Advertise your brand here -Contact 7603043747 (Call & Whatsapp)

মোদি কি তবে ঈশ্বর না হিটলার! ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, রাজীব গান্ধী চোর হ্যায়’ বলার জন্য কিন্তু জেলে যেতে হয়নি কাউকে

Table of Contents

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share Our Blog :

Facebook
WhatsApp

সাড়ে তিন দশক আগের ঘটনা। রঙ্গমঞ্চের মূল চরিত্রগুলো এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে বেশ কিছুদিন হল বিদায় নিয়েছেন। তবে বোফোর্স কেলেঙ্কারি ভারতীয় রাজনীতির পাতায় বহু আগেই চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। সেই সময় একটাই স্লোগান ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল- ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, রাজীব গান্ধি চোর হ্যায়’।

Rajiv Gandhi, Prime Minister ( Congress, Portrait )

এই এক স্লোগানের ধাক্কাতেই রাজীব গান্ধির নেতৃত্বে ১৯৮৪ সালের লোকসভায় রেকর্ড ৪১৪ আসন পাওয়া কংগ্রেস ১৯৮৯-এ ১৯৭ আসনে নেমে আসে। রাজীবের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করা ভিপি সিং, যিনি ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, রাজীব গান্ধী চোর হ্যায়’ স্লোগানের প্রধান স্রষ্টা, সেই তিনি ইন্দিরা পুত্রকে সরিয়ে বসেন প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে।

আজ রাজীব নেই, ভিপি সিং-ও প্রয়াত। এছাড়াও বফোর্স কেলেঙ্কারি ঘিরে ভারতীয় রাজনীতিকে যে কুশীলবরা তোলপাড় করেছিলেন তাঁদের মধ্যে কেবল লালকৃষ্ণ আদবানি জীবিত। মুলায়ম সিং যাদব, জ্যোতি বসু, অটলবিহারি বাজপেয়ি, হরকিষেন সিং সুরজিৎ, ইন্দ্রজিৎ গুপ্তরা বেশ কিছু বছর হলেন প্রয়াত। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, প্রবল দাপট সত্ত্বেও তাঁকে চোর বলার জন্য কাউকে জেলে পোড়ার চেষ্টা করেননি রাজীব। উল্টে বিরোধীদের দাবি মেনে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসি-র তদন্তে রাজি হয়েছিলেন। সেটাই ছিল ভারতবর্ষের ইতিহাসে প্রথম জেপিসি।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁকে চোর বলা বিরোধীদের জেলে পোড়া তো দূরের কথা, কারোর বিরুদ্ধে মামলাও করেননি রাজীব গান্ধি বা তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের মনোভাবটাই ছিল, বিরোধীরা ইস্যু পেলে তা নিয়ে তাদের মত করে চেষ্টা করবে, সেখানে কী স্লোগান উঠল তাকে ব্যক্তিগতভাবে গায়ে লাগানো চলবে না। বরং রাজনৈতিকভাবে গোটা বিষয়টা মোকাবিলা করতে হবে। হ্যাঁ এটা বলাই যায় যে কংগ্রেস ছেড়ে ভিপি সিং যে জনতা দল তৈরি করেছিলেন এবং তাকে বাইরে থেকে আলাদা আলাদা ভাবে বিজেপি ও বামেদের সমর্থন দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার রাজনৈতিক মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন ইন্দিরা তনয়। তাই বিপুল আসন সংখ্যা কমা সত্ত্বেও ১৯৮৯ এর লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দেশের বৃহত্তম দল হলেও আর ক্ষমতায় ফিরতে পারেনি। কিন্তু সাড়ে তিন দশকের ব্যবধানে ভারতীয় গণতন্ত্রের সুরটাই পাল্টে গিয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি চোর‌ও নয়, রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘সব চোরের পিছনেই মোদি জুড়ে যাচ্ছে’। আর তাতেই নাম না করে প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করার অভিযোগে তাঁর দু’বছরের কারাদণ্ড হয়ে গেল!

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, গুজরাটের যে নিম্ন আদালতের রায়ে রাহুলের এই দু’বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হল, সেখানেই লেখা ছিল এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য ৩০ দিন সময় পাবেন রাহুল গান্ধি। অর্থাৎ রায় কার্যকরী করার ক্ষেত্রে আদালত ৩০ দিন সময় দিলেও লোকসভার সচিবালয়ের তর স‌ইলো না। অবাক করা তৎপরতা দেখিয়ে পরের দিনই রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল বলে ঘোষণা করল। কিন্তু সাংসদ পদ বাতিলের ক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠাতে হবে। তিনি অনুমতি দেওয়ার পর নির্বাচন কমিশন সেই নির্দেশ কার্যকরী করবে। এক্ষেত্রে কোনও পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে না গিয়েই রাতারাতি কাজ সেরে ফেলল লোকসভার সচিবালয়।

যাতে একরকম পরিষ্কার, লোকসভার স্পিকারের নির্দেশেই অস্বাভাবিক দ্রুততায় এই কাজ হয়েছে। অথচ কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর সাংসদ পথ খারিজ নিয়ে তৃণমূলের করা আবেদনের বিষয়ে বছর ঘুরতে চলল এখনও কোনও পদক্ষেপ করে ওঠার সুযোগ‌ই হয় না লোকসভার অধ্যক্ষের। হয়ত বিষয়টা বিজেপির বিরুদ্ধে যাবে বলেই তিনি এক্ষেত্রে বড়‌ই স্লথ!

