কলকাতা, ২৬ জুলাই ২০২৫
এবারের দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025) অনেকটাই এগিয়ে এসেছে। মহাষষ্ঠী পড়েছে ২৮ সেপ্টেম্বর, আর মহালয়ার দিন ২১ সেপ্টেম্বর। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে পুরোদমে। তবে, এখনও পর্যন্ত হয়নি সেই বহু প্রতীক্ষিত সরকারি ঘোষণা—পুজোর চাঁদা বা সরকারি অনুদান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্ষিক বৈঠক।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভবত ৩১ জুলাই অথবা আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী এই বৈঠক ডাকতে পারেন। আর সেখান থেকেই ঘোষণা হতে চলেছে এই বছরের অনুদানের অঙ্ক।

গত বছর (২০২৪) মুখ্যমন্ত্রী পুজো কমিটিগুলিকে প্রতি কমিটি ৮৫,০০০ টাকা করে অনুদান দিয়েছিলেন। এর আগেই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ২০২৫ সালের পুজোতে এই অনুদান বেড়ে ১ লক্ষ টাকা (Rs. 1 Lakh Durga Puja Donation) হতে পারে। তাই বলা চলে, এবার সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের দিকেই এগোচ্ছে সরকার।

অনুদানের ইতিহাস একটু ফিরে দেখা যাক:
- ২০১১: অনুদান শুরু, ₹২৫,০০০
- কোভিড পর্ব: ₹৫০,০০০
- ২০২২ ও ২০২৩: ধাপে ধাপে বেড়ে ₹৮৫,০০০
- ২০২৫: এবার লক্ষ টাকার দিকেই
কেন এই অনুদান?
রাজ্য সরকারের মতে, দুর্গাপুজো কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়—এটা বাংলার সংস্কৃতি, আবেগ ও অর্থনীতির অঙ্গ। প্রতি বছর পুজোর সময় বাংলার ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় শিল্পে প্রায় ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়, যা লক্ষাধিক মানুষের জীবিকা জোগায়। এছাড়া ইউনেস্কোর স্বীকৃতি অনুযায়ী, “Durga Puja in Kolkata” এখন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ফেস্টিভাল। তাই, এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে অনুদান যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ক্লাবগুলোরও সামাজিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দেওয়া সরকারের দায়িত্ব।
কী সুবিধা মিলতে পারে এবারও?
- ফায়ার লাইসেন্স ফি মকুব
- বিদ্যুৎ খরচে ছাড়
- সুরক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থার জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ
কয়েক বছর আগে অনুদান নিয়ে আদালতে মামলা হলেও, তা খারিজ হয়ে যায়। আদালতে রাজ্য সরকার জানায়, অনুদান না থাকলে অনেক ছোট পুজো কমিটি তাদের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হবে। তাই এই অনুদান সংস্কৃতির রক্ষাকবচ।

এক সময় পাড়ায় পাড়ায় চাঁদার জুলুম ছিল সাধারণ মানুষের মাথাব্যথার কারণ। এখন সেই জায়গায় এসেছে সরকারের অনুদান। আর সেই অনুদানের অঙ্ক এবছর এক লক্ষ টাকা হওয়াটা শুধু অঙ্কগত পরিবর্তন নয়, পুজোকে ঘিরে বাঙালির গর্ব ও আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতি।