দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক উত্তেজনার পরে অবশেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু-র মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিশা উন্মোচিত হল। এই বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল লাইন অব ক্রেডিট (ঋণসুবিধা), বাণিজ্য চুক্তি এবং সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু করা।
মলদ্বীপকে ভারতের ২৫ কোটি ডলারের ঋণসুবিধা
ভারত এই বৈঠকে মলদ্বীপকে ২৫ কোটি ডলারের Line of Credit (LoC) ঘোষণা করেছে। এই অর্থ দেশটির পরিকাঠামো উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় ব্যয় করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এটি এমন এক সময়ে এল যখন মলদ্বীপ সম্প্রতি চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছিল। মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ একটি স্পষ্ট বার্তা যে ভারত এখনো দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে এবং মলদ্বীপকেও গুরুত্ব দিয়ে চলেছে।

সরাসরি ফ্লাইট ও বাণিজ্য আলোচনায় এগোলো দুই দেশ
ভারত ও মলদ্বীপের মধ্যে নতুন সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা মূলত পর্যটন ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রকে আরও গতিশীল করে তুলবে।
এই বৈঠকে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপায়, কাস্টমস সহযোগিতা, এবং MSME খাতে যৌথ কাজ নিয়েও আলোচনা হয়। মলদ্বীপের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য আগের তুলনায় কমেছে, তাই উভয় দেশই এখন তা পুনরুজ্জীবনের পথে।

মুইজ্জু সরকারের মনোভাবের পরিবর্তন: ভারতের প্রতি ইতিবাচক বার্তা
প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর ভারতবিরোধী মনোভাব স্পষ্ট ছিল। এমনকি ভারতীয় সেনা মলদ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়ার দাবিও উঠেছিল। তবে সম্প্রতি তাঁর মনোভাবে পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যে আর্থিক ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তা হয়তো এখন তাঁর উপলব্ধি হচ্ছে। এই বৈঠক সেই পরিবর্তনের স্পষ্ট প্রতিফলন।
উপসংহার: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত
ভারত ও মলদ্বীপের মধ্যে এই সাম্প্রতিক আলোচনা স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দেয় যে দুই দেশ এখন সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন পথে হাঁটছে।
একদিকে ভারত যেমন কৌশলগত মিত্রতা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে সচেষ্ট, অন্যদিকে মলদ্বীপও ভারতের ভূমিকাকে গুরুত্ব দিতে বাধ্য হচ্ছে।
📢 পাঠকদের জন্য আহ্বান: আপনারা কী মনে করেন ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য? মতামত জানান কমেন্টে ও শেয়ার করুন এই প্রতিবেদন।