রাহুলের সাংসদ পথ খারিজ প্রসঙ্গে বিরোধী শিবির একটা বিষয় একমত, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই লোকসভার অধ্যক্ষ এই অবাক করা তৎপরতা দেখিয়েছেন। তাই রাহুলের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ না পাঠিয়ে সরাসরি লোকসভার সচিবালয়‌ই সাংসদ পথ খারিজের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

এই বিষয়টি কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধি নিশ্চয়ই আইনিপথে মোকাবিলা করবেন। ইতিমধ্যেই বেশিরভাগ আইনজ্ঞ বলেছেন যে, ব্যাপারটি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। উচ্চতর আদালতে গেলেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ পেয়ে যেতে পারেন রাহুল।

কিন্তু প্রশ্ন আছে। আর তা হল কেন্দ্রীয় সরকার এবং শাসকদলের মনোভাব নিয়ে। কেন রাহুলের সাংসদ পথ খারিজের জন্য এত তৎপর হয়ে উঠল গেরুয়া শিবির? ঘটনাক্রম দেখে একটা বিষয় মনে হচ্ছে, বিরোধী কণ্ঠস্বর যেন তেনো প্রকারে দমিয়ে দেওয়াটাই লক্ষ্য আজকের শাসকের লক্ষ্য। তাতে দরকারে আইন ব্যবহার করে, আবার কখনও সাংবিধানিক রীতিনীতিকে টোপকে কাজ হাসিল করতে হবে। যাতে দেশ বিরোধী শূন্য হয়ে পড়ে।

বিজেপির এই সমস্ত কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করলে একটা বিষয়ে নিশ্চিতভাবে পৌঁছনো যায় যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারবেন না। কিন্তু কেন? প্রধানমন্ত্রী দেশের নির্বাচিত প্রধান। দেশের সংবিধান তাঁর সমালোচনা করার অধিকার দিয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করলেই তাকে দেশবিরোধী বলে দাগিয়ে দিচ্ছে গেরুয়া শিবির।

বিজেপির পক্ষের মানুষজন বলছেন, প্রমাণ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে কেউ চোর বলে কী করে? প্রথম কথা রাহুল গান্ধি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চোর বলেননি। তারপরও যদি বিজেপির পক্ষের মানুষজনের কথা ঠিক বলে ধরে নিতে হয়, তাহলেও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জায়গা থেকে যায়। ভারতীয় সংসদীয় ব্যবস্থায় বিরোধীরা প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে বারে বারে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। তা কখনও প্রমাণ হয়েছে, আবার কখনও প্রমাণ হয়নি। কিন্তু শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা যাবে না এ কেমন কথা! গণতন্ত্রের নিয়মই হল, বিরোধীরা মন খুলে শাসকের নীতি কার্যকলাপের সমালোচনা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতেই পারে, বিজেপি যে ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে যে টুজি কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে রাস্তায় নেমেছিল তা তো কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রমাণিত ঘটনা ছিল না। শরিকদল ডিএমকের কিছু নেতা মন্ত্রী সেই ঘটনায় জড়িত ছিলেন। বিজেপি কী করে সেই সময় এমন অভিযোগ তুলেছিল এর উত্তর নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহ দেবেন কি?

আসলে বিজেপির প্রবণতাটা খুব ভয়ঙ্কর। প্রধানমন্ত্রীকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়ে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার এক ফ্যাসিবাদী চক্রান্ত শুরু হয়েছে। একটু কিছু হলেই বলা হচ্ছে, ভাবাবেগে আঘাত লাগল! এখানেই রাজীব গান্ধি তাঁর ঔদার্যের পরিচয় দিয়েছিলেন। যার জন্য ভালো-মন্দ মিশিয়ে আজও বহু মানুষ তাঁকে স্মরণ করে। কিন্তু যে শাসক চ্যালেঞ্জ দূর করতে নিজেই নিজেকে ঈশ্বরের আসনে বসানোর চেষ্টা করছেন তাঁকে ভবিষ্যৎ নিশ্চয়ই ‘পর্যাপ্ত’ মর্যাদাই দেবে!

