ভারতের অন্যতম বৃহৎ বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া গত ছয় মাসে মোট ৯টি সেফটি নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে শোকজ নোটিশ পেয়েছে। কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সংসদে এই তথ্য জানানো হয়েছে, যা যাত্রীদের নিরাপত্তা ও এয়ারলাইনের পরিচালনার মান নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে ধরেছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার সেফটি লঙ্ঘন: কেন শোকজ?
বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত সময়ে, ডিজিসিএ (DGCA) অর্থাৎ ভারতের বিমান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে ৯টি পৃথক সেফটি ভায়োলেশনের ঘটনা চিহ্নিত করেছে। প্রতিটি ঘটনার পরেই সংশ্লিষ্ট বিভাগকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই ঘটনাগুলোর মধ্যে ছিল:
- ফ্লাইটে টেকনিক্যাল ইন্সপেকশন না করা
- জরুরি সেফটি প্রটোকল না মানা
- রুটিন মেইনটেন্যান্সে গাফিলতি
- কেবিন ক্রুদের নিরাপত্তা নির্দেশনা না জানা
🔗 সম্পর্কিত প্রতিবেদন: ভারতীয় বিমানে সেফটি স্ট্যান্ডার্ড: কোথায় ঘাটতি?
🔗 বিশ্বস্ত সূত্র: DGCA Official Safety Reports

কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া?
এয়ার ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন,
“আমরা প্রতিটি অভিযোগকে গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে তৎপরতার সঙ্গে সমাধান করছি।”
সংস্থাটি বলছে যে, তারা অভ্যন্তরীণ সেফটি রিভিউ ও কর্মী প্রশিক্ষণ শুরু করেছে যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে।
তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একের পর এক সেফটি ভায়োলেশন শুধু এয়ার ইন্ডিয়ার মানেই প্রশ্ন তোলে না, বরং এর ফলে যাত্রীদের বিশ্বাসেও প্রভাব পড়তে পারে।
এছাড়াও, এয়ার ইন্ডিয়ার নতুন মালিক টাটা গ্রুপ এর অধীন সংস্থার রিব্র্যান্ডিং এবং সার্ভিস মানোন্নয়নের প্রচেষ্টাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে এই ঘটনাগুলি।
ভারতীয় বিমান শিল্পে নিরাপত্তা মানের বর্তমান চিত্র
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় বিমান শিল্প ব্যাপক সম্প্রসারণের মুখোমুখি, কিন্তু নিরাপত্তার মান সে তুলনায় অনেক সময়ই পিছিয়ে পড়ছে। বিশেষ করে মধ্য-দূরত্বের ফ্লাইট ও ব্যস্ত রুটে অতিরিক্ত চাপের কারণে বিমান সংস্থাগুলি প্রায়শই রুটিন ইনস্পেকশন উপেক্ষা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, DGCA-র উচিত কেবলমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, বরং নিয়মিত অডিট ও ফ্লাইট র্যান্ডম ইনস্পেকশন চালানো, যাতে সঠিক সেফটি মান বজায় থাকে।
উপসংহার: যাত্রী নিরাপত্তা আগে, সাশ্রয় নয়
যাত্রী নিরাপত্তা কোনও বিকল্প নয়—এটি মৌলিক অধিকার। এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক শোকজ প্রমাণ করে যে, শুধুমাত্র ব্র্যান্ড রিব্র্যান্ডিং নয়, বাস্তব ক্ষেত্রে সেফটি প্রটোকল মানা আরও জরুরি।
ভবিষ্যতের জন্য এয়ার ইন্ডিয়া সহ সব বিমান সংস্থার উচিত সেফটি চেক ও ট্রেনিং ব্যবস্থার উন্নয়ন করা এবং DGCA-এর নির্দেশিকা মেনে চলা বাধ্যতামূলক করা।
📢 আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না। আপনি কি এয়ার ইন্ডিয়ার এই সেফটি লঙ্ঘন নিয়ে চিন্তিত? নিচে কমেন্ট করুন অথবা বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন।