হবে।
- 🔹 বিচার প্রক্রিয়া হবে দ্রুত ও স্বচ্ছ।
- 🔹 নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
- 🔹 পুলিশি জবাবদিহিতা ও নাগরিক আস্থা বাড়বে।
🏛️ প্রতিটি থানায় রাখা হবে ‘Zero FIR রেজিস্টার’
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সমস্ত থানায় এখন থেকে রাখা হবে একটি ‘Zero FIR Conversion Register’। এতে FIR জমা, স্থানান্তর, সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ ও পরবর্তী তদন্তের আপডেট লিপিবদ্ধ থাকবে।
📣 পুলিশের বার্তা জনগণকে
একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে FIR করতে গেলে থানার এলাকা বা জুরিসডিকশন নিয়ে আর ভাবতে হবে না। নাগরিক অধিকার রক্ষার এই পদক্ষেপ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।