তবে ফ্যাসিবাদের ধ্বনী (বিরোধী মুক্ত ভারত গড়ার প্রচেষ্টা) প্রবল ভাবে ধ্বনিত হচ্ছে ভারতজুড়ে। বিরোধীরা বিষয়টা কতটা বুঝতে পারছে তার উপরই এই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এক্ষেত্রে একটা ছোট্ট উদাহরণ মাথায় রাখা উচিৎ। হিটলারও কিন্তু এক পর্যায়ে জার্মানিতে ব্যাপক জনসমর্থন পেয়েছিলেন। বাকি ইতিহাসটা সকলের জানা। তবে এটাও মনে রাখবেন, সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয়েছিল সেই সমর্থনকারীদেরই।

More Related Articles

রাজ‍্য ও রাজনীতি

বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধি রুখতে সরকার আনছে নতুন বিল: জানালেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু

কলকাতা: রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি রুখতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নতুন একটি বিল আনতে চলেছে। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, অভিভাবকদের আর্থিক চাপ কমাতে এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চলেছে।

Read More »
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য

দোল উৎসবে বিষাক্ত রং থেকে চোখ ও ত্বকের সুরক্ষা: জেনে নিন কিছু কার্যকরী ঘরোয়া টিপস

দোল পূর্ণিমা মানেই রঙের উৎসব, আনন্দ, আর উন্মাদনা! কিন্তু বাজারের রাসায়নিকযুক্ত রং আমাদের ত্বক ও চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চুলকানি, অ্যালার্জি, শুষ্কতা এমনকি ত্বকের স্থায়ী ক্ষতিও হতে পারে এসব রঙের কারণে। তাই দোল খেলার আগে ও পরে কিছু বাড়তি যত্ন নেওয়া জরুরি। আসুন জেনে নিই কীভাবে সহজ ঘরোয়া উপায়ে চোখ ও ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করবেন।

Read More »
বিনোদন জগত

Zee Bangla উপস্থাপন করছে ‘সোনার সংসার ২০২৫’ – ২৫ বছরের গৌরবময় যাত্রার উদযাপন এক ঝলমলে সন্ধ্যায়

কলকাতা, ১২ই মার্চ, ২০২৫: বাংলা বিনোদনের শীর্ষস্থানীয় চ্যানেল Zee Bangla এবার তার ২৫ বছরের গৌরবময় যাত্রা উদযাপন করতে চলেছে ‘সোনার সংসার ২০২৫’-এর মাধ্যমে। এই মহাধারার রাত্রি এক মহা উৎসবে রূপ নেবে, যেখানে থাকবে মনোমুগ্ধকর পারফরম্যান্স, আবেগঘন মুহূর্ত এবং বাংলা বিনোদন জগতের প্রতি এক অসীম শ্রদ্ধার্ঘ্য।

Read More »
Featured News

আজ আমাদের ন্যাড়াপোড়া…. জানেন কি ? এই ন্যাড়া পোড়ার পিছনের পৌরাণিক কাহিনী

বাংলার লোকসংস্কৃতির অন্যতম আকর্ষণীয় উৎসব হলো ন্যাড়া পোড়া। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এই উৎসবটি বেশ জনপ্রিয়। ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে অনুষ্ঠিত এই উৎসব মূলত হোলিকা দহন বা হোলি পূর্ণিমার একটি অংশ। তবে বাংলার মাটিতে এটি কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে পালিত হয়। কিন্তু, এই ন্যাড়া পোড়ার পেছনে রয়েছে এক গভীর পৌরাণিক কাহিনী। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই উৎসবের ঐতিহ্য ও ইতিহাস।

Read More »
EDITOR PICKS

নেট দুনিয়া এখন জমজমাট “ভার্চুয়াল দোল” নিয়ে! রঙের উচ্ছ্বাস এবার ডিজিটাল স্ক্রিনে

দোলযাত্রা বা হোলি, যা রঙের উৎসব হিসেবে পরিচিত, এবার এক নতুন মাত্রা পেয়েছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। সারা বিশ্বের নেটিজেনরা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভার্চুয়াল দোল খেলায় মেতে উঠেছে। কেউ ডিজিটাল ফিল্টার ব্যবহার করে নিজেকে রঙিন করছে, কেউ আবার ভার্চুয়াল স্টিকার ও জিআইএফ শেয়ার করে বন্ধুবান্ধবদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।

Read More »
Featured News

Windows Productions-এর “আমার বস” সিনেমার প্রথম গান “বসন্ত ডেকেছে আমাকে” মুক্তি পেলো রঙিন হোলি পার্টির মাধ্যমে

Windows Productions তাদের বহু প্রতীক্ষিত সিনেমা “আমার বস”-এর প্রথম গান “বসন্ত ডেকেছে আমাকে” আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। এই মনোমুগ্ধকর গানটি তারুণ্য, নবজীবন এবং বসন্তের আনন্দকে উদযাপন করে। গানটির উদ্বোধন হয় Soul The Sky Lounge-এ, যেখানে হোলি-থিমযুক্ত পার্টির মাধ্যমে উৎসবমুখর এক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। অতিথিদের জন্য ছিল লাইভ চাট কাউন্টার, সুস্বাদু কাবাব, মুচমুচে জিলিপি, এবং রাজস্থানি রাবড়ি-ঠান্ডাই, যা পুরো অনুষ্ঠানে উষ্ণতা, উদ্দীপনা ও উৎসবের আবহ সৃষ্টি করেছিল।

Read More »
error: Content is protected !!