দিনহাটা, কোচবিহার:
অসম থেকে পাঠানো এক এনআরসি নোটিস কেন্দ্র করে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। দিনহাটার বাসিন্দা উত্তম ব্রজবাসী, যিনি বিগত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলার নাগরিক এবং ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল বলেও প্রমাণ রয়েছে—তাঁকে সম্প্রতি ‘বিদেশি’ বা ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে ফরেনার্স ট্রাইবুনালের তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় শুরু থেকেই সরব হন তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম সমাজমাধ্যমে নথিপত্র প্রকাশ করে দাবি করেন, এটি পরিকল্পিতভাবে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা। তাঁর কথায়, “উত্তমবাবুর ভোটার তালিকায় নাম থাকার প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে এই নোটিস পাঠানো হল, সেটাই বড় প্রশ্ন।”
I am shocked and deeply disturbed to learn that the Foreigners Tribunal in Assam has issued an NRC notice to Uttam Kumar Brajabasi, a Rajbanshi, resident of Dinhata in Cooch Behar for over 50 years. Despite furnishing valid identity documents, he is being harassed on suspicion of…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 8, 2025
এর পরেই মঙ্গলবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি টুইট বার্তায় লেখেন—
“গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তম ব্রজবাসী এই বাংলার বাসিন্দা। তাঁর বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বিদেশি বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। এটি বিজেপির ষড়যন্ত্র—বাংলায় এনআরসি চাপানোর একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত। গণতন্ত্রের উপর এ এক পরিকল্পিত আক্রমণ।”
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে রাজবংশী ও অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ভীত সন্ত্রস্ত করা এবং ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার এক গভীর চক্রান্ত। তাঁর ভাষায়,
“এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে বাংলা চুপ করে থাকবে না। বিজেপি যদি ভারতের সাংবিধানিক কাঠামোকে ধ্বংস করতে চায়, তবে বাংলা প্রথম প্রতিবাদ করবে।”
এই মন্তব্যের মধ্যেই রয়েছে রাজনৈতিক বার্তা—বাংলা ও অসমের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলেও, এনআরসি নিয়ে বিজেপির পদক্ষেপকে মোটেই মেনে নেবে না তৃণমূল। একই সঙ্গে তিনি সকল বিরোধী দলকে একজোট হয়ে গণতন্ত্র রক্ষার ডাকও দেন।
এই ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তোলে—অসমের বিজেপি সরকার কি সত্যিই বাংলার অভ্যন্তরে এনআরসি চাপিয়ে দেওয়ার রাস্তায় হাঁটছে?