রাজভবন, রাজ্যের গর্বের এক ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান। সেই গরিমা কি আজ বিনোদনের ভিড়ে বিলীন হয়ে গেল?
শনিবার সন্ধেয় রাজভবনের আয়োজনে মঞ্চস্থ হয় ‘চৌরঙ্গীর ফুল’ নামের একটি নাটক। গল্পটি বর্তমান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের (CV Anand Bose) নিজের লেখা। সমাজের নানা স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয় নাটকটি দেখার জন্য। উপস্থিত ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, মুনমুন সেন, ও বিজেপি নেত্রী তথা অভিনেত্রী শর্বরী মুখোপাধ্যায়, যিনি এই নাটকে অভিনয়ও করেন।
নাটকটির থিম ছিল সামাজিক, তবে নাটকে ব্যবহৃত চটুল গান—বিশেষ করে “আমি কলকাতার রসগোল্লা”—নিয়ে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকের মতে, এমন গান রাজভবনের মতো এক সাংবিধানিক স্থানে পরিবেশিত হলে সেই প্রতিষ্ঠানের মর্যাদায় আঘাত লাগে।

বিরোধী রাজনৈতিক মহলের দাবি, রাজভবনের গরিমা ইতিমধ্যেই ক্ষুণ্ণ হয়েছে। বিজেপির শাসনকালে তা যেন রাজনৈতিক দপ্তরে রূপ নিয়েছে। বর্তমান রাজ্যপাল এর আগে একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছেন, নারীবিদ্বেষমূলক মন্তব্য থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে নিজের উপস্থিতি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

তবে এই নাট্য আয়োজনকে অনেকেই তুলনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। যেমন মমতা নিজের কবিতা, গান, প্রবন্ধ ও চিত্রকলার মাধ্যমে শিল্পচর্চা করেন, তেমনই আনন্দ বোসও নিজেকে একজন ‘সৃষ্টিশীল লেখক’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—রাজভবন কি তার জন্য সঠিক মঞ্চ?
সমালোচকরা বলছেন, রাজ্যপালের নাট্যপ্রেম থাকতেই পারে। কিন্তু সেই প্রেম যদি গানের মাধ্যমে ‘রসগোল্লা’য় মিশে যায়, তখন প্রতিষ্ঠানগত মর্যাদা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।