তারক হরি | বিশেষ প্রতিবেদন | The Indian Chronicles
সুন্দরবনের ঢেউয়ের মতোই এবার দিঘা ঘিরে বাড়ছে ভক্তির উন্মাদনা। সম্প্রতি নির্মিত জগন্নাথ মন্দির পর্যটকদের কাছে যেমন এক নতুন তীর্থস্থান, তেমনি ধর্মীয় পরিবেশেও এনেছে এক অনন্য আবহ। কিন্তু সেই আবহেই দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। গর্ভগৃহে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ, ছবি তোলা, ভিডিও করা—সব মিলিয়ে পুজো-অর্চনা কার্যত ব্যাহত হচ্ছিল। আর এবার সেই বিশৃঙ্খলার রাশ টানতে দিঘা জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসন জারি করল কড়া নির্দেশিকা।

নতুন নিয়ম কী?
জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ নিয়ম ভাঙলে, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিভিক ভলান্টিয়ার, পুলিশ এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলিকে ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে কড়া নির্দেশ।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
প্রতিদিন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে হাজির হাজার হাজার দর্শনার্থী। অধিকাংশই মোবাইলে গর্ভগৃহের ছবি তুলতে গিয়ে একে অপরের পথ আটকাচ্ছেন, ঠেলাঠেলি করছেন, যার ফলে পুজো করতে গিয়ে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়ছেন পুরোহিত ও সাধারণ ভক্তরা। রথযাত্রার দিন লক্ষাধিক মানুষের ভিড়ে ছবি তোলাকে ঘিরেই একাধিকবার বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তাই এবার সরাসরি নিষেধাজ্ঞা।
মন্দির কর্তৃপক্ষ কী বলছে?
ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও কলকাতা ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস বলেন,
“জগন্নাথ দর্শন করতে এসে অনেকেই মোবাইল বের করে গর্ভগৃহে ছবি তুলছেন। এতে পুজোয় ব্যাঘাত ঘটছে, ভক্তির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।”

পুলিশ সুপারের বার্তা
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য জানান,
“ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার স্বার্থেই গর্ভগৃহে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কাউকে নিয়ম ভাঙতে দেখলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই, সকলে ভক্তির পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে দর্শন ও পুজো সম্পন্ন করুন।”
দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির শুধু স্থাপত্য নয়, বর্তমানে এক আবেগের কেন্দ্র। এই আবেগ বজায় রাখতে ও পুজোর পরিবেশ রক্ষা করতেই গৃহীত হয়েছে এই কঠোর সিদ্ধান্ত। তাই আপনি যদি দিঘায় জগন্নাথ দর্শনে যান, ভক্তি নিয়ে যান, কিন্তু মোবাইল নিয়ে গর্ভগৃহে ঢোকার আগে দ্বিগুণ সাবধান হোন।