দ্য ইন্ডিয়ান ক্রনিকলস ডেস্ক
প্রকাশকাল: ১৪ জুলাই ২০২৫
পুরীর পবিত্র পূজাচার কি ‘কপিরাইট’ সুরক্ষার আওতায় আসছে? দিঘার ‘জগন্নাথধাম’ নামকরণ এবং ইসকনের অনুষ্ঠান ঘিরে শুরু বিতর্ক
পূজা ও ধর্মীয় রীতিনীতিও কি ‘কপিরাইট’-এর অধীন হতে চলেছে? হ্যাঁ, অন্তত এমন ইঙ্গিতই দিচ্ছেন ওড়িশার গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেব। তাঁর কথায়, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের শতাব্দীপ্রাচীন আচার-অনুষ্ঠান, রীতি-রেওয়াজের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করতেই এবার আইনি পথে হাঁটতে চাইছে ওড়িশা সরকার।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় একটি জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে তৈরি সেই মন্দিরকে ‘জগন্নাথধাম’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে। আর এখানেই শুরু হয়েছে বিতর্কের সূত্রপাত। ‘ধাম’ শব্দের অর্থ “দেবতার আবাসস্থান” – এই শব্দ প্রয়োগে আপত্তি জানিয়ে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে চিঠি দিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি।
এই পূজাচার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইসকনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন পুরীর কর্তৃপক্ষ। বলা হচ্ছে, ইসকন বিশ্বব্যাপী রথযাত্রা ও স্নানযাত্রা আয়োজন করছে এমন সব দিনে, যা পুরীর মূল রীতির সঙ্গে খাপ খায় না। এর ফলে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগছে বলে দাবি তোলা হচ্ছে। ইসকনের এই অনুষ্ঠান ‘ইচ্ছেমতো দিন-ক্ষণে’ পালন করা ও ‘জগন্নাথধাম’ শব্দ ব্যবহার — পুরীর ঐতিহ্যের পরিপন্থী বলে মনে করছেন বহু ভক্ত ও পুরীর ধর্মীয় নেতারা।
পুরী গোবর্ধনপীঠের শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতীও এই বিষয়ে তাঁর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “যা চলছে, তা হিন্দু ধর্মের গাঢ় ঐতিহ্যের অপমান। ঐতিহাসিক ধারাকে রক্ষা করাই এখন মুখ্য কর্তব্য।”
এই প্রেক্ষিতে ওড়িশা সরকার এখন ভাবছে, কীভাবে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে পুরীর পূজাচার ও আচারকে ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি’র (বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি) স্বীকৃতি দেওয়া যায়। এই উদ্যোগ সফল হলে, ভবিষ্যতে পুরীর ঐতিহ্য অনুলিপি করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
তবে গজপতি দিব্যসিংহ দেব আশাপ্রকাশ করেছেন, দুই রাজ্য আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা মেটাতে পারবে। না হলে, তিনি স্পষ্ট করেছেন, “নিয়ম ও ঐতিহ্যের লঙ্ঘন মেনে নেওয়া হবে না।”